বগুড়া প্রতিনিধি: গাইবান্ধা নিবাসী বাদী আলতাফুর রহমান বগুড়া জেলার গাবতলী থানায় হাজির হয়ে নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি অভিযোগ করে জানান যে, তার ছেলে গাবতলী থানাধীন নশিপুর ইউনিয়নে একটি মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণীতে পড়ালেখা করে।
ভিকটিম মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানায় তার পিতা ঢাকা থেকে বগুড়া শহরে তার জন্য কয়েকটি বই পাঠিয়েছেন এবং তার ছেলেকে বগুড়া শহর হতে বইগুলো উত্তোলনের জন্য বলেন। অতঃপর গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুর অনুমান ২ টার দিকে সময় বাদীর ছেলে উক্ত মাদ্রাসা হতে বাহির হয়ে যায়।
পরবর্তীতে সময় মতো মাদ্রাসায় ফেরৎ না আসলে বাদী ও মাদ্রাসা শিক্ষকগণ খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে ১৬ সেপ্টেম্বর রাত্রি অনুমান ১১ টার দিকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মোবাইল ফোন থেকে বাদীর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে ফোন দেয় এবং বাদীর ছেলে বাদীকে জানায় কয়েকজন লোক একটি ঘরে তাকে আটক রেখেছে । এই বলে অজ্ঞাতনামা বিবাদী ফোন কেড়ে নিয়ে বাদীর নিকট নগদ ৩,লক্ষ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দাবী করে এবং টাকা না দিতে পারলে তার সন্তানকে খুন করে লাশ গুম করবে ও বিভিন্ন ধরণের ক্ষতি করবে বলে ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
এ সংক্রান্তে বাদীর সন্তান নিখোঁজ হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক বগুড়া জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিপিএম, পিপিএম মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন ও অর্থ মোঃ স্নিগ্ধ আখতার পিপিএম এর তত্ত্বাবধানে ডিবি বগুড়া’র ইনচার্জ মোঃ মোস্তাফিজ হাসান এর নেতৃত্বে টিম ডিবি বগুড়া ও গাবতলী থানার একটি যৌথ টিম সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) অনুমান ১৫ টার দিকে খবর পেয়ে মাত্র ৬ ঘন্টার মধ্যে বগুড়া সদর থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বগুড়া সদরের তিনমাথা রেলগেট এলাকা হতে ভিকটিমকে উদ্ধার ও অন্য পরিকল্পনাকারী ২ জনকে আটক করে ও অপর একজন পালিয়ে যায়।
উদ্ধারকৃত ও পুলিশের হেফাজতে থাকা ভিকটিম ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নাম মোঃ খায়রুল ইসলাম লিমন (২০), ৯ম শ্রেণির ছাত্র ও মোঃ মেহেদী হাসান(২২)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিম ও ভিকটিমের চাচাতো ভাই খায়রুল ইসলাম লিমন জানায় গত ১০ সেপ্টেম্বর ১৬ টার দিকে অপহরণের নাটক সাজিয়ে ভিকটিমের পরিবারের নিকট থেকে অর্থ নিয়ে ভিকটিম নিজেই একটি মূল্যবান মোবাইল ফোন ক্রয় করবে এবং সকলে মিলে অবশিষ্ট টাকা ভাগ করে নিবে বলে পরিকল্পনা করে ।
ঘটনার দিন ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে ভিকটিম তাদের পরিকল্পনামত কুরিয়ার সার্ভিস থেকে বই নিয়ে আসার কথা বলে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে লিমন এর সাথে বগুড়ার সাতমাথায় দেখা করে ও লিমনের মেসে আসে। তারপর সেখানে লিমনের রুমমেট আকাশ এবং পাশের রুমের মেহেদীকে সঙ্গে নিয়ে তারা সকলে পরিকল্পনামত আকাশ ও ভিকটিম বগুড়া সদর থানাধীন পিরগাছা যেয়ে ভিকটিম এর বাবাকে ফোন দিয়ে নগদ ৩, লক্ষ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দাবী করে।
পরবর্তীতে তারা মুক্তিপণ দাবী শেষে মোবাইল ফোন বন্ধ করে সকলে একত্রে মেসে এসে আত্মগোপন করে থাকে।
আরও পড়ুন
সান্তাহারে আড়াই কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
নন্দীগ্রামে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ
বিদ্যুৎ বিভাগের অনিয়মের ফাঁদে ফুলবাড়ীর বিদ্যুৎ গ্রাহক