হোম » সারাদেশ » ভৈরবে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ  প্রেমিকসহ ৯ জন গ্রেফতার 

ভৈরবে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ  প্রেমিকসহ ৯ জন গ্রেফতার 

এম আর ওয়াসিম ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: ভৈরবে  প্রেমিকের সাথে দেখা করতে এসে গণ ধর্ষণের স্বীকার মুসলিম প্রেমিকা।  এ ঘটনায়  প্রেমিক সহ ১০ জনের নামে ধর্ষণ মামলা দায়ের  পর পুলিশ  ঘটনার সাথে  জড়িত ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।
ধষর্ষতাকের ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য  কিশোরগঞ্জ  সদর হাসপাতালের  ওয়ানষ্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠিয়েছে পুলিশ । এদিকে  গ্রেফতারকৃতদের কে আজ শুক্রবার দুপুরে  কিশোরগঞ্জ  জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে
 বৃহস্পতিবার. গত কাল২৩মে  কিশোরগঞ্জের ভৈরব মেঘনার পাড় যমুনা ওয়েল কোম্পানীর পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রেমিকের সাথে ঘুরতে এসে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে এ ঘটনা ঘটে ।  ধর্ষিতা কিশোরগঞ্জের  বাজিতপুর থানার পিরিজপুর ইউনিয়নের নিলখী হাপানিয়া গ্রামের মুসলিম পরিবারের রহমত মিয়ার মেয়ে মনি বেগম (ছদ্মনাম) । মনি বেগম ওই এলাকায় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থী মনি বেগম (ছদ্মনাম) বৃহস্পতিবার সকালে তার প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে বাজিতপুর থেকে ভৈরব আসে। প্রেমিক পলাশ দাস নরসিংদীর রায়পুরা পিরিজপুর থেকে তার বন্ধু রাব্বিকে নিয়ে ভৈরবে আসে। পরে তারা একসাথে ঘুরতে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী কালী নদী ব্রীজ এলাকায় যায়।
এসময় সেখানে একটি কফি হাউজে প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। পরে তারা সেখান থেকে ঘুরতে আবার ভৈরব মেঘনা ব্রীজ এলাকায় আসলে ছিনতাইকারীরা আটক করে। তাদের সাথে থাকা দুটি মোবাইল রেখে দেয়। পরে আরিয়ান নির্জন নামে এক যুবক মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এ সময় প্রেমিক ও বন্ধুকে আটকে রাখে অভিযুক্ত ধর্ষণকারীর সহযোগীরা।
ধর্ষণের পর তাদের ছেড়ে দিলে প্রেমিক ছিনতাইকারীদের পিছু নিয়ে আব্দুল্লাহকে নামে সহযোগীকে আটক করে চিৎকার চেচামেচি করলে স্থানীয়রা তাকে ধরে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে আব্দুল্লাহকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আব্দুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার দেয়া তথ্যমতে ছিনতাই হওয়া মোবাইল উদ্ধার করে ধর্ষণকারী ও সহযোগীদের আটক করা হয়।
 আজ শুক্রবার সকালে অভিযুক্তদের কিশোরগঞ্জ জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে এতথ্য নিশ্চিত করেন ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম। আটককৃতরা হলো, প্রেমিক নরসিংদীর রায়পুরা পিরিজকান্দি গ্রামের মনিন্দ্র দাসের ছেলে পলাশ দাস (১৭) ও তার বন্ধু একই এলাকার সেন্টু মিয়ার ছেলে রাব্বি মিয়া (১৮)।
অপর আসামীরা হলো শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার মৃত সুমন মিয়ার ছেলে ধর্ষণকারী আরিয়ান আহম্মেদ নির্জন(১৯), সহযোগীরা হলো চণ্ডিবের এলাকার আনাচ মিয়ার ছেলে ফুয়াদ (১৮), একই এলাকার মিলন মিয়ার ছেলে হাছান (১৮), কমলপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে পাপন (১৮), ভৈরবপুর দক্ষিণ পাড়া এলাকার আঙ্গুর মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ (১৮) ও একই এলাকার সুজন মিয়ার ছেলে শান (১৭)। । ধর্ষিতার পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় আজ শুক্রবার (২৪ মে) সকালে ৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়।
এ বিষয়ে প্রেমিক পলাশ দাস বলেন, আমি হিন্দু সম্প্রদায়ের ছেলে মেয়েটি মুসলমান। ফেজবুকের মাধ্যমে ছয়মাস যাবত আমাদের পরিচয়। তিন মাস আগে মেয়েটির সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তার মা আমাদের সম্পর্কের কথা জানতো। আমি মেয়েটির সম্মতিতে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছি। মেঘনার নদীর পাড় কিছু বখাটে ছিনতাইকারি আমাদের মোবাইল ও টাকা পয়সার রেখে দেয়। আমার প্রেমিকাকে নির্জন নামে এক ছিনতাইকারী ধর্ষণ করে।
 ধর্ষিতা মনি বেগম (ছদ্মনাম) বলেন, আমি আমার প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে ভৈরব আসি। আমরা ঘুরতে মেঘনার পাড় গেলে কয়েকজন যুবক আমাদের মোবাইলসহ টাকা পয়সা রেখে দেয়। এদের মধ্যে নির্জন নামে এক যুবক আমাকে ধর্ষণ করে। আমি নির্জনের বিচার চাই।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলা করেছেন। মেয়েটি প্রেমিকের সাথে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে। পরে মেঘনার পাড়ে তাকে প্রেমিক ঘুরতে এলে নির্জন নামে এক ছিনতাইকারী ধর্ষণ করে। ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীকে আজ সকালে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদেরও জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Loading

error: Content is protected !!