হোম » অন্যান্য বিভাগ » ‘নিয়োগ জালিয়াতি’; বরগুনায় নিয়োগের আগেই প্রার্থী চূড়ান্ত 

‘নিয়োগ জালিয়াতি’; বরগুনায় নিয়োগের আগেই প্রার্থী চূড়ান্ত 

এম.মোরছালিন,বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনায় বালিয়াতলী চরকগাছিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগের আগেই প্রার্থী চূড়ান্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, সব নিয়ম মেনেই নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নিরাপত্তা কর্মী, আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষার আগেই অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়ে। এই পাঁচ পদে পাঁচজনকে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।

স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক মাষ্টার বলেন, মাদ্রাসার সুপার মোঃ রাকিবুল ইসলাম পাঁচটি পদে গোপনীয়ভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের দিয়ে আবেদন করায়। বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে স্থানীয়রা যাতে জানতে না পারে সেই কারণে নোটিশ বোর্ডেও বিজ্ঞপ্তি দেয়নি সুপার। আমরা লোকমুখে শুনতে পেয়ে স্থানীয় প্রার্থীরা সভাপতি বরাবর আবেদন করেন।

স্থানীয় আবেদনগুলো সব বাতিল করেন সুপার রাকিবুল ইসলাম। পাঁচটি পদেই সুপার টাকার বিনিময়ে তার পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিবে। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে আল আমিন (চুন্নু) নামের একজনকে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে আতাউল্লাহকে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে, পরিচ্ছন্নতা কর্মী মাসুদকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে, নিরাপত্তা কর্মী পদে মোঃ শাহজাহানকে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে, আয়া পদে লিপি আক্তারকে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিচ্ছে সুপার রাকিবুল হাসান বলে দাবী করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, সুপারের নিয়োগ নিয়েও রয়েছে ধুম্রাজাল। সেখানে তিনি কিভাবে নিয়োগ দিচ্ছে আমার জানা নেই। এইসব পদগুলোতে স্থানীয়দের অংশ গ্রহণ নিশ্চিতে মাদ্রাসা অধিদপ্তর বরাবর চেষ্টা চালালেও সুপার করছে তার উল্টোটা।

প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সহকারী শিক্ষক ও সাবেক কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি কমিটিতে থাকাকালীন সময় নিয়োগ সম্পর্কে সুপার আলোচনা করলে আমি স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়টি বলি। স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলাতে বর্তমান কমিটিতে আমাকে রাখেনি। এমনটি কমিটি গঠনের সময় ভোটার তালিকা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে জানতে পারি পাঁচটি পদে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তার পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ করেও কোন ফলাফল পাইনি।

নিয়োগ বাতিল হওয়া একাধিক প্রার্থী জানান, আমরা পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি সুপারের কাছে দেখতে চেয়েছি। তিনি আমাদের কোন পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি দেখাননি। পত্রিকা খুজে দেখতে বলে। পরে আমরা সভাপতি বরাবর বিশ্বস্তসূত্র উল্লেখ করে আবেদন করলে তিনি আমাদের আবেদনগুলো বাতিল করে তার পছন্দের প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ করেন। আমরা এর সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানাই।

এ বিষয় প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সভাপতি ঢাকায় অবস্থান করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সুপার মোঃ রাকিবুল হাসান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করি। আমার কোন পছন্দের প্রার্থী নাই। নিয়মানুযায়ী পরীক্ষা কার্যক্রম সম্পান্ন করা হবে।

এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জিয়াউল হক মিলন বলেন, আমার কাছে স্থানীয়রা নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় কোন অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন সম্পতি জেলা প্রশাসক, বরগুনা স্যারের নির্দেশে সুপারের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করার সময় স্থানীয়রা বলেছিলেন ‘আমাকে নিয়োগ দিচ্ছে না, আমাকে নিয়োগ দিচ্ছে না’। তবে স্পষ্টভাবে কোন অভিযোগ আসেনি।

error: Content is protected !!