মামুনুর রশিদঃ সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন সকাল ১০ঃ ৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাব হতে র্যালি করে তোপখানা রোডে অবস্থিত নিম্নতম মজুরী বোর্ডে নিম্নতম মজুরী ২৩,০০০/- টাকা দাবীতে স্মারকলিপি পেশ করেন।
সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শ্রমিকনেত্রী নাজমা আক্তারের নেতৃত্বে নিম্নতম মজুরী ২৩,০০০/- টাকার দাবীতে স্মারকলিপি পেশ করেন।
নাজমা আক্তার বলেন, “সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন ২০০৬ সাল থেকে তৈরী পোশাক শিল্পে ট্রেড ইউনিয়ন ও যৌথ দরকষাকষি সহ শ্রমিকেদের অধিকার আদায়ে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে। উক্ত ফেডারেশনটি ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়ন এর অন্তর্ভূক্ত এবং তৈরী পোশাক শিল্পে প্রতিনিধিত্বকারী একটি শক্তিশালী সংগঠন।তৈরী পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধির বিষয়টি বহুবিধ যুক্তি ও ন্যায্যতা বিবেচনায় নিয়ে শ্রম আইনের ১৩৯ ধারা মোতাবেক প্রতি ৫ বছর অন্তর নিম্নতম মজুরী হার বৃদ্ধির সুপারিশ ও বাস্তবায়নের বিধান রয়েছে। যার প্রথম ধাপ হিসাবে ইতিমধ্যে আপনার নেতৃত্বে একটি নিম্নতম মজুরী বোর্ড গঠিত হয়েছে এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরী ঘোষনা করা হয়। নিম্নতম মজুরী ঘোষনার পর বিগত ৫ বছরে আমরা দেখতে পাই যে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সহ, বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, চিকিৎসা, শিক্ষা সহ আরো অন্যান্য খরচ আকাশচুম্বি হারে বৃদ্ধি পয়েছে। যার ফলে শ্রমিকদের জীবনযাত্রার চরম আকারে ব্যহত হচ্ছে। সে তুলনায় শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধি পায় নাই এবং পোশাক রপ্তানীকারক বিভিন্ন প্রতিযোগী দেশের তুলনায় আমাদের তৈরী পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের বেতন বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন।”
আমরা ইতিমধ্যে দেখতে পাচ্ছি যে সরকারী ২০ গ্রেডের অদক্ষ কর্মচারী ক্লিনারের ন্যূনতম মজুরী ১৫৮৫০/- টাকা এবং ব্যাংকিং খাতে ২০২২ইং সালে ২৪০০০/- টাকা ঘোষণা করে কার্যকর করা হয়েছে। গ্লোবাল লিভিং ওয়েজ কোয়ালিশন পোশাক খাতের জন্য ন্যূনতম মজুরী অনুমান করছে ২১৬৪৮/- টাকা হওয়া দরকার। শ্রমিকদের ২০১৮ সালের মজুরী ৮০০০/- টাকা, বিগত ২০১৮ সালে ১ ডলার=৮২ টাকা ছিল, সে হিসেবে তখন ৯৮ ডলার বেতন ছিল। ডলারের অবমূল্যায়নের কারণে বর্তমানে সরকারী রেট অনুযায়ী ১ ডলার=১০৬ টাকা হিসেবে বর্তমানে ৭৫ ডলার পায়। গার্মেন্টস মালিকরা টাকা অবমূল্যায়নের কারনে ২৯% শতাংশ টাকা বেশী আয় করছেন। বিভিন্ন দেশের পোশাক শ্রমিক যেমন চীন-২৬২ ডলার, ভারত-১২৮ ডলার, ইন্দোনেশিয়া-১৩৭ ডলার, কম্বোডিয়া-১৯৪ ডলার, মালোশিয়া-২৫০-২৭৩ ডলার, ফিলিপিন্স-২৪৪ ডলার, ভিয়েতনাম-১৬৮ ডলার, তুরস্ক-৩০৭ ডলার এবং বাংলাদেশ বর্তমান ডলারের মূল্যের ভিত্তিতে-৭৫.৫ ডলার মজুরী পাচ্ছে। সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এর পক্ষ থেকে মোট মজুরী ২৩,০০০/= টাকা, ৬৫% মূল মজুরী এবং প্রতিবছর ১০% হারে বেতন বৃদ্ধি সহ সংযুক্ত বেতন গ্রেডে ৭টির স্থলে ৫টি গ্রেড উল্লেখ করে শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধির প্রস্তাবনা আপনার বরাবরে দাখিল করছি।
যেখানে দেশ ও শিল্পের উন্নয়নের জন্য সবচাইতে বড় অবদান রাখছেন পোশাক শিল্পের শ্রমিক, সেখানে এই শ্রমিকরা সকল ক্ষেত্রেই সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ও অবহেলিত হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা বিবেচনা করে উক্ত শ্রমিকদের মর্যাদার্পূণ জীবনের কথা চিন্তা করে অবিলেম্বে ২৩,০০০/- হাজার টাকা নিম্নতম মজুরী র্নিধারণ করা হোক।
উক্ত র্যালীতে উপস্থিত ছিলেন মতাজ বেগম কার্যকরী সভাপতি সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, খাদিজা আক্তার -সাধারন সম্পাদক, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, উর্মি আক্তার- যুগ্ন সাধারন সম্পাদক, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, সৈকত চৌধুরী -সহ-সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন ,ইয়াহিয়া খান- আইন ও যৌথ দরকষাকষি বিষয়ক সম্পাদক,সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, হালিমা বেগম- সাধারণ সম্পাদক, হপলুন এ্যাপারেলস লিঃ সম্মিলিত শ্রমিক ইউনিয়ন, লিলি বেগম- চেয়ারম্যান আর এমজি ওর্য়াকাস ফোরাম, জলি আক্তার- অর্থ সম্পাদক, ফাউন্টেন গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারিং কোঃ লিঃ সম্মিলিত শ্রমিক ইউনিয়ন, নাজমা আক্তার, সভাপতি ন্যাচারেল ডেনিমস লিঃ সম্মিলিত শ্রমিক ইউনিয়ন, ঊর্মি আখতার, হালিমা, মারুফা, ইসমত জেরিন, তাসলিমা আফরোজা, ইয়াসমিন সুলতানা, ইমরান রহমান, আলি সম্প্রিতি, কাজী তানজির, আরিফ, ইব্রাহিম, সাব্বির,মোহাম্মাদ আরমান,মামুন, তপু, সুমন, সালমান, সানজিদা, মিরাজ,হাকিম, লালচান, আশিদ, ফরিদ সহ সম্মিলিত গার্মেন্টস্ শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেত্রীবৃন্দ।
আরও পড়ুন
প্রাক্তন স্বামীকে ৩৭ বছর পর নিজের বৃদ্ধাশ্রমে !
উল্লাপাড়ায় যানবাহনে চাঁদাবাজি-আটক এক
ফুলবাড়ীতে বাঁশের ফুলের দানা থেকে তৈরি হচ্ছে চাল এলাকায় চাঞ্চল্য