হোম » শিরোনাম » মেধাবী মরিয়মের টানা ৪ বার জিপিএ ৫ অর্জন

মেধাবী মরিয়মের টানা ৪ বার জিপিএ ৫ অর্জন

আবুল হোসেন গ্রীনঃ উল্লাপাড়ার অদম্য মেধাবী মরিয়মের টানা ৪ বার জিপিএ ৫ অর্জন। একটি দরিদ্র পরিবারে মরিয়মরা চার বোন, এই চার বোনের শতভাগ শিক্ষিত হবার গল্প বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবময় দৃষ্টান্ত ।

সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের নুরগঞ্জ (পেচারপাড়া ) গ্রামের একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের মেয়ে মরিয়ম উল্লাপাড়া বিজ্ঞান কলেজ থেকে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে অংশ গ্রহণ করে জিপিএ ৫ পেয়েছে।
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ফলাফল প্রকাশের পরে অনেকটাই খুশি মরিয়ম ও তার শিক্ষক, স্বজন ও এলাকাবাসী।কারন এ নিয়ে টানা ৪ বার জিপিএ ৫ অর্জন করা মরিয়মের রয়েছে।

অসাধারণ সাফল্যগাথা গল্প, ইতিপূর্বে সে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উল্লাপাড়ার গ্রামীণ শিক্ষা নগরী বড়হর স্কুল এন্ড কলেজ থেকে অংশ গ্রহণ করে জিপিএ-৫ অর্জন করেছে।

২০১৮ সালের জেএসসি পরীক্ষায় একই স্কুল থেকে অংশ গ্রহণ করে জিপিএ-৫ অর্জন করেছে।এছাড়া ২০১৪ সালের পিএসসি পরীক্ষায় বড়হর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অংশ গ্রহণ করে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে।একটি দরিদ্র পরিবারের অদম্য মেধাবী মরিয়মের এমন অভাবনীয় সাফল্যের গল্প সত্যিই প্রশংসনীয়।

মরিয়মের কষ্টার্জিত এমন ফলাফলে খুশি তাদের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি দরিদ্র কৃষক বাবা আব্দুল মান্নান ও আদর্শ গৃহিনী মা মিনা বেগম ।

মরিয়মের এইচএসসি পাশ করার মধ্য দিয়ে চার বোনের কমপক্ষে এইচএসসি পাশের মাধ্যমে একটি দরিদ্র ও অশিক্ষিত পরিবারে শতভাগ শিক্ষিত হবার গল্প বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবময় দৃষ্টান্ত ।

ভাই বিহীন সংসারে ৪ বোনের মধ্যে মরিয়ম সবার ছোট।কৃষক বাবার সামান্য আয়ের পাশাপাশি মায়ের হাস- মুরগি গরু ছাগল পালন থেকে যে আয় হয় তা দিয়েই চলে তাদের অভাবের সংসার আর পড়ালেখা।ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও ভাই বিহীন চার বোনের দরিদ্র কৃষক বাবার সামান্য আয়ে পুরন হয়নি সে আশা।তবে মেডিকেল সেক্টরের নার্সিং ও প্যাথলজিতে অধ্যয়ন করে কিছুটা দুধের সাধ ঘোলে মিটিয়েছে এই অসহায় পরিবারের মেয়েরা।বড়বোন মনিরা খাতুন সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটে অধ্যয়ন শেষ করে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসাবে কর্মরত আছে উল্লাপাড়া উপজেলা হেলথ্ কমপ্লেক্সে। মেজো বোন লাকী খাতুন প্যাথলজিতে ডিপ্লোমা শেষ করে নিয়োগ না থাকায় বেকার হয়ে বসে আছে স্বামীর সংসারে।আর সেজো বোন হালিমা তুজ সাদিয়া এইচ এসসি পাশ করে অধ্যয়নরত আছে কুষ্টিয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটে।মরিয়মের ইচ্ছা একজন ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করার।

কিন্তু বড় বাধা হয়ে দাড়াতে পারে অভাব অনটনের সংসার।তবুও হাল না ছেড়ে একজন ভালো মানুষ ও পেশাগত ডাক্তার হয়ে মানবতার সেবা করার স্বপ্নের কথা জানায় সদ্য এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়া উল্লাপাড়ার মরিয়ম।

error: Content is protected !!