হোম » শিরোনাম » গঞ্জের আলীর সিরাজগঞ্জ ভাবনা

গঞ্জের আলীর সিরাজগঞ্জ ভাবনা

শেখ হান্নানঃ ফেসবুক পেইজে আমাদের সিরাজগঞ্জ গ্রুপের একজন সিরাজগঞ্জ প্রেমিক মো. রফিকুল ইসলাম অত‍‍্যন্ত আক্ষেপ আর হতাশায় সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের অব‍্যবস্থাপনা, দৈন‍্যদশা নিয়ে খুবই অনুতাপ নির্ভর একটি বর্ণনা দিয়েছেন। যা গঞ্জের আলী, আমাকে, যাদের জন্মভূমি সিরাজগঞ্জ তারাই শুধু মনোকষ্ট পায়নি, পেয়েছেন অনেক বেদনা ও নিগ্রহ।

আমাদের হ্নদয়ে হয়েছে অসহনীয় রক্তক্ষরণ। মনে হয়েছে নিজের নাককেটে অন‍্যের যাত্রা করলে তার ফল এমনই হয়। এর সাথে সিরাজগঞ্জ প্রীতি তথা দেশের রাজনৈতিক ব‍্যক্তিত্বের সম্পর্ক, একই সূত্রেগ্রথিত আছে এ কথা হলফ করে বলা যায়। এরসাথে আমাদের কাজেকর্মের সম্পর্ক, নেতৃত্বের যোগ্যতা, মাতৃভূমির প্রতি মমতা, সিরাজগঞ্জ প্রেমের অনেক আত্মীক সম্পর্কের উপাদান জড়িত। একই সাথে আরো যদি থাকে সিরাজগঞ্জের উন্নয়নের পথে রেলপথের ন‍‍্যায় সমান্তরাল গতি, সিরাজগঞ্জবাসির চাওয়া পাওয়ার পথচলা অঙ্গাঙ্গীকভাবে জড়ানো। কর্মে নির্মলতা না থাকলে সেই কর্মে একসময় প্রতিহিংসা তীক্ষ্মদন্ত মানুষ দেখতে পাবেই পাবে।

উপস্থাপক নিজে একজন যাত্রী ছিলেন। “সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস” ট্রেনের তথৈবচ অবস্থার প্রেক্ষিতে নিজেকে বড়ই অসহায়, অভিভাবকহীন মনে করেছেন। মনোজাগতিক বিশ্লেষণে মানুষের মানসিক অবস্থায় এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি সাক্ষাত হতেই পারে। কর্মে হিংসা আর বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে মানুষ কষ্ট পাবে নিশ্চিত।

প্রশ্ন করতে পারি-
কী দরকার ছিল সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের? যদি সরাসরি রেললাইনটা সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন দিয়ে ঘুরিয়ে হোসেনপুর মালশা পাড়ার মধ‍্যদিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুতে উঠতো, তাহলে ট্রেন নিয়ে আমাদের হাপিত্ত‍্যেশের জ্বালা যন্ত্রণা, দূর্ভোগ ভোগান্তি, দুঃখ অনুশোচনা কিছুই থাকতো না।

খুলনা থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস, রাজশাহী থেকে পদ্ম, সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, পঞ্চগড়, রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, লাল মনিরহাট এক্সপ্রেস, দ্রুতযান, নীলসাগর এক্সপ্রেস সিরাজগঞ্জকে বাইপাস করে কতগুলো এক্সপ্রেস ট্রেন শহীদ মনসুর আলী স্টেশন দিয়ে চলে যায়। বাইপাস না থাকলে আমরা প্রতি ঘন্টায়, প্রতিদিন বিশত্রিশটা এক্সপ্রেস ট্রেন পেতাম।

দুঃখজনক হলে সত‍্য আমাদের নেতানেতৃত্বের ভ্রান্ত নীতি, আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের ফলে এখন একটা ট্রেনের জন‍্য আমরা বুক চাপড়াচ্ছি। বুকের উপর চেপে বসেছে হিমালয়সম কষ্টের পাহাড়। রেলের ইতিহাস বলে সিরাজগঞ্জ ছিলো রেলের শহর, যার বুকের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত ছিলো চারটি সিরাজগঞ্জ নামের রেল স্টেশন। শহীদ মনসুর আলী স্টেশন বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমকে করলে কী ক্ষতি হতো? আসলে জেদের বশবর্তী হয়ে নিজের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মেরেছি আমরা।

সিরাজগঞ্জের ইতিহাস ঐতিহ্য, রেলস্টেশনের সাথে নিবিড় ভাবে সম্পর্ক জড়িত। আমাদের প্রাণের দাবি সিরাজগঞ্জ শহরকে কেন্দ্রকরে সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন করতে হবে। আরো জানাতে চাই রায়পুরকে জংশন করে সিরাজগঞ্জ বগুড়ার রেলপথ স্থাপন। অন‍্যথায় সিরাজগঞ্জকে পাইপাস করে রেলপথ হতে দেয়ার অর্থ সিরাজগঞ্জকে, সিরাজগঞ্জের মানুষকে অপমানিত করা এবং দ্বিতীয়বার ফাঁসিতে ঝোলানো ব‍্যবস্থা করা।

আমরা লক্কর ঝক্কর মার্কা সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস চাই না। আমরা চাই সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন হয়ে বঙ্গবন্ধু রেল সেতু দিয়ে সরাসরি ট্রেন চলুক, রেল লাইন হোক। প্রস্তাবে রেলের নিজস্ব জায়গা জমি আছে। কাজেই অসুবিধা কোথায়? বঙ্গবন্ধু যমুনা রেল সেতু হচ্ছে। এখনি দাবি আদায়ের সময়। দলমত নির্বিশেষে আসুন, আমাদের দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হই। নয়তো সিরাজগঞ্জ মরে যাবে, অসন্মানিত হবো আমরা, আমাদের মর্যাদা, অস্তিত্ব হয়ে যাবে বিলীন।

প্রিয়বন্ধুগণ আসুন আমরা সিরাজগঞ্জবাসি যে যেখানে আছেন সেখান থেকেই এই চেতনার পোস্টটি আমাদের প্রিয় জন্মভূমির সার্থে শেয়ার করি।

শেখ হান্নান
নাট‍্যকার লেখক
আজিমপুর, লালবাগ
ঢাকা-১২০৫.
০৩ অগাস্ট, বৃহষ্পতিবার, ২০২৩খ্রিঃ

error: Content is protected !!