হোম » প্রধান সংবাদ » ভৈরবে শিক্ষক- কমিটির দ্বন্দ্ব, স্কুল বন্ধ,পাঠদান ব্যাহত

ভৈরবে শিক্ষক- কমিটির দ্বন্দ্ব, স্কুল বন্ধ,পাঠদান ব্যাহত

এম আর ওয়াসিম, ভৈরব(কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া গ্রামের লুন্দিয়া নিম্ন মাধ্যমিক স্কুলটি দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষক এবং কমিটির দ্বন্দ্বের কারনে বন্ধ হয়ে পড়েছে। আমাদের দেশে দিন দিন শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দেশে শিক্ষিতের হার ৬৩% এর উপরে। ভৈরবে সামাজিক অবকাঠামো উন্নতির পাশা পাশি উন্নয়নের আধুনিক ছোয়া লেগেছে প্রতিটি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি গ্রামে। রাস্তা-ঘাট উন্নয়নের সাথে সাথে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি সচেতন হয়ে উঠেছে ভৈরবের সমাজ প্রিয় সচেতন মানুষ।

এরই ধারাবাহিকতায় লুন্দিয়া গ্রামে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে ২৩ জন দাতা সদস্যের উদ্যোগে ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল লুন্দিয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি। সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্কুলটি ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভালই চলছিল। শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়ে ৩ শত অতিক্রম করেছিল। লুন্দিয়া, লুন্দিয়া চর পাড়া, আলগা পাড়া, নয়াহাটি, খলাপাড়া ও পাশের ইউনিয়নের বধুনগর ইসলামপুর গ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য একমাত্র নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এটি। কিন্তু ২০২০ সালে স্কুলটির প্রতি এলাকাবাসীর আনÍরিকতার ভাটা পড়ে এলাকাবাসীর। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও শিক্ষক নিয়ে শুরু হয় কোন্দল। ফলে চলতি বছরে জানুয়ারী মাস থেকে শিক্ষক ও কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে স্কুলটি বন্ধ হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়টির প্রতি দৃষ্টি এনে পুনরায় চালু করার জন্য মাননীয় সরকারের নিকট দাবী করে এলাকাবাসী।

স¦রেজমিনে গিয়ে চোখে পড়ে বিদ্যালয়ের নাজুক অবস্থা। গরু আর গোবরে ভর্তি ক্লাস রুম গুলো। নেই কোন চেয়ার-টেবিল, এমন কি শিক্ষার্থীদের বসার কোন বেঞ্চ। এমন সময় বিদ্যালয়ের একজন দাতা সদস্য আব্দুল মোতালিব মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমাদের স্কুল টি শুরু থেকে ভালো চলছিল কিন্তুু  প্রধান  শিক্ষক দ্বন্দ্বের কারনে আমাদের স্কুলটি বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী জানূয়ারী থেকে আমরা আবার শিক্ষন নিয়োগ দিয়ে স্কুলটি চালু করব। এসময় তিনি স্কুলে আসা-যাওয়ার রাস্তা গুলো উন্নত করার জন্য সরকারের নিকট আবেদন জানান।

এবিষয়ে বিদ্যালয়ের অপর একজন দাতা সদস্য মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন শিক্ষকের অদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও এবং স্কুলের কমিটির কোন্দলের কারনে স্কুলটি বন্ধ হয়ে পড়েছে। তাছাড়া চলতি বছরে পাঠদান কার্যক্রম আশানুরুপ ছিল না বিধায় স্কুলটি বন্ধ হয়ে পড়ে। আগামী শিক্ষা বছরে নতুন কমিটি করে আমরা আবার স্কুলটি নতুন করে শুরু করব। তিনি আরো বলেন বর্ষার মৌসুমে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা এসময় নৌকা দিয়ে আসা-যাওয়া করতে অনেক সমস্যা হয়। তাই রাস্তাটি মেরামত করে মাননীয় সরকারের নিকট আবেদন করছি। এ বিষয়ে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুমন মিয়ার মতামত চাইলে সে বক্তব্য দিতে অনিহা প্রকাশ করেন।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা  মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জনাব শাহরিয়ার মেনজিস“র” সাথে কথা বললে তিনি জানান, লুন্দিয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে পড়েছে এটি আমি অবগত নয়। স্কুলটির বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে।স্থানীয় জনগণসহ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনের সর্বাত্মক সহায়তায় স্কুলটির পাঠদান কার্যক্রম সক্রিয় করতে চাই। আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে দৃঢ় প্রত্যয়ে ব্যক্ত করতে চাই যে স্কুলটি যে অবস্থায় রয়েছে তা কাটিয়ে সুন্দর ভাবে পরিচালিত হবে এটাই আমার প্রত্যাশা।

এবিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা বলেন, লুন্দিয়া নিম্ন মাধ্যমিক স্কুলের বিষয়টি আসলে আমার জানা নেই বা শুনিনি। আমি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে বিষয়টি আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।

Loading

error: Content is protected !!