হোম » শিরোনাম » আই এল ও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রম বিধিমালা সংশোধন চাই

আই এল ও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রম বিধিমালা সংশোধন চাই

এম হিরোন প্রধানঃ সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শ্রমিক নেত্রী নাজমা আক্তার ও সাধারন সম্পাদক নাহিদুল হাসান নয়ন এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশের সংবিধান, মানবাধিকারের ঘোষনা ও আই এল ও কনভেনশন মোতাবেক দেশের শ্রম আইন ও শ্রম বিধিমালা সংশোধন করার আহবান জানান।

দেশের সকল শ্রমিক সংগঠনের দাবীর প্রেক্ষিতে ও আর্ন্তজাতিক মানদন্ড বাস্তবায়ন করার লক্ষে শ্রম বিধিমালা সংশোধন করে গনতান্ত্রিক ও শ্রমিক বান্ধব করার জন্য সরকার, মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা কাজ করে যাচ্ছে। ইতো মধ্যে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন জানতে পেরেছে যে, বর্তমান শ্রম আইনে শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা কর্তন করে শ্রম বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। বর্তমান শ্রম আইনের প্রাপ্ত সুবিধা থেকে কম সুবিধা রেখে শ্রম বিধিমালা সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে তা বাতিল করার জোর দাবী জানান।

বাংলাদেশ শ্রম আইন‘ ২০০৬ এর ধারা (৯৯) যে সকল প্রতিষ্ঠানে অন্যূন ১০০ জন স্থায়ী শ্রমিক কর্মরত রহিয়াছে, সেইখানে মালিক প্রচলিত বীমা আইন অনুযায়ী গ্রুপ বীমা চালু করিতে হইবে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন‘ ২০০৬ এর ধারা (৯৯) এর (৩) এর অধীনে শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্প সেক্টর অথবা শতভাগ বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগকারী শতভাগ রপ্তানীমুখী শিল্প সেক্টর সহ অন্যন্য শিল্প সেক্টরে সরকার কর্তৃক কেন্দ্রীয় তহবিল স্থাপিত হইলে উক্ত শিল্প সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য গ্রুপ বীমা করিবার প্রয়োজন হইবে না এবং এরূপ ক্ষেত্রে শ্রমিকের গ্রæপ বীমার সমপরিমান অর্থ উক্ত তহবিলে প্রদান করা হইবে: উক্ত বিধি মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকগন সুবিধার আওতায় ছিলেন সেই সুবিধা বঞ্চিত করে (কেন্দ্রীয় তহবিলের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানের চাকুরীতে ৯ (নয়) মাস নিযুক্ত রহিয়াছেন) তাদের কে সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে বিভিন্ন শিল্পে কর্মরত লক্ষ লক্ষ শ্রমিক তাদের ন্যায্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন‘ ২০০৬ এর ধারা (৪৮) প্রসুতি কল্যান সুবিধার পরিমান (১) এই [ অধ্যায়ের] অধীনে যে প্রসুতি কল্যান সুবিধা প্রদেয় হইবে উহা উপ-ধারা (২) এ উল্লেখিত পন্থায় গণনা করিয়া দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক যে ক্ষেত্রে যাহা প্রযোজ্য, গড় মজুরী হারে সম্পূর্ণ নগদে প্রদান করিতে হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর প্রয়োজনে দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক গড় মজুরী গণনার জন্য সংশ্লিষ্ঠ মহিলা কর্তৃক এই অধ্যায়ের অধীন নোটিশ প্রদানের অব্যহতি পূর্ববর্তী তিন মাসে তাহার প্রাপ্ত মোট মজুরীকে উক্ত সময়ে তাহার মোট প্রকৃত কাজের দিনগুলি দ্বারা ভাগ করিতে হইবে। সেই সুবিধা বঞ্চিত করে (শ্রমিকের মোট মজুরী কে ২৬ দিয়ে ভাগ করে) প্রসুতি কল্যান সুবিধা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে বিভিন্ন শিল্পে কর্মরত কোটি কোটি নারী শ্রমিক তাদের ন্যায্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন‘ ২০০৬ এর ধারা (১১৯) ছুটি অথবা বন্ধের সময়ের মজুরী হিসাব ও প্রদান।-(১) এই আইনের অধীন কোন শ্রমিককে মঞ্জুরকৃত ছুটি বা বন্ধের জন্য যে হারে মজুরী প্রদেয় তাহা হইবে- তিনি তাহার ছুটির অব্যহিত পূর্ববর্তী মাসে যে দিনগুলি কাজ করিয়াছেন সেই দিন গুলির জন্য প্রদত্ত, অধিককাল ভাতা ও বোনাস ব্যতিত, তাহার পূর্ণ সময়ের মজুরী এবং মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তবর্তী মজুরী, যদি থাকে, এর দৈনিক গড়ের সমান:

২০১৮ সালে কালকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরির্দশন অধিদপ্তর মালিক শ্রেনীর সুবিধার্থে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রজ্ঞাপন জারি করে শ্রমিকদের প্রচলিত প্রাপ্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে অর্জিত ছুটির মজুরী ২৬ দিন দিয়ে ভাগের স্থানে ৩০ দিন দিয়ে ভাগ করার সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। যাহা শ্রমিক স্বার্থ বিরোধি এবং শ্রমিকদের সুবিধা বঞ্চিত করে শ্রম বিধিমালায় অর্জিত ছুটির মজুরী ২৬ দিন দিয়ে ভাগের স্থানে ৩০ দিন দিয়ে ভাগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ শ্রম আইন‘২০০৬ এর শ্রমিক পক্ষে সকল সুবিধা প্রদান করে বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা সংশোধন করার জোর দাবী জানান।

error: Content is protected !!