হোম » সারাদেশ » সিরাজগঞ্জের জেলা জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টি নন্দন স্কুল কলেজ

সিরাজগঞ্জের জেলা জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টি নন্দন স্কুল কলেজ

হুমায়ুন কবির সুমন, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : বাংলাদেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের সার্বিক প্রচেষ্টায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতা আসার পর ২০০৯ সালে হতে বাংলাদেশ শিক্ষা ব্যবস্থার উপর প্রভূত কাজ করে যাচ্ছে। সরকার সকল জনগণ বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষা ব্যবস্থার সুবিধাসমূহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষা নীতি প্রণয়নের ফলে বদলে গেছে সিরাজগঞ্জের গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থার। এরই ধারাবাহিকতায় সিরাজগঞ্জে ব্যাপকভাবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে উন্নয়ন করে যাচ্ছে।

এর আগে ২০০১ সালে ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে থমকে যায় শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন কর্মকান্ড। আওয়ামী লীগ সরকার যে উন্নয়ন চিত্র রেখে গিয়ে ছিল, তা সম্পূর্ন বন্ধ করে দিয়ে সারা দেশে চলে হত্যা, টেন্ডারবাজী, দুর্নীতির মহাযজ্ঞ। যার ফলে দেশ এক অস্থিতিশীল পরিস্থির মধ্যে পড়ে যায়। এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায়নের পর শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করতে শুরু করে সরকার।

সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত শিক্ষা প্রকৌশলী অফিস থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় নতুন ভবন নির্মাণ , বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্টান এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান মেরামত করা হয়েছে। যা উন্নয়ন বাবদ ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা।যার মধ্যে রয়েছে উন্নয়ন মূলক ৪৫০ টি নতুন ভবন, যার ব্যয় প্রায় ৮শ ৫০ কোটি টাকার এবং ৫০০টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্টান এবং ১০ টি সরকারি প্রতিষ্ঠান মেরামত করা হয়েছে। যাতে প্রায় খরচ হয়েছে ১শ ৫২ কোটি টাকা। নিন্ম প্রকল্পের আওতায় জেলা শিক্ষা প্রকৌশলী অফিস কার্যক্রম গুলো পরিচালনা করেছে এবং কিছু কাজ চলমান রয়েছে: নির্বাচিত বে-সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রকল্পের আওতায় ৬০ টি বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে প্রায় ১৬২ কোটি ২৪ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে ।

নির্বাচিত বে-সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহের ৬০ টি বিদ্যালয়ের উর্ধ্বমূখী সম্প্রসারণ , যাতে উন্নয়ন ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬৮ কোটি ২৩ লক্ষ ৬ হাজার টাকা। নির্বাচিত বে-সরকারি মাদ্রাসা প্রকল্পের আওতায় ৩৬ টি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়ে, যাতে উন্নয়ন ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮৬ কোটি ৮৮ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। দেশকে তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান শিক্ষা সুযোগ সৃষ্টির লক্ষে ৯ টি সরকারি কলেজ সমূহের উন্নয়ন। যাতে উন্নয়ন ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬৩ কোটি ১২ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা। সারা দেশে ১০০ টি উপজেলার ১টি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ১ প্রতিষ্ঠান স্থাপন। যাতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি ৪৭ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা। সেকেন্ডারী এডুকেশন সেক্টর ইনভেষ্টমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় ২৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়।

যার বাবদ প্রায় ২০ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। তথ্য প্রযুক্তি সহায়তায় শিক্ষা মান উন্নয়নের লক্ষে নির্বাচিত বেসকারি ৩৫ টি কলেজের উন্নয়ন। যার ব্যয় বাবদ প্রায় ৭৭ কোটি ৩৬ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা নিধারণ করা হয়। মাউশি বিভাগের অনুকূলে অনাবাসিক ভবন নির্মান/ সম্প্রসারণ (৭০১৬) প্রকল্পের আওতায় ১৫০ টি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা। যাতে ব্যয় হয়েছে ৭৯ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের অনুকূলে অনাবাসিক ভবন নির্মান/ সম্প্রসারণ (৭০১৬) প্রকল্পের আওতায় ৭০ টি প্রতিষ্ঠান স্থাপন। যাতে ব্যয় হয়েছে ৩৪ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা।

সিরাজগঞ্জ শিক্ষা প্রকৌশলী বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, সারা দেশের ন্যায় সিরাজগঞ্জেও বর্তমান সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছে এবং বর্তমানে আরও বেশ কিছু কাজ চলমান আছে।

