হোম » অন্যান্য বিভাগ » সাগরে ট্রলারে ১০ মরদেহ, আত্মগোপন থেকে মহেশখালীর দস্যু সুমন গ্রেপ্তার

সাগরে ট্রলারে ১০ মরদেহ, আত্মগোপন থেকে মহেশখালীর দস্যু সুমন গ্রেপ্তার

মোহাম্মদ খোরশেদ: পুলিশের হাতে আটক ১০ জেলে হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত খাইরুল বশর সুমন এক সময় সাগর উপকূল দাবড়ে বেড়াতেন করতেন দস্যুতা সাগরে মাছ ধরার ট্রলারে হানা দিয়ে চালাতেন লুটপাট।
তিনি সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে আত্মসমপ করে ফিরে আসতে শুরু করে স্বাভাবিক জীবনে। জেল থেকে বের হয়ে বছরখানিক স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করলেও অন্তরালে ফিরে যায় পূর্বের পেশা জলদস্যুতায়। অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজার নাজিরার টেক ট্রলারে লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের মত ঘটনার মধ্যে দিয়ে নতুনভাবে মোড় নে দস্যু সমুনের সংশ্লিষ্টা। জানাগেছে,কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বহুল আলোচিত দস্যু সর্দার খাইরুল বশর সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম শহরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের পর সুমনকে কক্সবাজারে আনা হয়েছে।
২৩ এপ্রিল ১০ মরদেহ উদ্ধারের পর সুমন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিচ্ছে ঘটনা তিনি দুর থেকে তা অনুদাবন করতেন। এরপর তার পরিচয় গোপন করতে মুখে দাড়ি রেখে ছন্মবেশ ধারণ করেন। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। গ্রেপ্তার খাইরুল বশর সুমন মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া দ্বীপের মৃত মোস্তাক আহমদের ছেলে। সুমন প্রথম দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের একজন। ২৩ এপ্রিল গুরা মিয়া নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ট্রলারের হিমঘর থেকে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল ট্রলারটির মালিক নিহত সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন মামলার এজাহারের প্রধান আসামি বাইট্টা কামাল ও তার ভাই ইমাম হোসেন, বাঁশখালীর বাসিন্দা ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি, মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেন, চকরিয়ার বদরখালী এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন মুনির, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সাইরার ডেইল এলাকার এস্তেফাজুল হকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন ও করিম সিকদার। তাদের মধ্যে করিম সিকদার ও বাইট্টা কামালের ভাই ইমাম হোসেন ছাড়া বাকি ছয় আসামি আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, আলোচিত এ ঘটনার পর থেকে তদন্তে দস্যু সর্দার সুমনের নাম নানাভাবে আসতে থাকে। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাতে থাকে। গ্রেপ্তার সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্জয় বিশ্বাস বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন জানিয়েছেন অস্ত্র-সরঞ্জাম ও অর্থ জোগান দিয়ে ৭ এপ্রিল ১২-১৩ জনের একটি গ্রুপকে অস্ত্র ও অর্থজোগান দিয়ে সাগরে ডাকাতির উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছিলেন। এতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ঘটনায় নিহত ট্রলার মালিক সামশুল আলম মাঝি। জিজ্ঞাসাবাদে সুমন বলেছেন তিনি তাদের ডাকাতি করতে পাঠিয়েছিলেন, মারার জন্য না।’ সুমনকে রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন এই তদন্ত কর্মকর্তা।
error: Content is protected !!