হোম » অপরাধ-দুর্নীতি » সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলার আসামীদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটের অভিযোগ

সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলার আসামীদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটের অভিযোগ

হুমায়ুন কবির সুমন, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই বন্ধু হত্যার ঘটনায় আসামীদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুট-পাটের অভিযোগ উঠেছে বাদী পরিবারের বিরুদ্ধে।

এদিকে আসামী পরিবারের অভিযোগ, দুই বন্ধুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সালাউদ্দিন খান বাচ্চু গংদের লোকজন হায়দার আলী গংদের প্রায় ৩০টি বাড়ী ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে নিয়ে গেছে।

রবিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে ইছামতি গ্রামের হাকিম সেখ, রেজাউল খান, শহিদ সেখ, আলমাহমুদ খান, আমিনা বেগম, বিলকিছ বেগম, চম্পা বেগম, নার্গিস বেগম, মুর্শিদা বেগমসহ প্রায় ৩০টি বাড়ীর ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, মৃত্যুর পর থেকে আসামীদের কেউ বাড়ি না থাকার সুযোগে আমাদের ৩০টি পরিবারের বাড়ীঘরে সীমাহীন ভাংচুর ও লুটপাট করেছে সালাউদ্দিন খান বাচ্চু গংরা। বাচ্চু গংদের লোকজন এসে আমাদের বাড়ীতে থাকা টিভি, ফ্রিজ, মনিটর, স্বর্নালঙ্কার, প্রায় ৩৫০ মন ধান, ২০০ মন চাউল, প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণ অলংকার, নগদ ৫০ লক্ষ টাকা, দরজা, জানালা গ্রীল, সিলিং ফ্যান, হাঁস-মুরপি, ড্রাম, বড় বড় পাতিল, কিটনাশক মেশিন, ৫০টি কম্বল, লেপ-তোষক, শাড়ি, জামা কাপড়, ১০০ জোড়া কবুতর ও ৫২টি গরু, ৫টি মহিষসহ সকল আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। এতে প্রায় আমাদের প্রায় ৫ কোটি টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। এই হত্যাকান্ডের পর থেকে হায়দার আলী গংরা পলাতক থাকায় সালাউদ্দিন খান বাচ্চু গংদের লোকজন লুটপাটে লিপ্ত রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থারা অভিযোগ করে আরো বলেন, যেহেতু মামলা হয়েছে সেহেতু এর বিচারও হবে। নতুন করে তারা যে লুটপাট শুরু করছে এটা চরম অপরাধের শামিল। সালাউদ্দিন খান বাচ্চু গংরা প্রত্যেক দিন আমাদের লোকজনের বাড়ীতে ভাংচুর ও লুটপাট করছে।

স্থানীয়রা জানায় দুই আল-আমিন’র মৃত্যুর পর থেকে আসামীদের কেউ বাড়ি না থাকার সুযোগে প্রায় ৩০টি বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। স্থানীয়রা আরো বলেন, হত্যা একটি জঘন্যতম অপরাধ, একইসাথে এখন যে, লুটপাট করা হচ্ছে এটাও অপরাধ। যেহেতু মামলা হয়েছে সেহেতু এর বিচারও হবে। নতুন করে বাচ্চুসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা যে লুটপাট করছে এটা চরম অপরাধের শামিল। মামলার পর থেকে আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের বাড়িঘর পুরুষ শুন্য হয়ে পড়ে। এমন কি তাদের সন্তানদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়েগেছে।

সালাউদ্দিন খান বাচ্চু বলেন, হত্যাকান্ডের সময় আমি ছিলাম না। আসামীদের বাড়ি ঘরে লুটপাট ও ভাংচুর হয়েছে, তবে, কে বা কারা করছে তা আমি জানি না।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা সদর থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি। তিনি আরো বলেন, লুট হওয়া ২৫টি গরু ও ৩টি মহিষ ইতিমধ্যে উদ্ধার করে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকী গরুগুলো উদ্ধার করার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের ইছামতী গ্রামের সালাউদ্দিন খান বাচ্চুর পরিবারের সাথে একই গ্রামের হায়দার আলী পরিবারের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে ফরহাদের ছেলে আলামিন ও তার বন্ধু আলামিন শেখের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে দূর্বৃত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই আলামিন (৩৫) এর মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত আলামিন শেখ (৩৬) সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। তার অবস্থা আশঙ্কাজন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে তার মৃত্যু হয়।

error: Content is protected !!