হোম » প্রধান সংবাদ » বোরহানউদ্দিনে অবৈধভাবে খাল দখল, ব্যাহত হচ্ছে বোরো আবাদ

বোরহানউদ্দিনে অবৈধভাবে খাল দখল, ব্যাহত হচ্ছে বোরো আবাদ

বরহানউদ্দিন (ভোলা) সংবাদদাতা: যে যার মতো করে দখল করছে খাল। দখল-দূষণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার খালগুলো। প্রভাবশালীরা বাড়াচ্ছে তাদের স্থাপনার দৈর্ঘ্য- প্রস্থ । এতে করে খালের পানির স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হচ্ছে। নাব্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে। এ সমস্ত  কারণে চলতি   বোরো মৌসুমী উপজেলার ৪  ইউনিয়নের ১১  টি খালের ১২.১৯ হেক্টর ‌জমি পতিত প্রায়।২২৯২ জন কৃষক ৩-৪ ফসলি জমির আবাদ থেকে বঞ্চিত। যার কারণে কৃষক পেশা পরিবর্তন করছেন। কমছে কৃষি পণ্য উৎপাদন।
 উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ১০ হাজার ২০০ হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে। যেখানে গড় উৎপাদন হবে ৫১ হাজার মেট্রিক। উপজেলার পৌর ১ নং ওয়ার্ড, পক্ষিয়া, কুতুবা, বড়মানিকা, কাচিয়া ইউনিয়নের ১১ টি খাল দখল দূষণ আর নাব্য সঙ্কটে ভুগছে। এসব কারণে এখানে ৩০০৯ একর (১২.১৯) হেক্টর জমির বোরো আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। এতে
করে ৬০.৯২ মেট্রিক টন বোরো আবাদ কম হচ্ছে প্রতি মৌসুমে। এর সাথে সংশ্লিষ্ট ২২৯২ জন কৃষক পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন। টবগী,হাসাননগর ,গঙ্গাপুর, সাচড়া,দেউলা ইউনিয়নের পরিসংখ্যান তাহলে এর মাত্র দ্বিগুণের বেশি হবে বলে জানান কৃষকরা। কৃষি বিভাগের দাবি, বোরো আবাদে সেচ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য খাল পুনঃখনন কিংবা বারিড পাইপ  স্থাপনের জন্য বিএডিসি বরিশাল রিজনে চাহিদা পত্র প্রেরণ করলেও ফলাফল পাওয়া যায়নি।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা খায়রুল আলম মুন্সী জানান, পক্ষিয়া ইউনিয়নের বোরহানগঞ্জ বাজার থেকে নোওয়াব মিয়ার হাট হয়ে মেঘনার বেড়িবাধ পর্যন্ত এলাকায় বর্তমানে ২৭৫ হেক্টর জমি আবাদ হয়।খালগুলোর দখলমুক্ত কিংবা পূন:খনন করতে পারলে বাড়তি ১ হাজার হেক্টর ৩-৪ ফসলি জমি চাষাবাদের আওতায় আনা যাবে। উৎপাদন বাড়বে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিকটন বোরো ধান । পাশাপাশি খাল তীরবর্তী টবগী ও হাসান নগরের কৃষকরা বিশেষ সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
বাটামারা ও উদয়পুর রাস্তার মাথা এলাকার কৃষক নূরনবী ,আলাউদ্দিন ,ছলেইমান, আলাউদ্দিন-২,  হাবিবুল্লাহ, জসিম, আব্বাস জানান, খালগুলোতে পানির অভাবে বর্তমানে তাদের স্কিম বন্ধ হয়ে গেছে। অপরদিকে সালাউদ্দিন ,আব্দুল জলিল, নাসির জানান, পানির সংকটে তারা অল্প পরিমাণ জমিতে বোরো চাষ করতে পারছেন। তারা খালগুলো দখল মুক্তের দাবি জানান।
উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ ফিরোজ আলম ও একাধিক স্কিম ম্যানেজার জানান, সেচ সুবিধার উপর বোরোর উৎপাদন নির্ভরশীল।পর্যাপ্ত পানির সরবরাহ কিংবা জমি থেকে পানির উৎস কাছাকাছি না হলে  পানির অপচয় হয় ।অন্যদিকে সেচ খরচ বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পায়। এতে কৃষক চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। বিএডিসির  সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ফরিদুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ভোলা, দৌলতখান, তজুমুদ্দিন ও বোরহানউদ্দিনে আমাদের খাল খনন কিংবা পুনঃখননের কোন প্রকল্প নেই। প্রজেক্ট পাস হলে খনন করা সম্ভব হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার ওমর ফারুক বলেন, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে খালগুলো পুনঃখনন ও পুনরুদ্ধার করা দরকার। এছাড়াও বারিড পাইপ স্থাপনের মাধ্যমে সমস্যার কিছুটা সমাধান করা সম্ভব। বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান,উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পেয়েছি। দখলদারদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
error: Content is protected !!