হোম » সারাদেশ » বালিয়াডাঙ্গীতে আমন ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমনে কৃষকেরা দিশেহারাঃ

বালিয়াডাঙ্গীতে আমন ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমনে কৃষকেরা দিশেহারাঃ

মোঃ হাসান আলীঃ বাংলাদেশে তিন ধরনের মাজরা পোকা ধানের ক্ষতি করে থাকে – হলুদ মাজরা, কালো মাথা মাজরা এবং গোলাপী মাজরা পোকা। এই পোকাগুলোর কীড়ার রং অনুযায়ী তাদের নামকরণ করা হয়েছে। এদের আকৃতি ও জীবন বৃত্তান্তে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও ক্ষতির ধরণ এবং দমন পদ্ধতি একই রকম। হলুদ মাজরা পোকা প্রধানত বেশী আক্রমণ করে। নিম্নে হলুদ মাজরা পোকার বিবরণ দেয়া হলো- পূর্ণ বয়স্ক হলুদ মাজরা পোকা এক ধরনের মথ। স্ত্রী পোকার পাখার উপরে দুটো কালো ফোঁটা আছে।
পুরুষ মথের পাখার মাঝখানের ফোঁটা দুটো স্পষ্ট নয় তবে পাখার পিছন দিকে ৭-৮ টা অস্পষ্ট ফোঁটা আছে। হলুদ মাজরা পোকার স্ত্রী মথ ধান গাছের পাতার আগার দিকে গাদা করে ডিম পাড়ে। এক সপ্তাহের মধ্যে ডিম ফুটে কীড়া বের হয়। কীড়ার রং সাদাটে হলুদ। কীড়াগুলো কান্ডের ভিতরে প্রবেশ করে ৩ থেকে ৪ সপ্তাহে পুত্তলিতে পরিণত হয়। তবে শীতকালে কীড়ার স্থিতিকাল ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত হতে পারে। পুত্তলিগুলো এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে বয়স্ক পোকায় পরিণত হয় এবং কান্ডের ভিতর থেকে বের হয়ে আসে।
ক্ষতির ধরণ– মাজরা পোকা শুধুমাত্র কীড়া অবস্থায় ধান গাছের ক্ষতি করে থাকে। সদ্য ফোঁটা কীড়াগুলো দু’চারদিন খোল পাতার ভিতরের অংশ খাওয়ার পর ধান গাছের কান্ডের ভিতর প্রবেশ করে। কান্ডের ভিতর থেকে খাওয়ার সময় এক পর্যায়ে মাঝখানের ডিগ কেটে ফেলে। ফলে মরা ডিগের সৃষ্টি হয়। গাছের শীষ আসার আগে এরকম ক্ষতি হলে তাকে ‘মরা ডিগ’ বলে। আর গাছে থোর হওয়ার পর বা শীষ আসার সময় ডিগ কাটলে শীষ মারা যায় বলে একে ‘মরা শীষ’ বলে। ‘মরা শীষ’ এর ধান চিটা হয় এবং শীষটা সাদা হয়ে যায়। বোরো, আউশ এবং আমন এই তিন মৌসুমেই এই পোকার আক্রমণ দেখা যায়।
জৈবিক পদ্ধতিতে দমন– মাজরা পোকার ডিমের গাদা সংগ্রহ করে নষ্ট করে ফেলা। ক্ষেতে ডাল-পালা পুঁতে দিয়ে পোকা খেকো পাখির সাহায্যে পোকার সংখ্যা কমানো যায়।  সন্ধ্যার সময় আলোক ফাঁদের সাহায্যে মথ আকৃষ্ট করে মেরে ফেলা। রাসায়নিক পদ্ধতিতে দমন–রোগাক্রান্ত হলে নিম্নোক্ত কীটনাশক বীজতলা বা জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। সমাধান– ধানের জমিতে ১০০ টির মধ্যে ১০-১৫ টি মরা কুশি অথবা ৫ টি মরা শীষ পাওয়া গেলে অনুমোদিত কীটনাশক যেমন– ৩৩ শতাংশ জমিতে ল্যাটিন ১৫ ডব্লিপি ১৩৫গ্রাম/এ্যারোটাপ ৫০ এসপি ১০০ গ্রাম / এরোনিল একরে ২০০মিঃলিঃ/জিন১ইসি একরে২০০মিঃলিঃ/এবাটা একরে৩০০গ্রাম অথবা কার্বোফুরান গ্রুপের কীটনাশক  অথবা ডায়াজিনন গ্রুপের কীটনাশক। এছাড়া কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক এস্পে করতে হবে।
error: Content is protected !!