হোম » অন্যান্য বিভাগ » মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন…রেলপথ মন্ত্রী

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন…রেলপথ মন্ত্রী

কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে কালুরঘাট সেতু এবং রেললাইনের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এরপর মন্ত্রী মোটর ট্রলিতে করে দোহাজারী স্টেশন থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, রেললাইনের কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। আশা করছি ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হয়ে যাবে। কিছু কাজ বাকি থাকলেও রেললাইন ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে। ২ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ একটা ট্রেন দিয়ে ট্রায়াল রান করব। এরপর ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরও বলেন, মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল ট্রেনে করে পর্যটন নগরী কক্সবাজার যাবে। তাদের জন্য উন্নতমানের যাত্রীবাহী বগি দেওয়া হবে। এখনো ভাড়া নির্ধারণ করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর এসব বিষয় নিয়ে কাজ করা হবে। ভবিষ্যতে কক্সবাজারের মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে এই রেললাইন যুক্ত করা হবে।
এর আগে কালুরঘাট সেতু পরিদর্শন শেষে রেলমন্ত্রী বলেন, কালুরঘাট পুরোনো সেতু। ১৫ টন মিটারগেজ ইঞ্জিনের ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। একারণে আমরা সেতুটি সংস্কার করছি। কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি রেললাইন উদ্বোধনের আগে কাজ শেষ হবে। তার পাশাপাশি এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি একটি নতুন সেতু। এটির কাজও আগামী বছর শুরু হতে পারে।
এদিকে স্বপ্ম পূরর্ণের মাইলফলকের পথে কক্সবাজারবাসী। এতে উচ্ছ্বসিত স্থানিয় বাসিন্দারা। অনেক বলছেন এটি তাঁদের ঈদের আনন্দ। স্থানিয়রা বলছেন ‘আমাদের অনেক দিনের দাবি পূরণ হচ্ছে। দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মিত হওয়ায় এখন কক্সবাজার -চট্টগ্রাম -ঢাকা -মহেশখালীতে ট্রেন চলবে নির্বিঘ্নে। আমরা এখন খেতে উৎপাদিত তরিতরকারি  সরাসরি ট্রেনে করে শহরে পাঠাতে পারব। এতে পণ্যের দামও পাব।’
চকরিয়ার চাষি রহিমের কথায় ঝরে পড়ে উচ্ছ্বাস। ট্রেনের রাস্তা হওয়ায় তাঁর মতো আরও অনেক মানুষের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রেল সড়ক পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৮ সালে ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। পরে এক দফা বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি। এ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলায় প্রায় এক বছর আগেই তা সমাপ্ত হতে যাচ্ছে।
২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। রেলপথটি নির্মিত হলে মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডোরে যুক্ত হবে বাংলাদেশ।
error: Content is protected !!