হোম » সারাদেশ » পীরগঞ্জের মাঝিপাড়ার ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আর কোন ভয়ভীতি নেই, সকলেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন : পরিদর্শনকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

পীরগঞ্জের মাঝিপাড়ার ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আর কোন ভয়ভীতি নেই, সকলেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন : পরিদর্শনকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

হারুন উর রশিদ সোহেল,রংপুরঃ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি বলেছেন, পীরগঞ্জের মাঝিপাড়ায় এখন আতঙ্ক নেই। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আর কোন ভয়ভীতি নেই। সবাই বাড়ি বাড়ি ফিরেছেন। নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নতুন টিনে নতুন ঘর তৈরির কাজ শেষ। সবার মুখে হাসি ফিরেছে। তারা সকলেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। শনিবার দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত বড় করিমপুর কসবা মাঝিপাড়া গ্রাম পরিদর্শন শেষে স্থানীয় বটেরহাট আরডিএস দাখিল মাদরাসা মাঠে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।

এসময় তিনি আরো বলেন, সরকারি ও বেসরকারি নানা সংগঠনের সহযোগিতা ও ভালবাসায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখন স্বাভাবিক। তাদের চুলায় এখন রান্না হচ্ছে এবং কাজ কর্মেও যোগ দিয়েছেন তারা। এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ছেষট্টিটি পরিবারের মাঝে প্রায় ৬৫ লাখ টাকাসহ খাদ্য ও বস্ত্র সহযোগিতা করা হয়েছে বলে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ১৪টি ঘর নির্মাণ এবং ৪০টি ঘর মেরামত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের মাঝে সরকারের পক্ষ থেকে ১৬৬টি শাড়ি, ২৬৬টি লুঙ্গি, ১৬৬টি কম্বল, ৪০০ শুকনা খাবার প্যাকেট, ২৫ প্যাকেট গোখাাদ্য, ৪০ প্যাকেট শিশু খাদ্য, ১০০ বান্ডিল টিন এবং নগদ ২৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও জীবিকা নির্বাহের জন্য ১৫ জন জেলেকে মাছ ধরার জাল প্রদান করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ৪০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ সেট নতুন বই এবং ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ১৬টি সার্টিফাইট কপি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ তত্ব্ধসঢ়;বধানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের মাঝে বেসরকারি সংস্থা রেড ক্রিসেন্ট, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন, আরডিআরএস এর পক্ষ থেকে মোট ৩৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এবং দুটি মন্দিরের মধ্যে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ১১ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। সা¤প্রদায়িক সহিংসতার এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), রংপুরকে আহব্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনটি মামলা হয়েছে এবং ৫৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

ঘটনার পর থেকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োসহ পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়েছে, ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ও রংপুর-৬ (পীরগঞ্চ) আসনের সংসদ সদস্য শিরীন শারমিন চৌধুরী, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ধর্ম মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ মত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।

এসময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মোহসীন, রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার, পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল ইসলাম শামীম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিরোদা রাণী রায়, ওসি সরেষ চন্দ্র, রংপুর জেলা পরিষদের সদস্য পারভীন আক্তার, রামনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাদেকুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

error: Content is protected !!