হোম » প্রধান সংবাদ » আইওয়াশ নয় দ্রুততার সাথে স্বাভাবিক কর্মজীবন ফিরিয়ে দেওয়ার আহবান

আইওয়াশ নয় দ্রুততার সাথে স্বাভাবিক কর্মজীবন ফিরিয়ে দেওয়ার আহবান

নাহিদুল হাসান নয়নঃ আইওয়াশ নয় দ্রুততার সাথে পর্যটন, পরিবহনসহ জনসম্পৃক্ত শিল্পের শ্রমিকদের টিকা নিশ্চিত করে করতে হবে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স-এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের আয়োজনে গতকাল ৪ আগষ্ট ২০২১, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত “করোনায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনার বিপরীতে শ্রমিকদের প্রাপ্তী”-শীর্ষক অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স-এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের আহবায়ক রাশেদুর রহমান রাশেদ এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আহসান হাবিব বুলবুল এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, উত্তারাঞ্চল হোটেল রেঁেস্তারা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক লোকমান ফারুক ও সদস্য সচিব আব্দুল মমিন মন্ডল, বাংলাদেশ ট্যুর গাইড এসোসিয়েশনের সভাপতি শহিদুল ইসলাম সাগর, ম্যাজিক প্যারাডাউস পার্ক কুমিল্লার চিফ অপারেটিং অফিসার আলিমুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড বীচ রিসোর্ট কক্সবাজারের মহাব্যবস্থাপক এম.লুৎফর রহমান, হোটেল গোল্ডেন হিল কক্সবাজারের মহাব্যবস্থাপক জয়নুল আবেদিন, অরণ্যবাস রিসোর্ট এন্ড পিকনিক স্পট গাজিপুরের ম্যানেজার অপারেশন ওমর ফারুক, রাইড শেয়ারিং ও সার্ভিস ডেলিভারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম রফিক, চট্টগ্রাম জেলা মটর ওয়ার্কসপ ম্যাকানিকস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেকেন্দার, চট্টগ্রাম জেলা অটোটেম্পু-অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক ওমর ফারুক। সভায় উপস্থিত ছিলেন উত্তারাঞ্চল হোটেল রেঁেস্তারা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন সবুজ, বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স-এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের যুগ্ম আহবায়ক সাহিদুল ইসলাম, খালেকুজ্জামান লিপন, মহিউদ্দিন রিমেল, শরিফ আহমেদ, নির্বাহী সদস্য জনার্দন দত্ত নান্টু, রোকন আহমেদ রাকিব, ইমরান হোসেন রিয়েল, আবদুল্লাহ, খুলনা সি.এস.এস এর ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলার সাইফুজ্জামান টুটুল, রাজশাহী জেলার আলফাজ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার এস.এম.কাদির প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনাকালে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের হাতে পৌঁছায়নি। পর্যটন-পরিবহনসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের রক্ষায় সরকারের প্রনোদনা কার্যত কোন ভুমিকা রাখেনি। ৭০ লক্ষ পরিবহন শ্রমিকের মধ্যে ২ লক্ষ ৩৭ হাজার অর্থাৎ মাত্র সাড়ে ৩ শতাংশ শ্রমিক দেড় বছরে ২৫০০ টাকার নগদ সহায়তা পেয়েছে। ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজে ও.এম.এসে ১০টাকা কেজি দরে চাল প্রদান, জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের খাদ্য সহায়তা তহবিলের জন্য বরাদ্দ থাকার তথ্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলেও কিছু ব্যাতিক্রম ব্যাতিত অধিকাংশ ক্ষেত্রে জমা দেওয়া তালিকার শ্রমিকদের কোন সহায়তা দেওয়া হয়নি।

সরকার গত ১৩ জুলাই হোটেল-মোটেল-থিম পার্কের শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ৪ শতাংশ সুদে ১ হাজার কোটি টাকার ঋণ তহবিল বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে। সরকারের এই ঘোষণায় একদিকে হোটেল-রেস্তেঁরা, ট্যুর অপারেটর, ট্যুর গাইডসহ পর্যটন উপখাতের প্রায় ৩৫ লক্ষ শ্রমিক-কর্মচারী উপেক্ষিত হয়েছে, অপরদিকে হোটেল-মোটেল-থীম পার্কের অধিকাংশ মালিক করোনার শুরুতেই শ্রমিক-কর্মচারীদের হয় বিনাবেতনের শর্তে ছুটিতে পাঠিয়েছে বা চাকরি থেকে ছাঁটাই করেছে ফলে সরকারের দায়িত্বশীল তদারকি ছাড়া হোটেল-মোটেল-থীম পার্কের শ্রমিক-কর্মচারীদেরও বেতন-ভাতা পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। নেতৃবৃন্দ বলেন, পর্যটন, হোটেল-রেস্তোরা-পরিবহনসহ অধিকাংশ শ্রমক্ষেত্রে শ্রম আইনের কোন বাস্তবায়ন নেই। রাষ্ট্রের শ্রম সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় এবং দপ্তর সমুহ শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ। নেতৃবৃন্দ, সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য পর্যটন শিল্পীদের প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তার জন্য ২হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানানোর পাশাপাশি দ্রুততার সাথে পর্যটন-পরিবহনসহ জনসম্পৃক্ত শিল্প শ্রমিকদের টিকা নিশ্চিত করে স্বাভাবিক কর্মজীবন ফিরিয়ে দেওয়ার আহবান জানান।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত দেড় বছরে পর্যটন শ্রমিকরা আয়ের কোন সুযোগ পায়নি। পার্সেল বিক্রির শর্তে হোটেল-রেস্তেঁরা খোলা রাখার অনুমোদনের অজুহাতে মালিকরা ৮০ শতাংশ রেস্তোঁরা শ্রমিককে ছাঁটাই করে মাত্র ২০শতাংশ শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছে। ফলে পর্যটন খাতের ৪০ থেকে ৪৫ লক্ষ শ্রমিক পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাই পর্যটন কর্মীদের রক্ষায় সরকারকে জরুরী ভিত্তিতে পর্যটন কর্মীদের টিকা প্রদান, টিকা গ্রহণকারীদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরন করে পর্যটন, হোটেল-রেস্তেঁরা চালু করার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ, শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যদা প্রতিষ্ঠায় ভবিষ্যতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন। সভা থেকে আগামী ১২ আগষ্ট ২০২১ কক্সবাজারে মানববন্ধন এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান এবং ৯ আগষ্ট ২০২১ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ট্রেড বডি এবং রাষ্ট্রিয় সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে অনলাইন মতবিনিময় কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।

error: Content is protected !!