হোম » প্রধান সংবাদ » তাহিরপুরের পাটানপাড়া নৌকাঘাটে সাবেক ইজারাদার ও দেবোত্তর এস্টেট এর নামে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

তাহিরপুরের পাটানপাড়া নৌকাঘাটে সাবেক ইজারাদার ও দেবোত্তর এস্টেট এর নামে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ থেকে : সরকারের সাথে ইজারাচুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের পাটানবাড়ি গ্রামের সামনে যাদুকাটা নদীতে “ঘাগরা হতে লাউড়েরগড় পর্যন্ত যাদুকাটা নদীর উভয় পাড়ে কার্গো/দেশীয় নৌকা বালু পাথর ও অন্যান্য সকল মালামাল উঠানামা সংক্রান্ত ঘাটে সাবেক ইজারাদার শেখ শফিক মিয়া ও শ্রীপুর দেবোত্তর এস্টেইট এর নামে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদা আদায় করছে একটি চিহ্নিত চাঁদাবাজ গোষ্ঠী। জানা যায়,১৪২৬ বাংলা সন মেয়াদের জন্য ঐ ঘাটটি ইজারা নেয় তাহিরপুর থানার চিকসা গ্রামের বিএনপি কর্মী শেখ শফিক মিয়া।

কিন্তু ইজারা গ্রহনের পর সে তার ব্যবসায়ী অংশীদারদের সাথে প্রতারনা করে স্থানীয় চাঁদাবাজদেরকে নিয়ে একতরফাভাবে সরকার নির্ধারিত টোল ট্যাক্সের চাইতে ৫/৬ গুন হারে চাঁদা আদায় করে এককভাবে লাভবান হয়। প্রতারিত অংশীদাররা এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের কাছে একাধিক অভিযোগ দায়ের ও তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করলে উক্ত শফিক দায়েরকৃত চাঁদাবাজীর মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগ করে। পরে জামিনে বের হয়ে এসে সে আরো বেপরোয়াভাবে চাঁদা আদায় করতে থাকে।

গত ৩০ চৈত্র থেকে তার ইজারা মেয়াদ শেষ হলেও সাবেক ঐ ইজারাদারের চাঁদাবাজী এখনও বন্ধ হয়নি। এখন সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে ঘাটটি উদ্ধারের জন্য শফিক মিয়া মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা জানান। একইঘাটে শ্রীপুর দেবোত্তর এষ্টেইট এর নামে আরেকদল চাঁদাবাজ বালি পাথর ব্যবসায়ী শ্রমিকদের কাছ থেকে জোরপূর্বকভাবে ১০০০ টাকা থেকে ৩০০০ হাজার টাকা হারে চাঁদা আদায় করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে সাবেক ইজারাদার শেখ শফিক মিয়া বলেন, আমি বা আমার কোন লোক বর্তমানে নৌকাঘাটে চাঁদাবাজী করেনা।

এখানে শ্রীপুর দেবোত্তর এস্টট ও আজমখান ওয়াকফ এস্টেট এর নামে নিয়মিত চাঁদাবাজী চলতো। আমি সেখানে ঘাট সৃষ্টি করে গতবার সর্বোচ্চ ৪০ লক্ত ২০ হাজার টাকা ইজারামূল্য দিয়ে ঘাটটি ইজারা নিয়েও শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করতে পারিনি। আমার চৌহদ্দির মধ্যে জেলা পরিষদ ৪টি ঘাট সৃষ্টি করে বেআইনীভাবে খেয়াঘাট ইজারা দিয়ে লাভবান হয়েছে। এসব কারণে আমি জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে রীট করে আদেশ পেয়েছি। আমাকে দেয়া নৌকাঘাটে তহশীলদার রসিদ দিয়ে চাঁদা আদায় করেছে।

তাই আমি রশিদসহ উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অভিযোগ দাখিল করেছি। এখানে কোন প্রতিকার না পেলে পরে হাইকোর্টে যাবো। তবুও আমার ঘাট আমি উদ্ধার করে ছাড়বো। শফিক মিয়া বলেন,আমি সম্পূর্ণ বৈধ থাকার পরও জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন আমাকে বিএনপি বলে চিহ্নিত করে ঘাট সমজিয়ে দেয়া থেকে বিরত রয়েছে। যে কারনে এখন পর্যন্ত ঘাটে কোন খাস কালেকশন দেয়াতো দূরের কথা নতুন করে ইজারাও দিচ্ছেনা তারা। ফলে সরকার রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

উপজেলা প্রশাসনের নীরবতার কারণে শ্রীপুর দেবোত্তর এস্টেইট এর নামে আমার ঘাটে চাঁদাবাজরা নিয়মিত চাঁদা আদায় করছে। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সুনামগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ইতিপূর্বে বলেছেন ফাজিলপুর বালিপাথর মহাল ও “ঘাগরা হতে লাউড়েরগড় পর্যন্ত যাদুকাটা নদীর উভয় পাড়ে কার্গো/দেশীয় নৌকা বালু পাথর ও অন্যান্য সকল মালামাল উঠানামা সংক্রান্ত ঘাটে অর্থাৎ পাটানপাড়া ঘাট এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে।

গত ১লা বৈশাখ থেকে নতুন করে উক্ত নৌকাঘাটে কোন বৈধ ইজারাদার নেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে উক্ত নৌকাঘাটে ১৪২৭ বাংলা সনে কোন ইজারাদার নিয়োগ করা হয়নি। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ বলেন,আমি এসেই নদীতে চাঁদা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে দিয়েছি। চাঁদাবাজ যারাই হউক তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে এলাকাবাসী অবিলম্বে হয় খাস কালেকশন মাধ্যমে অথবা নতুন করে ইজারাদার নিয়োগ করার পাশাপাশি উক্ত ঘাটে চাঁদাবাজী বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

error: Content is protected !!