তিনি আরও জানান, জেলার গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলোর সময় মতো টেন্ডার করা সহ, যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করার ফলে, এ উপজেলাগুলোর  প্রত্যেকটি উপজেলার স্কুল- কলেজ নির্মাণ করা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকার কারণে, এক সময় এ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল খুবই কম। কিন্তু এখন , গ্রাম গঞ্জে স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ার ফলে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি হয়েছে প্রায় শত ভাগ নিশ্চিত হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ -১ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় বলেন , কাজিপুর উপজেলায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগে আছে। আপনারা দেখবেন, শহর রক্ষা বাঁধ, জেলার রাস্তাঘাট, থানা স্থাপন ও তার আধুনিকায়ন, পাসপোর্ট অফিস, ভূমি অফিস, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও জেলায় সকল স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ঠ হাসপাতল এবং এর প্রকৌশল অফিস ও স্থাপন করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণে জেলার সকল কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

সিরাজগঞ্জ-২ (সদর ও কামারখন্দ) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাক্তার হাবিবে মিল্লাত মুন্না বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মধ্যে অতীতের সকল সরকারের আমলে যে উন্নয়ন হয়েছে তার চেয়ে বর্তমান সরকার ১৪ বছরে দেশে বিশেষ করে সিরাজগঞ্জ ও কামারখন্দে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন কাজ হয়েছে এবং আর কিছু কাজ চলমান রয়েছে।

যেমন বঙ্গবন্ধু রেল সেতু, ইর্কোনোমিক জোন, বিসিক শিল্পপার্ক, শেখ হাসিনা ট্রমা সেন্টার, শেখ হাসিনা নাসিং কলেজ, সিরাজগঞ্জ ইন্সটিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ ও ৫শ শয্যার হাসপাতাল, চীফজুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ সহ জেলায় বিভিন্ন রাস্তা ঘাট, ব্রীজ কালভার্ট সহ অসংখ্য স্থাপনা।
সিরাজগঞ্জ জেলা আ.লীগের সভাপতি কেএম হোসেন আলী হাসান জানান, সিরাজগঞ্জের উন্নয়ন সব হয়েছে বর্তমান আওমীলীগ সরকারের অধীনেই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণে সারা দেশের ন্যায় সিরাজগঞ্জ জেলাতেও সকল উন্নয়ন কাজ  হয়েছে আর কিছু কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

তিনি আরও জানান, আওয়ামীলীগ সরকার যে উন্নয়ন করেছে, তা অতীতের কোন সরকার করতে পারেনি। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ নিয়ে কাজ করছে।
এর আগে ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ২১ বছর পর ক্ষমতাসীন হয়। সেই সরকারে মোহাম্মদ নাসিম প্রথমে ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

খুলে যায় সিরাজগঞ্জবাসীর ভাগ্যের চাকা। নদীভাঙনের হাত থেকে সিরাজগঞ্জ শহরবাসীকে রক্ষার জন্য নির্মাণ করা হয় আড়াই কিলোমিটার শহর রক্ষা বাঁধ। যে বাঁধটি নির্মাণে দুই যুগ ধরে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে সিরাজগঞ্জ শহর। মন্ত্রী থাকার প্রথম মেয়াদের ৫ বছরে নাসিমের প্রচেষ্টায় সিরাজগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হয় সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবন, সোনালী ব্যাংক ভবন, অত্যাধুনিক শহীদ এম মনসুর আলী অডিটোরিয়ামসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। শহরের প্রধান সড়ক এস এস রোড ও মুজিবসড়ক প্রশস্তকরণসহ নির্মিত হয় নতুন নতুন সড়ক, সেতু স্কুল-কলেজ ভবন। আইনশৃংখলা রক্ষার স্বার্থে জেলার এনায়েতপুর ও সলঙ্গায় দুটি থানা প্রতিষ্ঠা করেন নাসিম। ভাঙনকবলিত দুস্থ মানুষের পুনর্বাসনের জন্য সয়দাবাদ ও একডালায় দুটি পুরনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ করেন নাসিম।

লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকারি শিল্পপার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং প্রাথমিক কাজ শুরু হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য দৃষ্টিনন্দন শেখ রাসেল শিশু পার্ক প্রকল্প হাতে নেন তিনি।

error: Content is protected !!