হোম » ধর্ম » প্রতিমায় তুলির শেষ আঁচড়, বগুড়ায়  অলিগলিতে পূজার আমেজ

প্রতিমায় তুলির শেষ আঁচড়, বগুড়ায়  অলিগলিতে পূজার আমেজ

এম এ রাশেদ, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি : আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। পূজার প্রধান উপলক্ষ প্রতিমা তৈরির কাজও প্রায় শেষ। তুলির শেষ আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে দিচ্ছেন শিল্পীরা। পাশাপাশি প্রতিমার শাড়ি, মুকুট, শাঁখা সিঁদুর লাগানো হচ্ছে। কাল থেকে মন্দিরে মন্দিরে পৌঁছে যাবে প্রতিমা। পূজা উপলক্ষে বগুড়া শহরের অলিগলিতে চলছে মন্দিরের প্যান্ডেল বানানোর কাজ।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, শহরের ডালপট্টি, চেলোপাড়া, জলেশ্বরীতলা, ঠনঠনিয়া, দত্তবাড়ী, কালিতলা, চকসুত্রাপুর, সেউজগাড়ী, মাটিডালী, মগলিশপুর, মালতিনগর, শিববাটী ও শহরের সাতমাথা টেম্পল রোডের সনাতন মন্দিরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে চলছে পূজা উদযাপন প্রস্তুতি। বাঁশ দিয়ে বানানো হচ্ছে প্রতিমা রাখার স্টেজ। লাইটিং করা হচ্ছে এক গলি থেকে অন্য গলি পর্যন্ত।
অন্যদিকে পূজার একদিন আগে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরাও। সরেজমিন গিয়ে দেখে গেছে, প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। প্রতিমা শিল্পীরা দেবী দুর্গা, বরুন স্বরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মীর গায়ে শেষ আঁচড় দিচ্ছেন। মনের মাধুরি মিশিয়ে সাজানো শেষে শাড়ি জড়িয়ে দিচ্ছেন প্রতিমার গায়ে। শাখা, সিঁদুর, মুকুট পরিয়ে পরিপূর্ণ রুপ দিচ্ছেন তারা।
শহরের চেলোপাড়ার প্রতিমা শিল্পী কাজল প্রামানিক বলেন, কাজ শেষেই আমাদের তৃপ্তি। রথ যাত্রার পর থেকে দিন-রাত এক করে কাজ করেছি। এ বছর ২০টি কাজের অর্ডার পেয়েছি। সবগুলো আজ-কালের মধ্যে পৌঁছে যাবে। এরমধ্যে একটি প্রতিমার কাজ বাকি আছে, আসা করছি সন্ধ্যার পরপরই শেষ করতে পারবো। খরচ বেড়ে যাওয়ায় লাভ হচ্ছে খুবই সীমিত। কারিগরদের বেতন দিয়ে তাদের কাল বিদায় দেবো।
বগুড়া পৌর শহরের এবার ৬২টি মণ্ডপে চলবে পূজা উদযাপন। উৎসব বিরাজ করছে শহরের দোকানিদের মধ্যে। প্যান্ডেল বানানোর কাজ চলছে। বেচাকেনাও চলছে সমানতালে। শাখা সিঁদুর কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন নারীরা। প্রতিমা সাজানোর জন্য শেষ মুহুর্তে শাখা, শাড়ি, মুকুট,বেচাকেনা চলছে।
বগুড়া পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, পূজা উদযাপনের সব কার্যক্রম শেষ। ইতিমধ্যে দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এবার প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী গঠন ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আশাকরি সুন্দর, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব সমাপ্ত হবে।
বগুড়ায় দুর্গাপূজা চলাকালীন নিরাপত্তা বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রতিমা তৈরির শুরু থেকে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। আজ থেকে শহরের প্রতিটি স্পটে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলার প্রতিটি পূজার মণ্ডপে আমাদের টিম থাকবে। তারা সার্বক্ষণিক পাহারা দেবে। এবং পুলিশের বিশেষ কর্মকর্তারা সবসময় মনিটরিং করবে। তিনি  আরও বলেন, সবার সহযোগিতায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যদিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হবে এবারের দুর্গাপূজা এমনটাই আশা করছেন তিনি।
আগামী শুক্রবার ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। ২১ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ২২ অক্টোবর মহা অষ্টমী, ২৩ অক্টোবর মহানবমী এবং ২৪ অক্টোবর দশমী তিথি প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় উৎসব দুর্গাপূজা।।
error: Content is protected !!