সহদেব সূত্রধর সায়ন, বাসাইল, টাঙ্গাইল : বছর ঘুরে আমার এলো সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা, তাই তো বাংলার ঘরে ঘরে বইছে পূজার আমেজ, হিন্দুদের বাড়িতে তৈরি হচ্ছে বাহারি রকমের মিষ্টি নাড়ু ও মোয়া। সেই সাথে চলছে পূজা প্যান্ডেলের কাজ আর অন্যদিকে প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত রং তুলি নিয়ে দেবী দূর্গাকে নিপুণ হাতে তৈরি করতে। নরম কাদা-মাটি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে গড়ে তোলা দশভুজা দেবী দুর্গার প্রতিমায় ভরে উঠেছে প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে। নানান রঙ আর তুলির আঁচরে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দেবীর প্রতিচ্ছবি। তাই যেনো ঘুম নেই প্রতিমা শিল্পীদের। রঙের আঁচড় আর সাজসজ্জায় দুর্গাদেবীকে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের বাসাইলের প্রতিমা শিল্পীরা।
আগামী ২০ অক্টোবর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরে দেখা গেছে, মাটির কাজ শেষ করে দেবীর গায়ে দিচ্ছেন তুলির আঁচড়। তাদের যেনো ধম ফেলার ফুসরত নেই। রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
টাঙ্গাইলের বাসাইল সাহা পাড়া পূজা মন্ডপে সরেজমিনে দেখতে পাই প্রতিমা শিল্পীরা রং তুলিতে ব্যস্ত ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার চৌহাট এলাকার প্রতিমা শিল্পী দুই ভাই অনন্ত পাল ও হেমন্ত পাল। কাজের ফাঁকে প্রতিমা শিল্পী অনন্ত পাল বলেন, রং তুলির কাজে আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি। রংয়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। রাতদিন পরিশ্রম করে কাজ শেষ করছি। এই কাজ আমাদের বংশ পরম্পরায় থেকে এসেছে। আমার দাদা করছে, বাবা করছে, এখন আমি করতেছি। এবছর পাঁচটি প্রতিমা করছি, টাঙ্গাইল জেলায় ৩টি, ঢাকা জেলায় ১টি ও বরিশালে ১টি। শেষ সময়ে এখন রং তুলির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছি।
আরেক প্রতিমা শিল্পী হেমন্ত পাল বলেন, আমরা প্রতিমাতে ইন্ডিয়ান রং ব্যবহার করি, এই রংয়ের দামটা বেশি। রংয়ের দামের তুলনায় আমাদের পারিশ্রমিক কম। তবুও ১৭ বছর ধরে কাজটি করি সবাইকে আনন্দ দেওয়ার জন্য।
বলে রাখি এই প্রতিমা শিল্পী দুই ভাইয়ের দূর্গা মন্ডপ বার বার টাঙ্গাইল জেলার সেরা পুজা মন্ডপের পুরস্কার পেয়ে আসছে।
বাসাইল উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ সুনিল রায় স্বপন বলেন, এ বছর বাসাইল উপজেলায় ছয় ইউনিয়ন, এক পৌরসভায় মোট ৬৫ মন্ডপে সর্বজনীন ভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৬ টি পূজামণ্ডপ ঝুঁকিপূর্ণ, ৮ টি কম ঝুকিপূর্ন ও ৪১ টি ঝুকিহীন পূজামণ্ডপ রয়েছে। গত শুক্রবার মহালয়ের মধ্যে দিয়ে পুজার আনুষ্ঠানিক শুরু হয়ে গেছে, এ জন্য মন্দিরে বিভিন্ন কাজ ইতোমধ্যেই প্রায় শেষের দিকে। বাসাইল উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে আমরা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছি। প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমাদের ইউনিয়ন সমূহের পূজা মন্ডপ পোরসভায় ১৫, সদর ইউনিয়ন ৯, কাউলজানী ৩, কাঞ্চনপুর ৯, ফুলকী ৮, হাবলা ১০, কাশিল ১১টি পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে ৫ বাংলাদেশি আহত
চন্দনাইশে সাতবাড়ীয়া বার আউলিয়া আলিম মাদ্রাসায় নতুন অধ্যক্ষের যোগদান
আসন্ন রৌমারী উপজেলা নির্বাচনী জনসভায় অপপ্রচারর বিরুদ্ধে মানববন্ধন