হোম » প্রধান সংবাদ » ভৈরবে ১৩ আইপিএল জুয়ারী কে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা

ভৈরবে ১৩ আইপিএল জুয়ারী কে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা

এম আর ওয়াসিম, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ  বর্তমান সময়ে ক্রিকেট খেলা সার্বজনীন  হলেও এই ক্রিকেট এখন জুয়াবাজির অন্যতম কারণ হিসেবে স্থায়ী রুপ নিয়েছে সর্বত্র। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) ক্রিকেট খেলায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দিন দিন বেড়েই চলছে আইপিএল জুয়া । শুধু বিত্তশালীরাই নয়, আইপিএল জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন দিনমজুর, চা-দোকানী, রিক্সা ভ্যানচালক, সিএনজি চালক, গ্যারেজ ব্যবসায়ী, মাছ ব্যবসায়ী, মুদি দোকানী, বিভিন্ন কাপড়ের দোকানের মালিক কর্মচারী, ভ্যারাইটিজ ষ্টোরের মালিক কর্মচারী। এমন কি স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও মেতে উঠেছে আইপিএল জুয়ায়।
খোজ নিয়ে জানা যায়, অনেক শ্রমিক, রিক্সা ভ্যানচালক, চা-দোকানী আইপিএলের জুয়ায় প্রতিদিনের রোজগার ও আগাম মাসিক বেতনের টাকাও একদিনেই হেরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার নিজের অটো-বাইক ও গৃহকাজের প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়েই ধরছেন বাজি। আইপিএল বাজি এখন ভৈরবে মহামারী আকারে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই আইপিএল জুয়াড়ীরা কার সঙ্গে কে বাজি ধরবেন এনিয়ে দালালও নিয়োগ করা থাকে। এজন্য দালালরা পেয়ে থাকেন কিছু কমিশন বিজয়ীদের কাছ থেকে।
অনেক জুয়াড়ি নিজের কাছে রাখা গচ্ছিত টাকা হেরে চড়া সুদে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ধরছেন বাজি। ফলে আইপিএলের জুয়ার বাজারে সুদি ব্যবসায়ীদের ব্যবসা এখন জমজমাট। এছাড়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ আইপিএলের জুয়ায় বাজি ধরে লাখ লাখ টাকা হেরে সর্বস্বান্ত হয়ে দেনার দায়ে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার অনেক যুবকই বাজি ধরে হয়েছেন লাখ লাখ টাকার মালিক। প্রতিদিন ম্যাচ শুরু হওয়ার পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রায় গ্রামেই চলে জুয়ার আসর।
বিশেষ করে কমলপুরের গাছতলাঘাট, আমলাপাড়ার পাকিস্তান মোড়, মধ্যপাড়ার স্যামসাং শো রুমের পিছনে, ভৈরব বাজারের টিন পট্টি, নিউ মার্কেট কয়েকটি দোকান, চন্ডিবের, পুলতাকান্দা, মাছ বাজারসহ কিছু মাছ ব্যবসার ঘর, কালিপুর দ:পাড়া মাদ্রাসা রোড, ইউনিয়নের শিমুল কান্দির মোড়, চানপুরে বসে জমজমাট আইপিএল জোয়ার আসর।
গত কয়েক দিনে আইপিএলের জুয়ায় সর্বস্বান্ত হয়ে অনেকেই এখন পথে বসেছেন। শুধু ম্যাচই নয় প্রতিটি বলে বলে ধরা হচ্ছে বাজি। এই বলে ছক্কা হবে এই বলে চার হবে। এই বলে আউট হবে এসব নিয়েও জুয়াবাজিতে সরগরম বাজির মাঠ। খেলা শুরুর পর থেকে ভৈরবের বিভিন্ন এলাকায় বাজি ধরা হয়েছে কয়েক লাখ টাকা।
শহরের কালীপুর এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী আইপিএল জুয়াড়ি গত আইপিএল এ ১৫ লাখ টাকা হেরে এলাকা ছেড়েছেন । এমনকি তার কাপড়ের দোকানও বিক্রি করেছেন এই খেলার ঋণ পরিশোধ করতে।
আইপিএল জুয়ায় টাকা হেরে অনেক যুবক মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। অনেকে আবার জোয়ার টাকা সংগ্রহ করতে বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে।আইপিএলের জুয়ার কারণে সমাজে নানা অপরাধ মূলক কর্মকান্ড বেড়েই চলছে। এরই সূত্র ধরে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভৈরব র‍্যাব- ১৪ ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের এবং
স্কোয়াড কমান্ডার এএসপি মোহাম্মদ বেলায়েত হোসাইন এর নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে শিমুল কান্দি ইউনিয়নের চাঁনপুর বাজার থেকে ১৩ জুয়ারী কে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের কে ৭ থেকে ১ মাস পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাঁজা প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা।

Loading

error: Content is protected !!