মোঃ কবির হোসেন, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈদ্যেরবাজার নেকবর আলী মুন্সি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে রহস্যজনক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ উঠেছে, দুর্বৃত্তরা পেছনের জানালার কাচ ভেঙ্গে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টার দিকে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অফিস কক্ষে থাকা আসবাবপত্র, শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র, সনদ ও হিসাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
স্থানীয়রা প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। খবর পেয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সদস্য ও প্রধান শিক্ষক ঘটনাস্থলে আসেন। পরিদর্শন শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাত ৯ টার দিকে মনারবাগ বাজারে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষককে এলাকাবাসী গণধোলাই দিয়েছে। স্কুলের অফিস কক্ষ আগুনে পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় গতকাল বুধবার সকালে প্রধান শিক্ষক মো. কামাল হোসেন বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় সাধারণ ডায়েরী করলেও তাকে গণধোলাই দেওয়ার ঘটনায় কোন অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরী করা হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন স্কুল ফান্ডের প্রায় ৩১ লাখ টাকার আত্মসাত করেছেন। দীর্ঘ সময় ধরে এ হিসাব দিতে পারছেন না। প্রধান শিক্ষক নিজেই আগুন দিয়ে হিসাবের প্রমাণ লোপাট করার জন্য দুর্বৃত্তদের মাধ্যমে আগুন দিয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার বৈদ্যেরবাজার নেকবর আলী মুন্সি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে হঠাৎ আগুন লাগে। স্থানীয়রা দীর্ঘ এক ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। খবর পেয়ে সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে আসার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। আগুনে অফিস কক্ষে থাকা আসবাবপত্র, শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র, সনদ ও হিসাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ খবরে রাতে ছুটে আসেন বৈদ্যেরবাজার নেকবর আলী মুন্সি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হারুন অর রশিদ, প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন, ম্যানেজিং কমিটির সদসসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা।
ওই সময়ে উপস্থিত এলাকাবাসী জানায়, প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন স্কুল ফান্ডের ৩১ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। তিনি এ টাকার হিসাব দিতে পারছেন না। হিসাবের প্রমাণ পুড়িয়ে তিনি এ টাকা নয়ছয় করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈদ্যেরবাজার নেকবর আলী মুন্সি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জানান, কামাল হোসেন স্কুলের আয় ব্যয়ের হিসাব দিতে পারছেন না। কমিটির পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে হিসাব চাওয়া হচ্ছে। এ হিসাব দেই দিচ্ছি করে যাচ্ছেন। এ হিসাবের কাগজপত্রও পুড়ে গেছে। ম্যানেজিং কমিটির সুরে কথা বলেছেন ওই স্কুলের একাধিক শিক্ষক। তবে তাদের নাম প্রকাশ করতে অসম্মতি জানিয়েছেন।
ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, আগুনের খবর পেয়ে স্কুলে গিয়ে দেখি অফিস কক্ষের কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের বোর্ড প্রদত্ত নম্বর পত্র, প্রবেশপত্র, সনদ ও হিসাবপত্র পুড়েছে। আমি দায়িত্ব গ্রহনের জন্য কোন হিসাব বাকি নেই। সবগুলোই প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে বুঝে নেওয়া হয়েছে। আগের কমিটির একটি হিসাব বাকি ছিল। ওই হিসাবের জন্য এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে বাজারের মধ্যে মারধর করেছে। পরবর্তীতে তাকে গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়া হলে তিনি বাড়ি চলে যান।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে ক্ষুদে বার্তা দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন
কক্সবাজারে লোকালয়ে খাদ্যের সন্ধানে হাতির দল
ভৈরবে নানা অনিয়মের অভিযোগে সরকারী নিবন্ধনবিহীন সূর্য মাদকাক্ত নিরাময় কেন্দ্র কে সিলগালা
শেরপুরে নারী উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ ভাতা বিতরণ