হোম » অপরাধ-দুর্নীতি » সোনাইমুড়ীতে মাদরাসার কমিটি নিয়ে দ্বন্দে হামলা-ভাংচুর, আহত ৪

সোনাইমুড়ীতে মাদরাসার কমিটি নিয়ে দ্বন্দে হামলা-ভাংচুর, আহত ৪

মোহাম্মদ হানিফ, নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালী সোনাইমুড়ীর কৌশল্যরবাগ মাদ্রাসার কমিটি গঠন ও ওয়াজ মাহফিলের আয়োজনকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর ওপরে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে কৌশল্যরবাগ এলাকার কয়েকটি বসতঘর ও দোকানপাটে এ হামলা চালানো হয়। হামলায় নারী হত ৪ জন আহত হয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামাল হোসেনের ইন্ধনে ও সোনাইমুড়ী এসিল্যান্ডের গাড়ি চালক সোহাগের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে। দুই দফা হামলায় আহত হয়েছেন কৌশল্যরবাগ এলাকার বাসিন্দা মো: শাকিল, মো: রনি, নজরুল হোসেন ও ফাতেমা বেগম । শাকিল ও নজরুল হোসেন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এসময় বসতঘরে হামলা ও দোকানপাট ভাংচুর করে হামলাকারীরা।
জানা যায়, গত এক বছর থেকে কৌশল্যরবাগের তাহফিজুল নূরানী মাদ্রাসা পরিচালিত হচ্ছে এডহক কমিটির মাধ্যমে। কমিটির আহ্বায়ক ওয়ার্ড কাউন্সিলর  কামাল হোসেন। নিয়ম অনুযায়ী এডহক কমিটির মেয়াদ ছয় মাস। এই সময়ের মধ্যে রুটিন কাজ ছাড়া কোনো ধরনের নিয়োগ বা বড় ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না এডহক কমিটি। ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ নিয়মিত কমিটি গঠনের নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি। গত এক বছর থেকে কামাল হোসেনের একক সিদ্ধান্তে চলছে মাদ্রাসাটি। শনিবার সকালে মাদ্রাসার একটি মিটিংএ কামাল হোসেন মাহফিলের আয়োজনের সিদ্ধান্ত দেন। এই সিদ্ধান্ত এলাকাবাসী না মানলে ও নির্বাচনের মাধ্যমে মাদ্রাসা কমিটি গঠনের কথা তুললে তাদের ওপরে হামলা করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, গত এক বছর থেকে এডহক কমিটির মাধ্যমে মাদ্রাসা পরিচালনা করছেন কাউন্সিলর কামাল হোসেন। তার সহযোগীতা করেন এসিল্যান্ডের গাড়ি চালক সোহাগ। শনিবার মাদ্রাসায় একটি মিটিং এর আয়োজন করা হয়। মিটিংয়ে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে একটি ওয়াজ মাহফিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত দেন কামাল হোসেন। পরে এলাকাবাসী তার মতের বিরোধীতা করে মাদ্রাসায় নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্নাঙ্গ কমিটির দাবি তোলেন। এসময় কামাল ও সোহাগ কয়েকজন এলাকাবাসীকে মারধর ও গালিগালাজ করেন। এই ঘটনার কিছু সময় পরে সোহাগ মোবাইল করে ১৫-২০ জন হামলাকারীকে এলাকায় জড় করে হামলা করে।
এলাকার বাসিন্দা আব্দুল খালেক জানান, সকালে মাদ্রাসায় মিটিং হয়েছে। এসময় কাউন্সিলর কামাল হোসেন মাহফিল করার কথা বললে এলাকার একজন বাসিন্দা তার বিরোধিতা করে। পরে তাকে মারধোর করা হয়। এই ঘটনার কিছু সময় পরে সোনাইমুড়ী এসিল্যান্ডের গাড়ি চালক সোহাগ লোকজন নিয়ে এলাকায় হামলা করে বাড়িঘর ও দোকোনপাটে হামলা চালায়।
ভুক্তভোগী দোকানদার মোহাম্মদ হোসেন বলেন, কি কারনে মাদ্রাসার মধ্যে মারামারি হয়েছে জানিনা। সাকিল কিছু লোকজন সহ আমার দোকোনে ঢুকে এক কাষ্টমারকে মারধোর করে। এসময় তারা আমার দোকানের মালামাল ভাংচুর করে ও লুটপাট চালায়।
হামলার বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কথা হয় কাউন্সিলর কামাল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, সকালে মিটিং চলাকালীন সময় রনি নামের এক যুবক মাদ্রাসার সামনে গালিগালাজ করছিলো। এসময় সোহাগ বাধা দিলে ওই যুবকের সাথে হাতাহাতি হয়। পরে মিটিং শেষে ওই এলাকা থেকে আমি চলে আসে। তবে শুনেছি ওখানে কারা হামলা করেছে, দোকানপাট ভাংচুর করেছে। হামলায় একজনের মাথা ফেটে গেছে।
হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে এসিল্যান্ডের গাড়ি চালক সোহাগের সাথে কথা হলে এ ঘটনার সাথে তিনি জড়িত নয় বলে জানান।
হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে রয়েছেন। কথা হলে তারা প্রতিবেদককে জানান, এসিল্যান্ডের গাড়ি চালক সোহাগে তাদেরকে মামলা বা থানায় অভিযোগ না করার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। তবে তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
error: Content is protected !!