হোম » প্রধান সংবাদ » বগুড়ার শেরপুরে মসজিদে দেয়া দানকে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা!

বগুড়ার শেরপুরে মসজিদে দেয়া দানকে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা!

আবু জাহের, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শেরপুরে মসজিদে দেয়া দানকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের অপচেষ্টার প্রতিবাদে খানপুর ইউনিয়নের ৯ জন ইউপি সদস্য শেরপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তারা সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন ভাতাভোগীদের নিকট থেকে ঘুষ নেয়ার বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

আজ শনিবার (০৮ আগস্ট) দুপুরে শহরের স্থানীয় বাসষ্ট্যান্ড শেরপুর প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মো. খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, স্থানীয় কয়েরখালী বাজারস্থ ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বহুতল মসজিদ ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা নির্মিত হচ্ছে। এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা ও তাদের দানের টাকায় ধর্মীয় এই প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। অত্র ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাঞ্জুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ কাজে এলাকার প্রায় সব মানুষই স্বেচ্ছায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় বেশকিছু ভাতাভোগী সদস্য ভালো কাজে অংশ নিতে স্বেচ্ছায় সাধ্যনুযায়ী টাকা দান করেছেন। আর মসজিদ পরিচালনা কমিটির লোকজন রশিদ মূলে সেই টাকা গ্রহণ করেছেন। এক্ষেত্রে চেয়ারম্যান ও আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। অথচ এই ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য একটি কু-চক্রীমহল নানামুখি ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন। আমাদের সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই ঘুষ নেয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের নামে সাজানো ও কল্পিত নাটক মঞ্চস্থ করা হয়। এহেন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আ.লীগ নেতা খলিলুর রহমান আরও বলেন, তার ইউনিয়নে ভাতাভোগীদের নিকট থেকে কোন ঘুষ নেয়ার ঘটনা ঘটেনি। তারা স্বেচ্ছায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজে দান করেছেন। তাই এটি নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বা সরকারী কোন সেবা দেয়ার সময় চেয়ারম্যান বা মেম্বার যদি কোন টাকা গ্রহন করত তাহলে এটা একটা বিশ্বাস কর ঘটনা বলা হতো। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনার সমস্ত কাজ কর্মগুলি মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য আমাকে এই অবহেলিত খানপুর বাসীর জন্য যে উন্নয়নের অবদানে সহযোগিতা করেছেন যা স্বাধীনতার পর থেকে অত্র ইউনিয়নে হয়েছে কি না তা আপনাদের পরিদর্শন করার জন্য অনুরোধ করছি।

একটি দালাল চক্র বার বার আমার ইউপি সদস্যদের ও আওয়ামী পরিবারকে হেয় করার জন্য মাঠে নেমে আছে। আপনারা অবগত আছেন যে, বিগত ২০১১ সালে নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যানকে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন প্রদান করেন তখন এই মহলটি বিরুদ্ধচারন করে বিএনপি মনোনিত প্রার্থী মতিউর রহমান মতির পক্ষে কাজ করে দলীয় প্রার্থীর পরাজয় নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে গত নির্বাচনে তারা আপন দুই ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান এর সাথে ভোট যুদ্ধে প্রতিদ্ব›িদ্ধতা করে প্রতিপক্ষ ৩য় স্থান অধিকার করে। তখন হতেই আমার পরিষদের মান সম্মান নষ্ট করার জন্য বার বার চেষ্টা করে আসছে যে কোন ভাবে। এই দালাল চক্র কখন কার পক্ষে অবস্থান করে তা বোঝার কোন উপায় নাই।

মসজিদ নির্মানের জন্য দান গ্রহন করা কি অন্যায়, তার পরেও বিতর্ক এড়ানোর জন্য আমরা সেই দানও ফেরত দিয়েছি। কোন ফকিরও যদি মসজিদ নির্মানে দান করতে চান তাহলে আমরা কেন তাকে দান করতে নিষেধ করবো। মসজিদ নির্মানে ধনী দরিদ্র সকলেই দান করতে পারেন। তাই আমরা তাদের দান গ্রহন করেছিলাম কিন্ত এই দান নিয়েও যে এমন নোংরামি হবে সেটি আমাদের জানা ছিলনা। মুসলমানের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ, হিন্দুদের মন্দির, খ্রিষ্টানদের গীর্জা। ধর্মমত নির্বিশেষ সকল মানুষই তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে উদার কিন্তু এমন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করছে তারা কোন ধর্মের হতে পারে না। এমন মানুষও আছে তা সত্যিই দুঃখজনক।

এখানে একটি টাকাও কেউ ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করেননি। তারপরেও একটি কুচক্রি মহল নিজেদের রাজনৈতিক হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য একটি ভাল কাজকে কিভাবে মিথ্যের রংয়ে রাঙ্গিয়ে মানুষের নিকট ভুল তথ্য উপস্থাপন করে বিভ্রান্ত করছেন, এই ঘটনা না ঘটলে আমরাও বিশ্বাস করতে পারতামনা। ওই কুচক্রি মহল আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে মসজিদের এই দানকে ঘুষ হিসেবে চালিয়ে দিতে মিথ্যা অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাই আমরা এই মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।

 

আমার বিশ্বাস এই ঘটনা দেশরটণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সকল সরকারী প্রতিষ্ঠান গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত ও প্রশাসনকে অনুরোধ করবো সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনাকে মানুষের সামনে নিয়ে আসুন। আপনাদের সহযোগিতায় সত্য উম্মোচিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।  উক্ত সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্য মোজাফ্ফর রহমান, রেজাউল করিম, ফরিদ উদ্দীন, আজিজুল হক, নুরুল ইসলাম নুরু, ওমর আলী, ফুলেরা খাতুন, রানু বালা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

error: Content is protected !!