হোম » সারাদেশ » ভেড়ামারায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

ভেড়ামারায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হালিমা বেগম একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ অভিযোগ তুলেছেন। 
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত ১লা অক্টোবর ২০০১ সালে শফিকুল ইসলাম প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রাপ্তির পর থেকেই বিদ্যালয়ে নানা ধরনের দুর্নীতি করে আসছে। উপবৃত্তির টিউশন ফিস, ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের নিকট থেকে গ্রহণকৃত রেজিঃ ফি এর টাকা,ছাত্রছাত্রী  অনুপস্থিতির জরিমানা, বিদ্যালয়ের প্রশংসা পত্র বা বোর্ডের সার্টিফিকেট বিতরণকালে ছাত্রছাত্রীদের নিকট থেকে গ্রহণকৃত টাকা, পরিক্ষার খাতা বা পুরাতন কাগজ বিক্রি বাবদ অর্জিত অর্থ, এফডিআর এর লভ্যাংশ ক্যাশবুকে না উঠানো সহ নানা অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পক্ষে উক্ত বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অসিত কুমার পাল কতৃক যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে বিদ্যালয় পরিদর্শন বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাগণ সাংবাদিকদের জানান যে, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ভেড়ামারা হালিমা বেগম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম উল্লেখিত দুর্নীতিগুলোর সহিত যুক্ত। উপবৃত্তির টিউশন ফ্রি অর্থ, পরীক্ষার কাগজ বিক্রয়, প্রশংসাপত্র বিতরণ থেকে আদায় অর্থ, রেজিস্ট্রেশন ফির অর্থ, ছাড়পত্র দেওয়া বাবদ অর্থ, ছাত্র-ছাত্রীর নিকট থেকে জরিমানা আদায় বাবদ অর্থ, এসএসসি সার্টিফিকেট বাবদ অর্থসহ অনেক আয় রশিদ বিহীন আদায় করে তা বিদ্যালয়ের ক্যাশ বহিতে আয় দেখিয়ে আত্মস্মাৎ করেন। উপবৃত্তির টিউশন ফি এর লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে খরচ করেছেন। যশোর মাধ্যমিক  শিক্ষাবোর্ড কতৃক দেয়া নির্দেশনা অমান্য করে দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি নির্বাচন না করে পছন্দ মত ব্যক্তিদের নিয়ে গোপনে  তিনি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বিদ্যালযটি পরিচালনা করে আসছেন। প্রধান শিক্ষক তার বাসার টেলিফোন ও ডিসের বিল বিদ্যালয়ের অর্থায়ন থেকে খরচ করে থাকেন বলে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন। বিদ্যালয়ে নিয়োগ নিয়ে বানিজ্য এবং বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ব্যাচ বাসায় নিয়ে তার সহধর্মিণী প্রাইভেট পড়ান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শরিফুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে আমরা শিক্ষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তিন সদস্যদের একটি তদন্ত টিম গত বুধবার (২৭শে মার্চ) বিদ্যালয়ে উভয় পক্ষের যুক্তি পত্র পর্যবেক্ষণ করে। অতি শীঘ্রই এর প্রতিবেদন আপনাদের জানানো হবে।
এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন ও সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন। প্রকৃত পক্ষে প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী সব কিছু করা হয়। একটি কুচক্রীমহল ফায়দা লুটতে ব্যর্থ হয়ে প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম এর এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) একযোগে ক্লাস বর্জন করে বিষয়গুলো সঠিকভাবে যাচাই ও অনুসন্ধান করে প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও স্থানীয় অভিভাবক বৃন্দ।
error: Content is protected !!