হোম » ধর্ম » বগুড়ায় শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি: রঙ-তুলির আঁচড়ে রঙিন হচ্ছে প্রতিমা

বগুড়ায় শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি: রঙ-তুলির আঁচড়ে রঙিন হচ্ছে প্রতিমা

বগুড়া প্রতিনিধি : দুয়ারে কড়া নাড়ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় এ উৎসবকে ঘিরে বগুড়ায় মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। বাহারি রঙ আর হাতের সুনিপুণ ছোঁয়ায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে প্রতিমা।
দম ফেলানোর ফুরসত নেই এসব শিল্পীদের। জানা গেছে, আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। পূজা চলবে পাঁচদিন। ২৪ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। এ বছর ঘটকে চরে দেবী দুর্গা মর্ত্য লোকে পদার্পণ করবেন।
আবার ঘটকেই কৈলাসে ফিরবেন। সোমবার (১৬ অক্টোবর) সরেজমিনে বগুড়ার বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব মণ্ডপেই চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। দিনরাত প্রতিমা তৈরির পর শেষ মুহূর্তে রঙ-তুলিতে মনের মাধুরী মিশিয়ে দেবী দুর্গা, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মীকে সাজাতে ব্যস্ত শিল্পীরা।
অধিকাংশ পূজা মণ্ডপের প্রতিমা তৈরির মূল কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। চলছে সাজ-সজ্জা ও রঙয়ের কাজ। সীমিত পরিসরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হলেও বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে পূজামণ্ডপগুলো। এখন শুধু প্রতিমায় পরিপূর্ণ রূপ দিতে রং তুলির শেষ আঁচড় দেওয়া হচ্ছে। দুই এক দিনের মধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করা হবে। বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়া নব-বৃন্দাবন হরিবাসর মন্দিরে কাজ করতে আসা প্রতিমা শিল্পী কাজল প্রামানিক বলেন, এ বছর ২০টি কাজের অর্ডার পেয়েছি। বেশিরভাগ বগুড়ার বিভিন্ন পূজামণ্ডপের।
জেলার বাইরে থেকে তিনটি অর্ডার পেয়েছি। পূজার জন্য সাধারণত তিন মাস আগে থেকে কাজ শুরু করতে হয়। আমার প্রতিমার কাজ প্রায় শেষ, এখন শুধু রঙ দিয়ে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পালা। এদিকে পূজামণ্ডপে আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো ধরনের কার্যক্রম হলে সংশ্লিষ্ট কাউকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।
জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের। এবিষয়ে বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিলীপ কুমার দেব জানান, এ বছর বগুড়ায় ১২টি উপজেলায় ৭০৭টি মণ্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে এসব পূজামণ্ডপে পুরোদমে চলছে প্রতিমা তৈরি ও দৃষ্টিনন্দন সাজ সজ্জার কাজ। তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এবার প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী গঠন ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আশাকরি সুন্দর, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব সমাপ্ত হবে। বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, দুর্গাপূজা সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে তিনধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিমা তৈরী থেকে বিসর্জন পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করবে জেলা পুলিশ।
ঝুঁকিপূর্ণ মন্দিরের তালিকা করে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া দুর্গাপূজা চলাকালিন মাদক, ইভটিজিং, ছিনতাই, পকেটমার প্রতিরোধে পুলিশের বিশেষ টিম তৎপর থাকবে। যেহেতু দর্শনার্থীদের সমাগম বাড়বে এজন্য সড়কে যানজট নিরসনে ট্রাফিক ব্যবস্থাও জোরদার থাকবে। ইতিমধ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ ও আয়োজকদের সাথে সভা করা হয়েছে।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাদের। পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার আরও বলেন, সবার সহযোগিতায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যদিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হবে এবারের দুর্গাপূজা এমনটাই আশা করছেন তিনি। আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। ২১ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ২২ অক্টোবর মহা অষ্টমী, ২৩ অক্টোবর মহানবমী এবং ২৪ অক্টোবর দশমী তিথি প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় উৎসব দুর্গাপূজা।।
error: Content is protected !!