হোম » প্রধান সংবাদ » ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ

ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ

এম আর ওয়াসিম, ভৈরব ( কিশোরঞ্জ)  প্রতিনিধিঃ  কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় খাদিজা বেগম (২২) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। খাদিজা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার রাজাপুর ইউনিয়নের ওরোইল গ্রামের শহিদুল্লাহর মেয়ে। গৃহবধূর স্বামীর নাম মোঃ কাউসার মিয়া একই থানার রানিদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। আজ শুক্রবার দুপুরে পৌর শহরের নিউটাউন এলাকায় অবস্হিত গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালে এই ঘটনাটি ঘটে।

নিহত খাদিজার শুশুর মোঃ মলফত আলী অভিযোগে জানান, আমার পূত্রবধূকে পিত্তে পাথর অপারেশন করতে এনে ডাঃ মাসুদুর রহমান  ভুল অপারেশনে তাকে মেরে ফেলেছে । ঘটনার পর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিহত রোগীকে জোর করে এম্বুলেন্সে ঢুকিয়ে বাড়ী নিয়ে যেতে বলে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ( সন্ধ্যা ৭ টা)  নিহতের লাশ হাসপাতালের সামনে এম্বোলেন্সে রাখা আছে। ঘটনার পর  হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, ম্যানেজারসহ সকল কর্মচারী পালিয়ে গেছে।

জানা গেছে, খাদিজা বেগমের পেটে ব্যথা হলে  গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে তার স্বামীসহ অভিভাবকরা গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। তখন  ডাক্তাররা তার পরীক্ষা – নিরীক্ষা করে জানায় তার পেটে পিত্তে পাথর হয়েছে, তাই অপারেশন করতে হবে। ডাক্তারের কথামত বৃহস্পতিবার বিকেলেই তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে। আজ দুপুর দেড়টায় তার অপারেশনের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষনে রোগী মারা যায় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবী করে। তার মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর অভিভাবককে সমঝোতা করার চেষ্টা করছে এমন অভিযোগ রয়েছে।

নিহত খাদিজার চাচা শুশুর আলমগীর  জানান, আমার ভাতিজা বউকে হাসপাতালের  ডাক্তার মাসুদুর রহমান ভূল অপারেশনে মেরে ফেলেছে। রোগীর মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা বাড়ী থেকে এসে দেখি লাশ জোর করে অপারেশন রুম থেকে বের করে এম্বোলেন্সে ফেলে রাখে।খাদিজার শ্বাশুড়ী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার পূত্রবধূ পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে এল কিন্ত এখন লাশ হয়ে গেল হাসপাতালের ডাক্তার ভুল অপারেশন করেছে বলেই আমার বউ মারা গেল। আমি বিচার চাই।

উপজেলা স্বাস্হ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বুলবুল আহমেদ জানান, ঘটনার খবর পেলেও আমি এখনও কোন অভিযোগ পায়নি। গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতাল পরিচালনার আবেদন করলেও তাদেরকে এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি। গত তিনদিন আগে সিভিল সার্জনের একটি টিম এই হাসাপাতালে পরিদর্শনে  গিয়েছিল। সেদিন হাসপাতালে কিছু  অনিয়ম পাওয়া গেছে এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দেখাতে পারেনি তারা । পরে হাসপাতাল কর্তপক্ষকে ৭ দিনের সময় দেয়া হয়েছে তা পূরণ করার জন্য। ঘটনাটির বিষয়ে আমি লিখিত অভিযোগ পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ক্রমে ঘটনা তদন্ত করা হবে বলে তিনি জানান।

এই ঘটনার পর ডাক্তার, নার্স, ম্যানেজার, কর্মচারীরা পালিয়ে যাওয়াই তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে হাসপাতালের উপদেষ্টা তোফাজ্জল হক জানান, অপারেশনে রোগী মারা যেতেই পারে। অপারেশনের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগী মারা গেছে যা  ডাক্তার বলেছে। এটা একটি দূর্ঘটনা। রোগীর অভিভাবকের সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা করছি বলে তিনি জানান।

error: Content is protected !!