হোম » খেলা » ১৭২ রানেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশের ইনিংস

১৭২ রানেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশের ইনিংস

আওয়াজ অনলাইন : মুশফিকুর রহিমের অদ্ভুতুড়ে আউটের পর কার্যত ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলই দেখা গেল। একে একে বাকিরাও পথ ধরলেন ড্রেসিংরুমের। শঙ্কা জাগলো দেড়শোর আগেই অলআউট হওয়ার। তবে লেজের দৃঢ়তার তা হয়নি। যদিও দুইশ রানও করতে পারেনি বাংলাদেশ।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। প্রথম দিনের তৃতীয় সেশনে অলআউট হওয়ার আগে ১৭২ রান করেছে বাংলাদেশ।

বুধবার দ্বিতীয়বারের মতো টেস্টে টস করতে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আগের দিন থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে মিরপুরে। ম্যাচের দিন সকালটাও ছিল মেঘাচ্ছন্ন। এর মধ্যে শান্তর ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত কিছুটা সাহসীই বলতে হয়।

কিন্তু প্রথম থেকেই দুই উদ্বোধনী ব্যাটার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসানকে কঠিন সময় কাটাতে হয়েছে। টিম সাউদি ও কাইল জেমিসনের বলে সুইংও ছিল বেশ। কিন্তু ষষ্ঠ ওভারেই স্পিনার নিয়ে আসেন কিউই অধিনায়ক। এরপরও কিছুটা সময় বেশ ভালোভাবেই খেলছিলেন দুই ওপেনার।

১০ম ওভারে গিয়ে স্পিনার দিয়েই কাজ হয়। এ ম্যাচে একাদশে ঢোকা মিচেল স্যান্টনার প্রথম উইকেট এনে দেন নিউজিল্যান্ডকে। তাতে অবশ্য ব্যাটার জাকিরের দায়ই বেশি। স্যান্টনারকে এগিয়ে এসে তুলে মারতে গিয়ে মিড অনে দাঁড়ানো উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ২৪ বলে ৮ রান আসে তার ব্যাটে।

২৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর আর এক রানও যোগ করতে পারেনি তৃতীয় উইকেট জুটি। শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে এবার ফেরেন আরেক ওপেনার জয়। ৪০ বলে ১৪ রান করা এই ব্যাটার শুরু থেকেই উইকেটে হাঁসফাঁস করছিলেন।

এক ওভার বিরতি দিয়ে আবারও উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এবার ১০ বলে ৫ রান করে মুমিনুল হক ভেতরে ঢোকা বলে ব্যাটে লেগে ক্যাচ যায় উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের হাতে। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক শান্তও এবার ইনিংস বড় করতে পারেননি।

স্যান্টনারকে চার মারার পরের বলেই তাকে রিভার্স সুইপ করতে গেলে বল প্যাডে লাগে। ১৪ বলে ৯ রান করা এই ব্যাটারকে শুরুতে আউট দেননি আম্পায়ার, পরে রিভিউ নিয়ে সফল হয় নিউজিল্যান্ড। এরপর আর কোনো বিপর্যয় ঘটতে দেননি বাকি দুই ব্যাটার।

শাহাদাৎ হোসেন দীপু ও মুশফিকুর রহিম বিরতির পরও খেলছিলেন দারুণভাবে। কিন্তু হুট করেই মুশফিকুর রহিম আউট হন। ইনিংসের ৪৪তম ওভারে কাইল জেমিসনের বলটা ঠিকঠাক ডিফেন্ড করেন মুশফিকুর রহিম। বলটা মাটিতে পড়ে যাচ্ছিল উইকেটের পেছনে, স্টাম্পের কাছাকাছিও ছিল না।

বলটা ডান হাত দিয়ে আরও একটু ডানে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এরপর জেমিসন আবেদন করেন আউটের, আম্পায়াররা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য যান টিভি আম্পায়ারের কাছে। আউট হয়ে যান মুশফিক।

প্রায় ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পর বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে ‘হ্যান্ডেলড দ্য বল’ আউট হলেন মুশফিক, ২০১৭ সালে অবশ্য আউটটির নাম বদলে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ হয়ে যায়। সবমিলিয়ে টেস্ট ইতিহাসে তিনি কেবল অষ্টম আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১১তম হিসেবে এমন আউট হলেন।

দিনের প্রথম সেশনেই ৪ উইকেটে হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ, দলের রান তখন কেবল ৪৭। এরপর আগের ম্যাচে অভিষিক্ত শাহাদাৎ হোসেন দীপুকে নিয়ে দলকে দারুণভাবে এগিয়ে নিচ্ছিলেন মুশফিক।

এ দুজন খেলছিলেনও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে। কিন্তু হুট করে মুশফিকের আউটে ভেঙে যায় জুটি। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৮৩ বলে ৩৫ রান করেন তিনি। এরপর দ্রুতই আরও চারটি উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ৮ উইকেট হারিয়ে তারা করে ১৪৯ রান। বিরতির পর সেই ইনিংস বেশিদূর গড়াতে পারেনি। শেষদিকে নাঈম হাসান (১৩*) ও শরিফুল (১০) মিলে দুইশোর স্বপ্ন দেখালেও শেষ পর্যন্ত পারেননি।

বল হাতে নিউজিল্যান্ডের স্যান্টনার ও গ্লেন ফিলিপস নেন ৩টি করে উইকেট। এছাড়া আজাজ প্যাটেল ২টি এবং অধিনায়ক টিম সাউদি ঝুলিতে পুরেছেন ১টি উইকেট।

error: Content is protected !!