হোম » Uncategorized » সরিষাবাড়ী ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান স্বপনের বিরুদ্ধে অনিয়ম দূর্ণীতির অভিযোগে ৯ মেম্বারের অনাস্থাঃ এলাকাবাসীর দাবী বহিঃস্কার

সরিষাবাড়ী ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান স্বপনের বিরুদ্ধে অনিয়ম দূর্ণীতির অভিযোগে ৯ মেম্বারের অনাস্থাঃ এলাকাবাসীর দাবী বহিঃস্কার

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধিঃ জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউপি’র চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক স্বপনের বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম, দূর্ণীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন একই ইউনিয়নের ৯ মেম্বার। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়ে চেয়ারম্যনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন ইউনিয়নের ২ জন নারী মেম্বারসহ ৯ জন ইউপি সদস্য। অনাস্থার বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে বলে জানাগেছে।

অভিযোগ ও অনাস্থা পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলার ৩ নং ডোয়াইল ইউপি’র চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই মাসিক সভা না করেই সভার ভুয়া রেজুলেশন প্রদর্শন এবং ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে সরকারের উন্নয়নের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ কোনো কাজ না করে একই কায়দায় তিনি আত্মসাৎ করে আসছেন।

প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দকৃত বিভিন্ন ধরনের ত্রাণ সামগ্রী নিজের লোকজনের নামে-বেনামে আত্মসাৎ করেছেন। তিনি বিধি-বহির্ভূতভাবে একই বছর একই স্থানে একাধিক প্রকল্প দেখিয়ে এলজি এসপি ও হতদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি কাজ না করেই সীম নিজের কাছে রেখে বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ
করেছেন।

এ ছাড়াও চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন ইউনিয়নের নাগরিক,ওয়ারিশ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ দিতেও অবৈধভাবে নগদ অর্থ গ্রহণ করেন বলে অভিযোগে জানাগেছে। আব্দুর রাজ্জাক স্বপন ডোয়াইল ইউনিয়নে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় হত দরিদ্র ডিলারশীপ থাকাবস্থায় সেই চাল চুরির ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন তার লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগে বলা হয় ২০২২-২৩ অর্থ বছরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অব কাঠামো সংস্কার (কাবিখা)
কর্মসুচীর আওতায় ডোয়াইল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের আ: খালের বাড়ী হতে আব্দুল বারেকের বাড়ী পর্যন্ত বাকী অংশ ইটের সলিং বরাদ্দকৃত খাদ্য শস্য চাল তিন টন, ডিগ্রীবন্দ মাদ্রাসা মাঠে মাটি ভরাট কাজের জন্য তিন টন চাল, ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হাটবাড়ি আমজাদ মাষ্টারের বাড়ি হতে জুয়েলের দোকান পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ১০লাখ ৯০ হাজার টাকা, ৫নং ওয়ার্ডের প্রসাদপুর বাহার উদ্দিনের বাড়ি হতে আলম প্রফেসারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে একই পরিমান অর্থ, ৩নং ওয়ার্ডের ডিগ্রীবন্ধ বাদশা মিয়ার বাড়ী হতে মন্ডের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, ৪নং ওয়ার্ডে চাপারকোনা সুজনের দোকান হতে দুলাল মিলিটারী বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, ৮নং ওয়ার্ডে কৃষ্টপুর স্কুল মাঠ হতে ঘোড়া ছাত্তারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের কাজে অর্থের যথাযথ ব্যবহার না করে নাম মাত্র কাজ দেখিয়ে সিংহ ভাগ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। ২০২২-২৩
অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচি আওতায় ডোয়াইল ইউনিয়নের ভবানীপুর হাসানের বাড়ী থেকে সরাফতের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৫ টন গম, ডোয়াইল ইউনিয়নের বিল পাড় কামালের বাড়ী থেকে প্রসাদপুর ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার বাবদ চার লাখ টাকার বরাদ্দের কাজ না করেই নিজেই সম্পুর্ন অর্থ আত্মসাৎ করা ঘটনা ঘটেছে। ইজিপিপি প্রকল্পের আওতায় ছোট ছোট বক্স, কালভার্ট, প্যালাসাইডিং, রিং কালভার্ট, সরকারের রাজস্ব খাতের ১% অর্থের বরাদ্দের নামে নামী বেনামী প্রকল্প দেখিয়ে
সম্পুর্ন টাকা চেয়ারম্যান স্বপনই আত্মসাৎ করেছেন বলে তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন।

ডোয়াইল ইউনিয়নের ১,২,৩ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য নূরুন্নাহার আক্তার, ৪,৫,৬ ওয়ার্ডের ডলি আক্তার, ১নং ওয়ার্ড মেম্বার আঃ মালেক, ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার ফরহাদ শিমুল, ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার আজহারুল ইসলাম, ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ মিলটন, ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার আফজাল হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার কবীর হোসেন, ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার সৈকত হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন বিভিন্ন কায়দায় অনিয়ম-দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছেন। নানা ভয়ভীতি উপেক্ষা করে আমরা গত ২২ ফেব্রুয়ারি
সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কাছে চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন এর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছি। এলাকাবাসীর স্বার্থে অতি দ্রুত তাকে বহিষ্কার করা হোক।

এ ব্যাপারে ডোয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তারএর মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে জামালপুর জেলা প্রশাসক মোঃ শফিউর রহমান জানান, আমার কাছে এটা আসলে আমি বিধিগত ভাবে ব্যবস্থা নিব।

এ দিকে মুঠোফোনে বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া জানান, আমি এখনো অনুলিপি দেখিনি। অনুলিপি আসলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

error: Content is protected !!