হোম » শিরোনাম » স্কুলছাত্রী অদিতা হত্যা: এ হত্যাকাণ্ডের দায় কার- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড়

স্কুলছাত্রী অদিতা হত্যা: এ হত্যাকাণ্ডের দায় কার- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড়

আরিফুল হক সুমনঃ  পূর্ব লক্ষ্মীনারায়ণপুরে (মাইজদী কোর্ট, নোয়াখালী) নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে নিজ বাসায় ঢুকে ধর্ষণ পরবর্তিতে গলা ও হাত-পা কেটে হত্যা।

নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) তার নিজ বাসায় ধর্ষণ ও গলা কেটে হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে সরব হয়েছেন নোয়াখালীর নেটিজেনরা। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালী জেলা শহরে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বেড়ে গেছে বলেও দাবি করছেন অনেকে। অদিতার হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের দাবিতে শুক্রবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে ‘সচেতন নোয়াখালীবাসী’ নামের একটি সংগঠন। তবে পুলিশ বলছে, এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

হত্যাকাণ্ডের খবর ঢাকা মেইলসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে নিন্দার জড় ওঠে। হাবিব ইমন নামে একজন তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, ‘আমার শান্তির শহর নোয়াখালী আজ নষ্ট রাজনীতির শিকার। আমার নোয়াখালী আজ সর্বনাশা পালিত কিশোর গ্যাংয়ের শিকার৷ ’

মো. জাহের হোসেন বাপ্পি নামে একজন পোস্ট করেছেন, ‘মাইজদী শহরের আজকের এই রাতটা একটি কলঙ্কিত অধ্যায়, ভালো থাকিস বোন, মহান আল্লাহ তোকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুক, আমিন’। সাঈদ রাসেল নামে একজন তার আইডিতে লিখেছেন ‘নির্মমতা কত দূর হলে জাতি হবে নির্লজ্জ?ইন্না-লিল্লাহ, পূর্ব লক্ষ্মীনারায়ণপুরে (মাইজদী কোর্ট, নোয়াখালী) নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে নিজ বাসায় ঢুকে ধর্ষণ পরবর্তিতে গলা ও হাত-পা কেটে হত্যা। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি’।

মো. মিজানুর রহমান তার আইডিতে লিখেছেন ‘এ হত্যাকাণ্ডের দায় কার। তারা কারা ছিলো যারা প্রকাশ্যে অদিতাকে ধর্ষণ করবে বলে গত কয়েকমাস ধরে হুমকি দিয়ে আসছিলো? প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পেয়েও কেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ওই বখাটেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় নি?’ আবদুল্লাহ আল মামুন নামে একজন ফেসবুক পোস্টে মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘বড় মসজিদ মোড় হতে পুব দিকে গার্লস স্কুল হয়ে মহিলা কলেজ এবং দক্ষিণে জিলা স্কুল পর্যন্ত এই স্পট দুটি বখাটে, ছিনতাইকারী, মাদকসেবীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে বলা যায়। রাত যত গভীর হয় সন্ত্রাসী, কিশোর গ্যাং, ছিনতাইকারীদের আনাগোনা বেড়ে যায় এই স্পট গুলোতে।’

অন্যদিকে অদিতা হত্যাকান্ডের খবর জানার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের বিভিন্ন টিম হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনের জন্য কাজ শুরু করে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম সহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

এ সময় পুলিশ সুপার গণমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্বশত্রুতার জের ধরে অথবা অন্য কোন কারনে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকা থেকে তাসনিয়া হোসেন অদিতা (১৪) নামের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের দুই হাত ও গলা কাটা ছিলো। নিহতের মৃতদেহ অর্ধনগ্ন থাকায় পরিবারের দাবী তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই সদস্যরা। ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

নিহত তাসনিয়া হোসেন অদিতা ওই এলাকার মৃত রিয়াজ হোসেন সরকারের মেয়ে। সে নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

তথ্য – সংগৃহীত

error: Content is protected !!