হোম » সারাদেশ » রংপুরে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে আসামী মৃত্যুর ঘটনায় থানা ভাংচুর

রংপুরে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে আসামী মৃত্যুর ঘটনায় থানা ভাংচুর

সালেকুজ্জামান সালেক,রংপুরঃ  রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছের দালালহাটে গত সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগে বিক্ষোভ করেছে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী।এসময় তারা হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানা ঘেরাও করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে ও ভাংচুর চালায়। বিক্ষোভ কারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এতে সাংবাদিক সহ বেশ ক‘জন আহত হয়েছেন।নিহত ব্যাক্তির নাম তাজুল ইসলাম (৫৫)।

তিনি কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছের দালালট নয়াটারীর মৃত. শওকত আলীর ছেলে।পুলিশের দাবী নিহত ব্যাক্তি মাদকাসিক্ত ছিলেন। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার পুলিশ নতুন বাজার বছির বানিয়ার তেপতি নামক স্থানে অভিযান চালায়। এসময় মাদকসেবী সন্দেহে তাজুলকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের সাথে তার ধস্তা-ধস্তি হয়। স্থানীয়দের দাবি নির্যাতনের এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে তাজুল ইসলামের মৃত্যু হয়। তবে পুলিশের দাবি নির্যাতন নয়, স্ট্রোক করে তাজুলের মৃত্যু হয়েছে।

আবুল হোসেন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকদের জানান, তাজুলকে মিথ্যা মাদক সেবনের অভিযোগে আটক করে হাতকড়া পড়ানো হয়। এ সময় তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। তাজুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে হারাগাছ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ জনতা‘হত্যার বিচার দাবি’ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় থানা ভবনের সামনে রাখা একটি পুলিশ ভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে থানা ভবনের ভেতরে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।

পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহতের ফুফাতো ভাই সাজ্জাদ জানান, তাজুলরা তিন ভাই। এর মধ্যে তাজুল চিরকুমার। ধরে নিয়ে যাওয়ার পর মারা গেলে পুলিশ তাজুলের লাশ নিয়ে যেতে চেয়েছিল। এলাকাবাসী বাধা দেওয়ায় নিতে পারেনি। হাতকড়াটি খুলে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত আলী জানান, তাজুল হেরোইন সেবন করছিলেন এমন খবর পেয়ে সেখানে অভিযানে যায় পুলিশ। তাকে আটকের পর হ্যান্ডকাপ পরানো হলে তিনি মলত্যাগ করে ফেলেন এবং স্ট্রোক করেন ।

এঘটনার পর পুলিশ তাজুলকে স্থানীয়দের জিম্মায় দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে যে তাজুল মারা গেছেন। এ ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (অপরাধ) উজ্জ্বল কুমার রায় জানান, ‘আটক ব্যক্তিকে মারধর করা হয়নি। তাঁর বয়স বেশি ছিল। হাতকড়া পায়ে চাপ দিয়ে ভাঙ্গার চেষ্টা করায় তিনি হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান । রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার আলতাব হোসেন জানান, তাজুলকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ সত্য নয়।

error: Content is protected !!