হোম » প্রধান সংবাদ » ঠাকুরগাঁওয়ে হারিয়ে যাচ্ছে হাতে ভাজা মুড়ি  

ঠাকুরগাঁওয়ে হারিয়ে যাচ্ছে হাতে ভাজা মুড়ি  

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ  রমজান মাসে মুড়ি ছাড়া বাঙালির ইফতার কল্পনা করা যায় না। ইফতারে অন্য আইটেমের কমতি থাকলেও মুড়ি থাকা চাই। কিন্তু আধুনিক যান্ত্রিক ব্যবস্থায় মানুষের জীবনমানের অগ্রগতির পথে আজ প্রাচীন ঐতিহ্যের অনেক কিছু বিলুপ্ত প্রায়। এই হারানো ঐতিহ্য গুলোর মধ্যে অন্যতম হল হাতে ভাজা দেশি মুড়ি।
গত কয়েক বছর পূর্বেও ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার মহব্বতপুর, হরিনারায়নপুর, গিলাবাড়ি গ্রাম গুলো মুড়ির গ্রাম হিসেবে খ্যাত ছিল। ঐ গ্রামের প্রায় সব বাড়িতেই মুড়ি ভাজার ধুম লেগে থাকতো। ‘গীগজ’ ধানের মুড়ি যার খ্যাতি ছিল সর্বত্র। কিন্তু সময়ের প্রেক্ষাপটে যান্ত্রিক কারখানায় তৈরি মুড়ির বাজার দখল হয়ে গেছে। হরিনারায়ণপুরের সাবিতা সেন জানান, ‘মুড়ির চাল কিনে বাড়িতে পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করি। এরপর লবণ দিয়ে রাখি। তারপর রোদে শুকিয়ে হাতে ভাজতে হয়। ‘ সুব্রত চন্দ্র রায় জানান, ‘ঠাকুরগাঁও জেলায় বেশির ভাগ মুড়ির চাহিদা হরিনারায়ণপুর ও গিলাবাড়ি থেকে মেটানো হয়।
অনেক কষ্টে মুড়ি ভেজে হেঁটে মুড়ি বিক্রি করি। ৩ থেকে ৪ দিন মুড়ি বিক্রি করে লাভ হয় ৪০০ টাকা। প্রতি কেজি মুড়ি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। ‘  মুড়ি ভাজা ছেড়ে দেওয়া শান্তি বর্মণ বলেন, ‘এক মণ পরিমাণের চালের মুড়ি তৈরি করতে ৬-৭ ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। বর্তমানে ধানের দাম বৃদ্ধি, পোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত লাকড়ি ক্রয় ছাড়াও আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে প্রতি কেজি মুড়ি উৎপাদনে গড়ে খরচ হয় প্রায় ৬৬ টাকা। হাতে তৈরি মুড়ির রং লালচে হলেও খেতে সুস্বাদু হয়। এছাড়া ২০/২৫ দিন ঘরে রাখলেও এর স্বাদের কোন পরিবর্তন হয় না। ‘ মুড়ি শিল্পের কারিগরদের দাবি সরকারের একটু সহায়তা পেলে এই শিল্প বাচাঁনো সম্ভব।  ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম প্রাচীন ঐতিহ্যে ধরে রাখতে সকলকে হাতে ভাজা মুড়ি খাওয়ার আহ্বান জানান
error: Content is protected !!