হোম » প্রধান সংবাদ » সয়দাবাদে প্রেমিকের বাড়ীতে প্রেমিকার অবস্থান : মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ

সয়দাবাদে প্রেমিকের বাড়ীতে প্রেমিকার অবস্থান : মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ

হুমায়ুন কবির সুমন, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের মুলিবাড়ী এলাকার আব্দুল মালেকের মেয়ে মোছা: মারুফা খাতুন (১৭) সাথে তিন বছর আগে সয়দাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিচয় হয় সয়দাবাদ ইউনিয়নের মুলিবাড়ী গ্রামের আলম সেখের ছেলে বনি সেখ (১৮) এর সাথে। পরিচয় সুত্রে একে অপরকে ভাল লাগা থেকে প্রেম তারপর তাদের ঘনিষ্ট মেলামেশার ফলে প্রেমিক বনি বিয়ের প্রস্তাব দেয় মারুফাকে।

মারুফাও বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু বনি বার বার সময় দিয়েও মারুফাকে দেয়া বিয়ের প্রস্তাবটি কৌশলে এড়িয়ে যেতে থাকে। বিয়ের প্রস্তাব এড়িয়ে যাওয়ার ফলে ১১ জুলাই প্রেমিক বনিকে মুলিবাড়ী গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে মারুফা বিয়ে করার জন্য তাগিদ দিয়ে অবস্থান নেয়। ওই সময় বনির বাবা আলম ও চাচা মো: মজনু, রাসেল, আমিনুল, আলম, বেলাল হুজুর, ফোরহাদসহ বেশ কয়েকজন মিলে মারুফাকে বেধরক মারপিঠ করে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। তার কাছে ১লক্ষ টাকা ও গহনা ছিনিয়ে নেয়। পরে মারুফা সয়দাবাদ ইউনিয়নের আলহাজ্ব মো: নবীদুল ইসলাম চেয়ারম্যানের কাছে মারপিট ও টাকা, গহনা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন।

 

সরেজমিনে প্রতিবেদকে মারুফা জানায়, পরিচয় সুত্রে প্রেমের সম্পর্কে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে বনি ধর্ষন করে আমাকে। গত তিন বছরে শতাধিক বার আমাকে যৌন নির্যাতন করেছে বনি। গত কয়েক মাস আগে বনিকে বিয়ে করার জন্য বলা হলে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে কোন কিছু না বলার জন্য হুমকি দেয়। প্রাণে মরে ফেলার হুমকিও দেয় বনি। হুমকির পরে মারুফা প্রেমিক বনিকে জানায়, বিয়ে না করলে একটি চিরকুট লিখে সুইসাইড করবো। ওই সময় প্রতিউত্তরে বনি জানায়, তুই মরেকগা আমার কিছুই করার নাই।

 

মারুফা আরো জানান, তিনি সয়দাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গত তিন বছর ধরে বিয়ের প্রভোলন দেখিয়ে বনি বহুবার আমাকে যৌন নির্যাতন করে। যখনই বিয়ের কথা বলেছি তখনই হুমকি দিয়েছে। আমাকে বিয়ে না করলে আমি যে কোন মুর্হুতে সুইসাইড করবো এব্যাপারে অভিযুক্ত বনির বাবা আলম ও চাচা মো: মজনু জানান, ওই ঘটনাটি সত্য। আমারা ছেলে পক্ষ ও মেয়ে পক্ষ বসে সমাধান করে নিবো।

 

ওদের বিয়ে দিয়ে দিবো আর কোন চিন্তা নেই। তবে বনির সাথে কথা বলতে চাইলে বাড়ীতে নেই বলে চাচা মজনুজানায়। এবিষয়ে সয়দাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নবীদুল ইসলাম জানান, মেয়েটিকে মারধর করছে বলে মেয়ের বাড়ীর লোকজন আমাকে মোবাইলে অবগত করলে আমি তাতক্ষণিক ভাবে লোক পাঠিয়ে তাকে উদ্ধার করি। মেয়ের পরিবারের লোকজন বলেছে উপযুক্ত বিচার না পেলে আইনের আশ্রয়নেবে।

এ ব্যাপারে মারুফার বাবা আব্দুল মালেক বলেন, আমার মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে আসছে কিন্তু আমার বিষয়টি জানতে পারিনি। শনিবার দুপুরে মেয়কে মারধর করছে খবর পেয়ে জানতে পারলাম আমার মেয়ের সাথে আলমের ছেলের প্রেমের সম্পর্ক। ঘর থেকে ১লক্ষ টাকা ও স্বর্ণের চেইন নিয়ে পালিয়ে গিয়ে আলমের ছেলে বনির বাড়ীতে অবস্থান নেয়। মারধরের কথা শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি খালী হাতপায়ে আমার মেয়ে পরে আছে। এবিষয়ে উপযুক্ত বিচার না পেলে মামলা করবো।

 

এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ওসি মো: হাফিজুর রহমান জানান, প্রেমিকের বাড়ীতে প্রেমিকার অবস্থানের বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

error: Content is protected !!