হোম » প্রধান সংবাদ » এমসপির জনবান্ধব উদ্দ্যোগ বিনামূল্যে জিডি সেবাপ্রার্থীদের জন্য চকলেট

এমসপির জনবান্ধব উদ্দ্যোগ বিনামূল্যে জিডি সেবাপ্রার্থীদের জন্য চকলেট

জাহেদুর রহমান সোহাগ,রাঙ্গুনিয়া (চট্ট্রগ্রাম) প্রতিনিধি: এখন থেকে ১ টাকাও খরচ না করে এবং কোনরকম হয়রানি ছাড়াই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারবেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান উপজেলার সাধারণ মানুষ। থানার ডিউটি অফিসারের কাছ থেকে বিনামূল্যে জিডির ফর্ম সংগ্রহ করে মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যেই জিডির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারবেন তারা। অভিনব এবং জনবান্ধব এই উদ্যোগটি গ্রহণ করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (রাউজান- রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।

 

সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে আসা সেবাপ্রার্থীদের নিকট হতে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে অনেক পুরনো। এছাড়া থানার বাইরে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কর্তৃক জিডির আবেদন কম্পিউটার কম্পোজ করে দেওয়ার নামে অসহায় মানুষের কাছ ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়ার কথাও শোনা যায় হরহামেশাই। সাধারণ মানুষকে এসব হয়রানি থেকে মুক্ত করতেই সার্কেল এএসপির উদ্যোগে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান থানায় এই জিডির ফর্ম সরবরাহের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

 

এখন থেকে যে কোন সেবাপ্রার্থী ব্যক্তি থানায় উপস্থিত হয়ে এই ফর্ম সংগ্রহ ও পূরণ করার মাধ্যমে কোন টাকা খরচ ব্যতিরেকেই জিডি করতে পারবেন। এমনকি যারা এই ফর্ম পূরণ করতেও অপারগ এবং যারা শিক্ষক, নারী, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, অথবা সিনিয়র সিটিজেন (ষাটোর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তি), তাদের জিডি ফর্মটি পূরণ করার কাজটি করে দিবেন থানার ডিউটি অফিসার নিজেই। শুধু যে বিনামূল্যে জিডি করারই বন্দোবস্তই করা হয়েছে তা নয়; পাশাপাশি থানায় অভ্যাগতদের জন্য আপ্যায়ন হিসেবে থাকছে চকলেটের ব্যবস্থাও। পুলিশ সূত্রে জানা যায়,

 

জিডি করার জন্য নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানপূর্বক নির্দিষ্ট ফরম্যাটে অফিসার ইনচার্জ বরাবর আবেদন করতে হয়। গ্রামের অসচেতন নিরীহ মানুষ স্বাভাবিকভাবেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হিমসিম খান, যার সুযোগ নেয় থানার আশপাশেই অবস্থান নিয়ে থাকা দালাল চক্র। তাদের যোগসাজশে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী জিডি লেখা এবং সেটা নিয়ে কোথায় যেতে হবে এসব রাস্তা বাতলে দেওয়ার বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় কষ্টার্জিত অর্থ।

 

এখন থেকে বিনামূল্যে থানা হতে প্রাপ্ত আবেদন ফর্মের মাধ্যমে সহজে এবং হয়রানিমুক্তভাবে জিডি করতে পারবেন যে কেউ। সার্টিফিকেট হারানোর জিডি করতে রাউজান থানায় এসেছিলেন চট্টগ্রামের হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজের শিক্ষার্থী কাজী রবিউল হোসাইন। জিডি করে বের হবার পর থানা গেটে কথা হয় তাঁর সাথে। পুলিশের সেবায় সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলছিলেন ্য় ড়ঃ;ভাবতেও পারিনি এত ঝামেলামুক্তভাবে এবং দ্রুত জিডি করা যায়। পুলিশ যদি এই কাজ অব্যাহত রাখতে পারে তাহলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবার পাশাপাশি পুলিশের সম্মানও বাড়বে বলে আমি মনে কর্য়িঁড়ঃ;।

 

মোবাইল হারানোর জিডি করতে মুরগি বিক্রি করে ৫০০ টাকা নিয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় এসেছিলেন গৃহবধূ কোহিনূর বেগম (ছদ্মনাম)। এলাকার মেম্বার নাকি বলে দিয়েছেন, ২/৩ শ টাকা লাগবে জিডি লিখতেই, আর থানার পুলিশদেরকে চা- পানি খাওয়ার জন্যও নাকি কিছু খরচ দিতে হয়। থানা থেকে বের হয়ে তিনিও খুশি পুলিশের আচরণে ্য়ঁড়ঃ;এক টাকাও লাগেনি বাবা। উল্টো পুলিশ জিডির ফর্ম পুরন করে দিয়েছে, চকলেটও খাইয়েছে।

 

তারা খুব সম্মান দিয়ে কথা বলছে।্য়ঁড়ঃ; এ প্রসঙ্গে উদ্যোগ গ্রহণকারী এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম জানান, আমার দায়িত্বাধীন এলাকায় বসবাসকারী মানুষের জন্য হয়রানিমুক্ত পুলিশি সেবা নিশ্চিত করতেই উদ্যোগটি নেওয়া। বাংলাদেশ পুলিশের সম্মানিত আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) স্যারের নেতৃত্বে জনবান্ধব পুলিশের যে অগ্রযাত্রা,

 

তারই অংশ হিসেবে আমিসহ থানায় কর্মরত অন্য সকল অফিসার- ফোর্সের নিজস্ব অর্থায়নে সাধারণ মানুষের জন্য এই জিডির ফর্ম সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশকে মানুষের প্রকৃত ভরসাস্থলে পরিণত করতে সামনের দিনগুলোতে এ ধরনের আরো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পুলিশের এমন জনবান্ধব পদক্ষেপে খুশি এলাকাবাসীও। তবে চালু হবার কিছু দিনের ব্যবধানেই এটি যেন আবার বন্ধ না হয়ে যায়, এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

 

error: Content is protected !!