হোম » অন্যান্য বিভাগ » শেরপুরে দরিদ্র প্রান্তিক কৃষকের পাশে দাড়ালো “কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট”

শেরপুরে দরিদ্র প্রান্তিক কৃষকের পাশে দাড়ালো “কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট”

মোঃ শরিফ উদ্দিন: কৃষি প্রশিক্ষক ইনস্টিটিউট, শেরপুর এর শিক্ষার্থীবৃন্দ কর্তৃক ৩ মে শেরপুর জেলাধীন সদর উপজেলার শেখহাটির রৌহা বিলের ক্ষুদ্র কৃষক মোঃ জয়নাল আবেদীনের প্রায় ৫০ শতাংশ জমির ধান বিনামুল্যে কেটে দেওয়া হয়।

বর্তমানে ধান কাটার ভরা মৌসূম চলছে। একসাথে সব জায়গায় ধান কাটা পড়ায় কৃষি শ্রমিকের সংকট ও মজুরী বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোথাও কোথাও মেশিন দিয়ে ধান কাটা হলেও ছোট ছোট জমিতে বা সব ধান একসাথে না পাকায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

এতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক গরীব কৃষকেরা নানাবিধ অসুবিধার সন্মুখীন হচ্ছে। এ বিষয়টি উপলব্ধি করে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, শেরপুর এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব মোঃ সাইফুল আজম খান এর নেতৃত্বে উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ স্থানীয় কিছু দরিদ্র কৃষকের ধান কেটে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

তারই অংশ হিসেবে ৩ মে শেরপুর সদর উপজেলার শেখ-হাটি গ্রামের রৌহা বিলের একজন ক্ষুদ্র কৃষকের প্রায় ৫০ শতাংশ জমির পাকা ধান কেটে তা তার বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়।

উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বের ৬০জন ছাত্র এবং ১০ জন ছাত্রী অংশ গ্রহণ করে। উৎসব মুখর পরিবেশে এই ধান কাটা অনুষ্ঠানটি স্থানীয় জনগণের কাছে যথেষ্ট প্রশংশিত হয়েছে।

শিক্ষার্থীরাও স্বতস্ফুর্তভাবে এই ধান কাটায় অংশগ্রহণ করে।

প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ জানান, এতে কৃষকের মনোবল বৃদ্ধি পেয়েছে এবং শিক্ষার্থীরাও ধান কাটার বিভিন্ন বিষয় হাতে কলমে শিখতে
পেরেছে। পাশাপাশি কৃষি কাজে কৃষকদের কঠোর পরিশ্রমের বিষয়টি তারা কাছে থেকে উপলব্ধি করতে পেরেছে।

তিনি বলেন, কৃষি হচ্ছে আমাদের অর্থনীতির ‘মুল চালিকা শক্তি’। তাইতো কৃষি উৎপাদন ঠিক থাকলে দেশের সব কিছুই ভাল থাকে।

এজন্য আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত কৃষিকে ভালোবাসা এবং কৃষকের পাশে থাকা।

তিনি বলেন, বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের লক্ষ্যে বেশ কিছু কৃষি উন্নয়নমুলক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলমান আছে।

কিন্তু তা বাস্তবায়নের জন্য সমন্বিত চাষাবাদ করা দরকার।

এজন্য সবাইকে সহযোগিতার মন নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। উপস্থিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, এই ধান কাটার মাধ্যমে কৃষি ও কৃষকের প্রতি তাদের আগ্রহ ও শ্রদ্ধা বৃদ্ধি পেয়েছে।

একজন গরীব কৃষকের পাশে দাঁড়াতে পেরে তারা বেশ খুশী হয়েছে। ভবিষ্যতে তাদের এই উদ্যোগ অব্যহত রাখবে বলে তারা প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।

সংশ্লিষ্ট কৃষকও তার ধান কেটে দেওয়াতে আর্থিক সাশ্রয়ের জন্য খুব খুশী হয়েছে এবং এটিআই কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। উপস্থিত স্থানীয় কৃষক এবং দর্শনার্থীগণ বিনামুল্যে ধান কেটে দেওয়ার এই বিরল উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং এ ধরণের উদ্যোগ সারা দেশেই নেওয়া হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিনা মুল্যে এই ধান কর্তন অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ আল মামুন, চীফ ইনস্ট্রাক্টর, জনাব মোহাম্মদ হালিমুর রশীদ ও জনাব মোহাম্মদ পবন আলী, উপসহকারী প্রশিক্ষক, এটিআই, শেরপুর এবং স্থানীয় উপসহকারী কৃষি অফিসার জনাব মোঃ আব্দুল মালেক সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও কৃষক বৃন্দ।

error: Content is protected !!