হোম » প্রধান সংবাদ » দিনে রাতে কাজ করিয়ে শ্রমিকদের না বলেই কমলগঞ্জে সন্ধ্যায় নোটিশ ঝুলিয়ে ধলই চা বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধঘোষণা করলো র্কতৃপক্ষ : শ্রমিকদের ক্ষোভ

দিনে রাতে কাজ করিয়ে শ্রমিকদের না বলেই কমলগঞ্জে সন্ধ্যায় নোটিশ ঝুলিয়ে ধলই চা বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধঘোষণা করলো র্কতৃপক্ষ : শ্রমিকদের ক্ষোভ

এম এ কাদির চৌধুরী ফারহান: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত মাধবপুর ইউনিয়নের ধলই চা বাগানে সোমবার(২৭জুলাই) সকালে শ্রমিকদের দিয়ে ৩ গুণ চা পাতা উত্তোলণ করানো হয়। একই দিন সন্ধ্যায় রহস্যজনক ভাবে চা বাগান কর্র্তৃপক্ষকারখানার অফিসের নোটিশ বোর্ডে নোটিশ টাঙিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধলই চা বাগান বন্ধ ঘোষণা করে। ঘটনায় মঙ্গলবার (২৮ জুলাই)সকাল ১১টায় ধলই চা বাগার কারখানার সামনে সহস্রাধিক চা শ্রমিক অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

মঙ্গলবার সকালে ধলই চা বাগানে গেলে চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি গৌরাঙ্গ নায়েক, সাধারণ সম্পাদক সেতু রায়, ইউপি সদস্য শিবনারায়ণ, সাবেক ইউপি সদস্য তুলশী মাদ্রাজী, চা শ্রমিক সন্তান ইরাজ মিয়া ও নারী শ্রমিক খোদেজা বেগম বলেন, সোমবার সকাল থেকেব্যবস্থাপক ও বাগান কর্মচারীরা তাদেরকে দিয়ে ৩ গুন চা পাতা উত্তোলণ  করান। কারখানার বাবু গোলাম হোসেন তাদেরকে বলেছিলেনমঙ্গলবার বিদ্যুৎ থাকবে না তাই যেন তারা অতিরিক্ত কাজ করেন। সে হিসেবে তারা ১ দিনে ৩ গুন কাজ করেছেন।

সোমবার সন্ধ্যায় ধলই চা বাগান কোম্পানীর উপ-মহা ব্যবস্থাপক এম এম ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ টাঙিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্যচা বাগান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, চা বাগানে শ্রমিক অসন্তোষ চলছে, এ অবস্থায় চা বাগানে নিরাপত্তার অভাবেধলই চা বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাস্তবে ধলই চা বাগানে কোন প্রকার শ্রমিক অসন্তোষ নেই।

নারী চা শ্রমিক খোদেজা বেগম বলেন, ৩ দিন পর পবিত্র ঈদুল আজহা, এ সময়ে তাদের সাপ্তাহিক মজুরি পাওযার কথা। তার আগেইকোন বাস্তব কারণ ছাড়াই ধলই চা বাগান কর্তৃপক্ষ সন্ধ্যায় নোটিশ টাঙ্গিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য চা বাগান বন্ধ ঘোষণা করছে। যাহাসম্পূর্ণরুপে অমানবিক কাজ।

এঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে ধলই চা বাগানে পুলিশ মোতায়েন করলেও পুলিশি উপস্থিতিতে সহস্রাধিক চা শ্রমিক কারখানারসামনে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী বলেন, ধলই চা বাগানের দূর্ণীতিবাজ ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামেরঅপসারণের দাবিতে গত ২৯ জুন এ চা বাগানে শান্তিপূর্ণ ভাবে চা শ্রমিকরা ১ দিনের কর্মবিরতি পালন করেছিল। এরপর ২দিন বিষয়টিনিয়ে চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটি, চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও চা বাগান মালিকপক্ষের যৌথ উদ্যোগেসমঝোতা বৈঠক চলে। সে বৈঠকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত ধলই চা বাগান কোম্পানীর প্রধান কার্যালয় দিবে বলা হয়। তাৎক্ষনিক অভিযুক্তব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামকে প্রধান কার্যালয়ে নেওয়া হয়। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক হিসেবে জাকারিয়া হাবিবকে দায়িত্ব দেওয়াহয়েছিল। চা শ্রমিকরা ধলই চা বাগান কোম্পানীর প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থেকে শান্তিপূর্ণভাবে চা বাগানে কাজ করছিল।এখন সোমবার কোম্পানীর এক হটকারি সিদ্ধান্তে মিথ্যে তথ্য উল্লেখ করে নোটিশ দিয়ে ধলই চা বাগান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, যে অজুহাতে চা বাগান বন্ধ ঘোষণা করা হয় তা শ্রম আইনের পরিপন্থী। আর এখন ঈদের আগে অমানবিকভাবে চাবাগান বন্ধ করা হলো। চা শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সরকারের দৃষ্টি কামনা করেঅবিলম্বে ধলই চা বাগান খুলে দেওয়ার দাবি জানান।

ধলই চা বাগান কোম্পানীর নাম প্রকাশ না করার শর্তে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা সোমবার সন্ধ্যা থেকে ধলই চা বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্যবন্ধ ঘোষণার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কি কারণে চা বাগান বন্ধ করা হয়েছে তা নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। এর চেয়ে বেশী কিছুবলতে পারবেন না।

কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধলই চা বাগানে যাতে পরিস্থিতি ভালো থাকে সে জন্যসেখানে মঙ্গলবার সকাল থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

error: Content is protected !!