হোম » সারাদেশ » বগুড়া শেরপুরে বন্যায় ডুবে থাকা ফসল  রক্ষায় কৃষকের প্রাণাপণ চেষ্টা

বগুড়া শেরপুরে বন্যায় ডুবে থাকা ফসল  রক্ষায় কৃষকের প্রাণাপণ চেষ্টা

এম.এ রাশেদ (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ  বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম ঘোরদৌড়। খাল-বিল ও বাঙালী নদী বেষ্টিত এই গ্রামের বাসিন্দা মো. গোলাম রব্বানী। তিনি পেশায় একজন কৃষক। চলতি আমন মৌসুমে আট বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছেন। আর দুই বিঘা জমিতে রকমারী সবজি চাষ করেছেন। বেশ ভালোও হয়েছে এসব জমির ফসল। তবে এখনো পরিপক্ক হয়নি। তাই ওইসব জমির ফসল ঘরে উঠতে প্রায় দেড় মাস বাকি। কিন্তু এরইমধ্যে সপ্তাহব্যাপি অবিরাম বৃষ্টি ও উজানের পানিতে খাল ও বিলে পানি বাড়তে শুরু করেছে।
এমনকি বাড়তি সেই পানিতে ডুবে গেছে ওই গ্রামসহ আশপাশের অন্তত দশটি গ্রামের ফসলি মাঠ। এরইধারাবাহিকতায় ওই কৃষকের জমিগুলোতে লাগানো ধান ও সবজি ক্ষেত ডুবে গেছে। এতে করে ফসল নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। শুধু এই কৃষক নয়, তারমতো ওই এলাকার বাসিন্দা কৃষক জাকারিয়া হোসেন, শফিকুল ইসলাম, শামছুল হক, আজিজুলহকসহ অনেকেই। তাঁরা ধান ও সবজি ফসল নিয়ে স্বপ্ন বুনছিলেন। কিন্তু তাদের ফসল ডুবে যাওয়ায় পানিতে লুটোপুটি খাচ্ছে কৃষকদের সেই স্বপ্ন। তাই ফসল রক্ষায় মাঠে নেমেছেন তারা। একইসঙ্গে ডুবে থাকা জমির ফসল উদ্ধারে সম্মিলিতভাবে বেশকয়েকটি শ্যালো মেশিন বসিয়ে মাঠের পানি নিষ্কাশনে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এই উপজেলায় আলোচনায় এসেছে।
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে খামারকান্দি ইউনিয়নের ঘোরদৌড়, পারভবানীপুর, খামারকান্দিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ৩০০ বিঘা  জমির আমন ধান ও রকমারি সবজি করলা, মরিচ, বেগুন, পোটল, শিম, ফুলকপি, বাধা কপির জমির ফসল ডুবে যায়। এই ফসল রক্ষায় ডুবে যাওয়া জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য সরকারি কোন দপ্তর এগিয়ে না আসলেও এই এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা সম্মিলিত  প্রচেস্টার মাধ্যমে তা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এজন্য ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা নিজেরাই চাঁদা দিয়ে শ্যালো মেশিনের তেল ক্রয় বাবদ ডিজেল খরচে ব্যয় করছেন।
এভাবে দশটি শ্যালো মেশিন বসিয়ে সেচকাজ পরিচালনার মাধ্যমে প্রায় চার ফুট পানি কমে আনতে সক্ষম হয়েছেন তারা। কৃষকরা জানান, স্থানীয় মেঘাই খালের মুখ বন্ধ করে শ্যালো মেশিনে সেচ কাজ করায় পানি কমতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে অনেক জমি  জেগে উঠেছে, রক্ষা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই ওই খালের মুখে একটি সুইচ গেইট ও ব্যারেজ নির্মাণের দাবি জানান। এজন্য উপজেলা প্রশাসনের নিকট লিখিত আবেদন জানিয়েছেন বলেও জানান তারা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ লিখিত আবেদন পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কৃষকদের সমস্যা সমাধানে সব ধরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সরকারিভাবে সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলেও জানান এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
error: Content is protected !!