হোম » প্রধান সংবাদ » বরগুনায় করোনার কারনে পশুর দাম কম থাকায় হতাশ খামারি ও ব্যবসায়ীরা।

বরগুনায় করোনার কারনে পশুর দাম কম থাকায় হতাশ খামারি ও ব্যবসায়ীরা।

এইচ এম কাওসার মাদবরঃ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের মধ্যে আসন্ন ঈদুল আজহায় ভালো লাভের আশায় পশু লালন পালনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন খামারিরা। চাহিদার তুলনায় আমতলীতে পশু উৎপাদন বেশী হওয়া এবং করোনা ভাইরাসের কারনে বাজারে পশুর দাম কম থাকায় হতাশ খামারী ও ব্যবসায়ীরা। করোনা ভাইরাসের কারনে এ বছর অর্ধেক মানুষের কোরবানী দেয়া বন্ধের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারনা করেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে পশুর দাম কমে যাওয়ায় এ বছর অনেক পশু অবিক্রিত থেকে যাবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
আমতলী প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় কোরবানীর জন্য ৩ হাজার ২’শ ৭৯ টি পশুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদার বিপরীতে এ উপজেলার ৪ হাজার ২’শ ৭৬ টি পশু আছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৮’শ ২৫ টি গরু, ৮৪ টি মহিষ,১ হাজার ৩ ’শ ১৮ টি ছাগল ও ২৮ টি ভেড়া। চাহিদার তুলনায় ৯’শ৯৭ টি পশু বেশী রয়েছে। এর মধ্যে গরু ৫’শ ৮২ টি। প্রতিদিন এ পশুগুলোকে খৈল, ভুসি,কুড়া ও কাচা ঘাস খাওয়াচ্ছেন খামারীরা। শেষ সময়ে ভালো লাভের আশায় খামারিরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। খুব যত্ন সহকারে পশুর দেখভাল করছেন তারা। কিন্তু প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারনে কোরবানী কম দেওয়া ও চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশী থাকায় বাজারে পশুর  দাম অনেক কমে গেছে। ফলে লোকসান গুনতে হবে খামারী ও ব্যবসায়ীদের এমন ধারনা খামার মালিক ও ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান হাওলাদার। অনেক খামারী বাজারের অবস্থা দেখে মহা দুচিন্তায় পরেছেন। এদিকে আমতলী উপজেলার পশু হাটের কমিটি সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখলেও করোনার কারনে ক্রেতারা বাজারে আসছে না।
দক্ষিণাঞ্চলের বড় গরুর হাট আমতলী, গাজীপুর বন্দর, চুনাখালী বাজারে খোজ নিয়ে জানাগেছে,দেশীয় গরুতে বাজার সয়লাব। বাজারে ক্রেতা কম। গরু প্রতি গত বাজারের তুলনায় এ বছর ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কমে গেছে। গরু নিয়ে ব্যবসায়ীরা বাজারে আসলেও তেমন ক্রেতা পাচ্ছে না। দুই চার জন ক্রেতা আসলেও তারা গরুর তেমন দাম হাকছে না।
ক্রেতা বাকি বিল্লাহ বলেন, বাজারে গরুর দাম গত বছরের তুলনায় কম। একটি মাঝারি সাইজের দেশী গরু ৪৫ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। গত বছর এ গরুর দাম ছিল ৫৫/৬০ হাজার টাকা। আমতলী গাজীপুর বন্দরের গরু ব্যবসায়ী আলহাজ্ব  মাহবুবুর রহমান হাওলাদার বলেন, কোরবানী উপলক্ষে এখন পর্যন্ত দুইটি গরু বিক্রি করেছি। তাকে কোন লাভ হয়নি। এখন খামারের ৩ টি গরু নিয়ে দুচিন্তায় আছি। তিনি আরো বলেন, করোনার কারনে বাজারে প্রায় ক্রেতা শুন্য। গত বছরের তুলনায় এ বছর গরু প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
মল্লিক ফার্মের মালিক আব্দুর রাজ্জাক (চান মিয়া) মল্লিক বলেন, আমার একটি ষাড় তিন লক্ষ টাকায় চেয়েছি কিন্তু কোন ক্রেতা পাচ্ছি না। করোনার কারনে ভালো ক্রেতা হাটে আসছে না।  ব্যবসায়ী রবিউল ও আলম মিয়া বলেন, চাহিদার তুলনায় বাজারে অনেক গরু বেশী আসায় দাম কমে গেছে। তারা আরো বলেন তিন বাজার ঘুরেও একটি গরু বিক্রি করতে পারিনি।
আমতলী গরু হাটের ইজারাদার ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, এলাকার পশুতে কোরবানীর চাহিদা পূরন হয়ে অনেক পশু অবিক্রিত থেকে যাবে। করোনার কারনে এ বছর পশুর দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম। তিনি আরো বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর গরু প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। বাজারের গতি দেখে মনে হচ্ছে গত বছরের তুলনায় এ বছর অর্ধেক মানুষ কোরবানী দেয়া বন্ধ করে দিবেন।
আমতলী থানার ওসি শাহ আলম হাওলাদার বলেন, সামাজিক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কোরবানী উপলক্ষে পশুর বাজারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে পশু ক্রয়-বিক্রয় করে গন্তব্যে পৌছতে কোন সমস্যা না হয়। তিনি আরো বলেন, জাল টাকা সনাক্তকরন মেশিনসহ সাদা পোশাকে পুলিশ বাজারে কাজ করছে।
আমতলী প্রাণী সম্পদ কর্মকতার্ (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, আমতলীতে চাহিদার তুলনায় কোরবানীর পশুর  উৎপাদন বেশী। তিনি আরো বলেন, কৃত্রিমভাবে পশু মোটাতাজাকরন এবং রোগাক্রান্ত পশু যাতে বিক্রি না হয় সে বিষয়ে মেডিকেল টিম বাজাওে কাজ করছে
error: Content is protected !!