হোম » চাকরির খবর » প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপের পরীক্ষা শুরু

প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপের পরীক্ষা শুরু

আওয়াজ অনলাইন : শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় শুরু হয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপের পরীক্ষা। রংপুর, সিলেট, বরিশাল বিভাগের ১৮ জেলায় একযোগে এক ঘণ্টার এ এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।

জেলাগুলো হলো, রংপুর, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার। এসব জেলায় মোট কেন্দ্র ৫৩৫টি। আর পরীক্ষার কক্ষ সংখ্যা মোট ৮ হাজার ১৮৬টি।

পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ১৮ জেলার প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সার্বিক সহযোগিতায় প্রশ্নফাঁসমুক্ত পরীক্ষা সম্পন্ন হবে বলে প্রত্যাশা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের। তিনি পরীক্ষার কাজে সংশিষ্ট সবাইকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সার্বিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্নের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি শেষ। পরীক্ষা-সংক্রান্ত সব সামগ্রী এরইমধ্যে জেলায় জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

এদিকে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তিন বিভাগে পরীক্ষা কার্যক্রমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকবেন তিনজন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা। রংপুর বিভাগের অধীন সব জেলার পরীক্ষা কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবেন বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মিজানুল হক চৌধুরী। সিলেট বিভাগের তত্ত্বাবধান থাকবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোছা. নূরজাহান খাতুন এবং বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আকতার খান।

অন্যদিকে নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তিন বিভাগের প্রতিটি কেন্দ্রে অর্থাৎ ৫৩৫টি কেন্দ্রেই ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। পরীক্ষা সংক্রান্ত জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের ০২-৫৫০৭৪৯৬৯ নম্বরে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়েছে অধিদপ্তর।

পরীক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশনা

এক ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে যেতে হয়েছে
সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হবে কেন্দ্রের সব প্রবেশপথ তালাবদ্ধ করে। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে অর্থাৎ ৯টার মধ্যে প্রার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্র অবশ্যই সঙ্গে আনতে হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে সতর্কীকরণ ঘণ্টা বাজিয়ে কেন্দ্রের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে তালাবদ্ধ করা হয়। এরপর কোনো প্রার্থীকে প্রবেশ বা বের হতে দেওয়া হবে না। দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া আর কাউকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে বা বের হতেও দেওয়া হবে না।

মানতে হচ্ছে যেসব নির্দেশনা
পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো বই, উত্তরপত্র, নোট বা অন্য কোনো কাগজপত্র, ক্যালকুলেটর, মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ, পার্স, হাতঘড়ি বা ঘড়িজাতীয় বস্তু, ইলেকট্রনিক হাতঘড়ি বা যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কমিউনিকেটিভ ডিভাইস বা এ জাতীয় বস্তু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করা বা সঙ্গে রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কোনো পরীক্ষার্থী এসব দ্রব্য সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করলে তাৎক্ষণিক তাকে বহিষ্কারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরীক্ষার কক্ষে নিজ আসনে কান খোলা রেখে বসতে হবে প্রার্থীদের। সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিষিদ্ধ।

লটারির মাধ্যমে পরিদর্শক নির্ধারণ
প্রত্যেক কেন্দ্রে প্রতি ২৫জন প্রার্থীর বিপরীতে একজন করে কক্ষ পরিদর্শক নিয়োগ করবে জেলা কমিটি। সরকারি কলেজ, পিটিআই, সরকারি মাধ্যমিক স্কুল, সরকারি কারিগরি কলেজ বা মাদরাসা, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করবেন। কোন পরিদর্শক কোন কক্ষে দায়িত্ব পালন করবেন, তা নির্ধারণ করা হবে পরীক্ষা শুরুর পৌনে এক ঘণ্টা আগে। সেটাও ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে লটারির মাধ্যমে ঠিক করা হবে। কারও কোনো নিকটাত্মীয় পরীক্ষার্থী থাকলে তাকে কেন্দ্র সচিব বা পরিদর্শকের দায়িত্ব দেওয়া হবে না।

টাকার বিনিময়ে শিক্ষক হওয়ার সুযোগ নেই
টাকার বিনিময়ে বা অনৈতিক কোনো উপায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের কোনো সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। কেউ অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখালে তাকে থানায় সোপর্দ অথবা পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থাকে জানাতে অনুরোধ করেছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

প্রতি পদের বিপরীতে লড়বেন ১৩০ প্রার্থী
প্রথম ধাপে পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছেন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন চাকরিপ্রার্থী। এ ধাপে বরিশাল, রংপুর ও সিলেট বিভাগের ৭২ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী- ৩ বিভাগের সরকারি প্রাথমিকে শূন্য পদ রয়েছে ২ হাজার ৭৭২টি। সেই হিসাবে প্রতি পদের বিপরীতে লড়বে ১৩০ জন। তবে কোটা সুবিধার কারণে নারী প্রার্থীরা নিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন।

error: Content is protected !!