হোম » প্রধান সংবাদ » মোরেলগঞ্জে সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে নোয়াখালীর বিবস্ত্রভাবে নির্যাতিতা নারীর দোষীদের শাস্তির দাবিতে কালো কাপড়ে মুখ বেঁধে মানববন্ধন।

মোরেলগঞ্জে সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে নোয়াখালীর বিবস্ত্রভাবে নির্যাতিতা নারীর দোষীদের শাস্তির দাবিতে কালো কাপড়ে মুখ বেঁধে মানববন্ধন।

আব্দুল্লাহ আল মামুন শেখ,মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলা এখলাসপুর গ্রামে এক গৃহবধূকে বিবস্র করে নির্যাতন ও ধর্ষণ চেষ্টার করে তার ভিডিও ফুটেজে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে কালো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে মানববন্ধন করেন মোরেলগঞ্জের স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন “মানব কল্যাণে আমরা” এর সক্রিয় কর্মী বৃন্দরা।
সোমবার (০৫ অক্টোবর ) দুপুর ১১:০০ টায় পৌর বাজারের ঢালাই ব্রিজ সংলগ্ন ‘বিজয়’ স্মৃতিফলকের পাদদেশে একত্রিত হয়ে মুখে কালো কাপড় বেঁধে, হাতে ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ড নিয়ে জাতীয় পতাকা গায়ে মুড়িয়ে অবস্থান করেন সংগঠনের কর্মীবৃন্দরা। এরপরে র‍্যালীর মাধ্যমে তারা মোড়েলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সম্মুখে অবস্থান করেন, সেখানে অবস্থান শেষে র‍্যালীর মাধ্যমে উপজেলা চত্বরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ এর পাদদেশে অবস্থান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন “মানব কল্যাণে আমরা” সংগঠনের সদস্য, আব্দুল্লাহ আল মামুন শেখ, হাসান মাহমুদ, এখলাস শেখ, সুলাইমান আবিদ, মাহিন ইসলাম, সালমান রাফি, বুলবুল খান, এস আই রাকিব, আনি, হুসাইন, সিজান, সালমান সাগর, তালিম, হৃদয়, নাঈমুল হাসান সাকিব, বাবু সহ আরো অনেকে।
তাদের ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ডের মধ্যে, “আমার সোনার বাংলায়, নারী-শিশু ধর্ষক ও নির্যাতনকারীদের ঠাঁই নেই।”
“কুকুর নিধন না করে, ধর্ষক নিধন করুন!”
“সুযোগ নয় নিরাপত্তা দিতে শিখি।”
“দেশ স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও কেন মা বোন ও অনিরাপদে?”
“ধর্ষকদের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও।” -এ গুলো উল্লেখযোগ্য।
মানববন্ধন শেষে তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দেশের যেকোনো পরিস্থিতি সেটা হোক অন্যায় অবিচার কিংবা ধর্ষণ কিংবা নির্যাতিতার পাশে দাঁড়ানো, সমাজ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম কিংবা অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো সকল ধরনের কর্মকান্ডের সাথে সংযুক্ত এই সামাজিক সংগঠন “মানব কল্যাণে আমরা”।
স্থানীয় আশেপাশের কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে এই সংগঠনটি দীর্ঘ দুই বছর যাবত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত ও বেস সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
মানববন্ধন শেষে সংগঠনের সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন শেখ জানান, আমাদের মাঠে নামা শুধুমাত্র মা বোনদের মান-সম্মানের ইজ্জতের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও কেন মা-বোন অনিরাপদে ও শঙ্কিত। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ঘটনা সত্যি আমরা বাকরুদ্ধ তাই আজকে সকল সদস্য মিলে কালো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছি। গোটা পুরুষ জাতি লজ্জিত ও কলঙ্কিত তাদের মুখ দেখানোর লজ্জার বিষয়, কারণ তারা যে মায়ের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছেন সেই মায়ের উপরে নরপিচাশ এর মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছেন সুযোগ পেলেই ইজ্জত লুটে নেয়ার জন্য।
তিনি আরো বলেন,আমরা চাই দোষী যেই হোক না কেন, তার নেই কোন দল, নেই কোনো জাত, নেই কোন ধর্ম, দোষী কে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হোক।
সংগঠনে আরেক হাসান মাহমুদ বলেন,পাগলা কুকুরকে যে রকম এলাকার/মহল্লার সব মানুষ মিলে মেরে ফেলানো হয়,ঠিক ধর্ষকেদের এলাকার/ মহল্লার সব মানুষ মিলে গন পিটুনি দিয়ে মেরে ফেলানো উচিত। সুলাইমান আবিদ জানান, সত্যি গোটা পুরুষ জাতি আজ লজ্জিত। কিছু পুরুষরূপী কাপুরুষদের এমন বর্বর কর্মকাণ্ডের জন্য।
তিনি আরো বলেন, ক্ষমা করো মা, কি সন্তান জন্ম দিলে যে সন্তান তোমার ইজ্জত কাডে।
মাহিম ইসলাম বলেন, দোষীদের যদি সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় না আনা যায় তাহলে এই ধরনের অপরাধ প্রবণতা দিন দিন যে পরিমাণে বাড়ছে তাতে গোটা দেশের মা ও বোন শংকিত। অতিসত্বর তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। এখলাস শেখ বলেন, এরকম বারবর নরপিচাশদের এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক যাতে পরবর্তীতে এমন কর্মকাণ্ডের কথা দ্বিতীয়বার কেউ না ভাবতে পারে।
সালমান রাফি জানান, মা-বোনের উপর ধর্ষণ ও নির্যাতন একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে, এই ব্যাধি অতিসত্বর নিরসন না করা গেলে আমাদের কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। তাই দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক যাতে পরবর্তীতে এমন দুঃসাহস কেউ দেখাতে না পারে।
এসময় তারা আরো বলেন নোয়াখালীতে বর্বর কর্মকাণ্ড আজ থেকে ৩৩ দিন আগে ঘটেছিল, যদি এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে না পড়ে তাহলে হয়তোবা এটা সবার অগোচরে থাকতো। তাই সকল সচেতন নাগরিকের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি আপনারা সমাজের সজাগ দৃষ্টি ভূমিকায় থাকুন এবং আশেপাশের সকল অপরাধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ও প্রতিবাদী হোন যাতে কেউ এমন দুঃসাহস দেখাতে না পারে।
যদি এমন কেউ নরপিচাশের মত কর্মকাণ্ড করে থাকে আপনারা তাকে কঠোর হস্তে দমন করুন। তারা আরো বলেন যে শুধু আমরা মোরেলগঞ্জের যুবসমাজ নয় গোটা দেশের যুব সমাজ ও সচেতন নাগরিক এই সকল অন্যায় অত্যাচার নির্যাতন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে সবসময় সোচ্চার, তাই এদেরকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক।
error: Content is protected !!