হোম » অন্যান্য বিভাগ » সিরাজগঞ্জে সিজারিয়ানে বিধবার সন্তান প্রসব ধামাচাপা ও ধর্ষককে বাঁচাতে নবজাতক বিক্রি

সিরাজগঞ্জে সিজারিয়ানে বিধবার সন্তান প্রসব ধামাচাপা ও ধর্ষককে বাঁচাতে নবজাতক বিক্রি

হুমায়ুন কবির সুমন: ৩ বছর পূর্বে স্বামী মারা যাওয়ার পরও এক বিধবা সিজারিয়ানে সন্তান প্রসব করেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ১ দিনের নবজাতক বিক্রি করে দিয়েছে অভিযুক্ত চাচা শ্বশুড় আব্দুল হাই ও দেবর মোজাম্মেল হোসেন।
এঘটনায় শিয়ালকোল ইউনিয়নে মানুষের মধ্যে নানা রকম কৌতুহল ও গুঞ্জন রটেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে (২৯ জুলাই ২০২৩ইং), শনিবার সকাল ১১টার দিকে শিয়ালকোল ইউনিয়নে শিলন্দা গ্রামের মাতব্বর ওয়াহাব এর আয়োজনে সামাজিক শালিসী বসলেও সাংবাদিকের উপস্থিতি দেখে শালিস অসমাপ্ত করে চলে যায় মাতব্বরা। এ ঘটনায় শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশ।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের শিলন্দা গ্রামে মৃত আব্দুল হামিদ এর পুত্র আব্দুল আলীম প্রায় ৩ বছর পূর্বে মারাজান। আব্দুল আলীমের মৃত্যুর পর থেকে আব্দুল আলীমের স্ত্রী রেশমা খাতুন (৩০) এক মেয়ে আশা (১১) ও এক ছেলে আশিক (৭) নিয়ে স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করে আসছিল।
স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করাকালে বিধবা রেশমা’র উপর চোখ পড়ে চাচা শ্বশুড় আব্দুল হাই ও দেবর মোজাম্মেল হকের। অভাব অনটনের সংসারে বিধবা রেশমার পিতার বাড়ি নলকা ইউনিয়নের মথুরামপুর হওয়ায় চাচা শ্বশুড় মাঝে মধ্যেই সেখানে যাতায়াত করত। এদিকে শিলন্দার বাড়িতে দেবর মোজাম্মেল হকও তার উপর চোখ পড়ে। এরই এক পর্যায়ে বিধবা রেশমা খাতুন গর্ভবর্তী হয়ে পড়ে। গর্ভবর্তীর বয়স ৮ মাস হলে শারীরিক অস্বাভাবিক হওয়ায় এলাকায় ঘটনাটি জানাজানি হয়। রেশমা খাতুন সকলকে বলে আমার পেটে টিউমার হয়েছে।
সকল ঘটনা অবলোকন করে চাচা শ্বশুড় আব্দুল হাই ও দেবর মোজাম্মেল হক এর সার্বিক সহযোগিতায় গত ২১ জুলাই ২০২৩ইং তারিখে সিরাজগঞ্জ নতুন কমিউনিটি ক্লিনিকে সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করে রেশমা  খাতুন। সন্তান প্রসব করার সাথে সাথে চাচা শ্বশুড় আব্দুল হাই ও দেবর মোজাম্মেল হক ১দিনের নবজাতককে বিক্রি করে দেন।
বিধবা রেশমা খাতুন বলেন, পেটের অস্বাভাবিক অবস্থার জন্য আমি সকলকে বলেছি, আমার পেটে টিউমার হয়েছে। কিন্তু আমি মিথ্যা কথা বলেছি। গত (২১ জুলাই ২০২৩), শুক্রবার সিজারের মাধ্যমে আমি সন্তান প্রসব করেছি। সন্তানটি আব্দুল হাই ও মোজাম্মেল বিক্রি করে দিয়েছে। তবে তিনি সন্তানের বাবা হিসেবে দেবর মোজাম্মেলকে দোষারোপ করছেন।
বিধবা রেশমা’র এর পুত্র আশিক (৭) বলেন, আমার নানা বাড়িতে থাকার সময় মাঝে মধ্যে আমার দাদা আব্দুল হাই বিকেলে যাইত এবং সকালে চলে আসত। মাতব্বর ওয়াহাব বলেন, আমরা গ্রামের মাতব্বর হিসেবে ঘটনাটি শোনার পর আজকে শালিসে বসেছি। তবে এই ধরনের শালিস করার এখতিয়ার নেই বলে আমরা আর শালিস করছি না। সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
error: Content is protected !!