হোম » অন্যান্য বিভাগ » ইয়াবা ব্যবসায়ী তোফায়েল, কাটগড়ায় জামিনে প্রক্সি দিতে আসা টমটম চালক মামুন 

ইয়াবা ব্যবসায়ী তোফায়েল, কাটগড়ায় জামিনে প্রক্সি দিতে আসা টমটম চালক মামুন 

মোহাম্মদ খোরশেদ হেলালী: মাত্র ৫’শ টাকার জন্য মাদক মামলার পলাতক আসামী তোফায়েল সেজে জামিন নিতে এসে কারাগারে গেছেন এক টমটম চালক। রবিবার (১৬ এপ্রিল) কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা ফাঁস হওয়ায় দ্রæত এজলাস ত্যাগ করেন জামিন আবেদনকারী আইনজীবী।
ভূঁয়া পরিচয়ে জামিন নিতে আসা টমটম টালকের নাম মামুন (২৫)। তিনি কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল্লাহর ছেলে। টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের পানছড়ি এলাকার আলী আহমদের ছেলে মাদক মামলার পলাতক আসামী তোফায়েল সেজে জামিন নিতে আসেন মামুন।
তবে মাদক মামলায় জামিন আবেদনের বিষয়টি জানতেন না মামুন। এমনটাই দাবি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
তথ্য মতে, ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর ভোরে টেকনাফ থানাধীন সাবরাং পানছড়ি পাডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মৃত ফকিরের ছেলে মো: মোঃ ইলিয়াস (৫০) এর বাড়িতে উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ডেকুলিয়াপাড়া এলাকার মো: জয়নালের ছেলে মো: হারুন (২২) এবং জালিয়াপালং ইউনিয়নের পাইন্যাশিয়া এলাকার নুরুল হকের ছেলে খাইরুল আমিন (৩৫)কে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১৫।
এ সময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান সাবরাং ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের পানছড়িপাড়া এলাকার আলী আহমদের ছেলে শামসুল আলম (৪৫), আলমগীর (৩৭) এবং তোফায়েল (৩৫)। ধৃতদের তথ্য মতে ইলিয়াসের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ১ লাখ ১৬ হাজার পিস ইয়াবা। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক ও তোফায়েলসহ আরো তিনজনকে পলাতক দেখিয়ে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার নং ৫৮/২২। জিআর ১০৯৫/২২।
১৬ এপ্রিল পলাতক আসামী তোফায়েল এর পক্ষে জামিন আবেদন করেন আইনজীবী মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী। কিন্তু প্রকৃত আসামীকে হাজির না করে টমটম চালক মামুনকে কাটগড়া তুলেন আইনজীবী। বিজ্ঞ আদালত জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে আসামীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার কার্যক্রম শেষ হলে পুলিশ মামুনকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে কাটগড়া থেকে নিয়ে যেতে চাইলে মামুন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে পুলিশ সদস্যদের বলেন, আমাকে কেন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমি তো কোন অন্যায় করিনি। আমি তো তোফায়েল নয়, আমি মামুন। উখিল আমাকে বলেছে শুধু হাত তুলে হাজির দিতে। পরে চলে যেতে পারবে। তারা আমাকে ৫০০ টাকা দিয়ে রাজি করিয়েছে।
এদিকে আইনজীবী এবং আসামী যোগসাজসে প্রক্সি দিয়ে জামিন আবেদন করার ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর আইনজীবীদের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল। শুধু মাত্র আইনজীবীর কারণে একজন নিরাপদরাধ এক টমটম চালককে  কারাগারে যেতে হয়েছে। বিষয়টি অবশ্য নিন্দনীয় বলেও মনে করেন তারা।
টমটম চালক মামুনের মামা মো: দুলাল বলেন, মামুন আমার টমটম গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাচ্ছে। কোর্ট বিল্ডিং এলাকা থেকে ফোন করে আমাদের জানানো হলো যে মামুনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আমরা দ্রæত এসে আসল ঘটনা জানতে পারি। আইনজীবী এবং মাদক ব্যবসায়ীর পরিবার আমার ছেলের সর্বনাশ করেছে। এখন যারা মামুনকে নিয়ে গেছে তারা জামিনের সব খরচ বহন করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এড: ফরিদুল আলম  বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি আদালতের নজরে আনি। আসামী না হয়ে বিজ্ঞ আদালত জামিনের প্রক্সি দেয়ার অপরাধে তাকে বিজ্ঞ আদালত তাকে শাস্তি দিতে পারেন। এখন তো জামিন না মঞ্জুর করেছে মাত্র।
তিনি বলেন, বিজ্ঞ আইনজীবীদের এ ধরনের আচরণ কখনো গ্রহণযোগ্য নয়।
error: Content is protected !!