হোম » সারাদেশ » সরিষাবাড়ীতে মা ও শিশু ভাতা কার্ডের বিনিময়ে অনৈতিক কাজে ধরা খেয়ে গণধোলাইয়ের শিকার কাউন্সিলর মোশারফ

সরিষাবাড়ীতে মা ও শিশু ভাতা কার্ডের বিনিময়ে অনৈতিক কাজে ধরা খেয়ে গণধোলাইয়ের শিকার কাউন্সিলর মোশারফ

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধিঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মা ও শিশু ভাতা কার্ডের বিনিময়ে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে ধরা খেয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন।

রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় পৌরসভার চর বাঙালি পাড়া এলাকার ইউসুফ আলীর বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তাকে সাময়িক
বহিঃস্কার করেছেন মেয়র মনির উদ্দিন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী পৌরসভার চর বাঙালি দক্ষিণ পাড়া এলাকায় দুই সন্তানের জননী ফাতেমা বেগমকে মা ও শিশু ভাতা কার্ড দেয়ার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয় ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন। ফাতেমা রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন প্রলোভন দেখায় এবং তার দুই সন্তানকে এসিড দিয়ে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে ফাতেমা নিরুপায় হয়ে বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে তার পরিবারের লোকজন কাউন্সিলর মোশারফ হোসেনকে তাদের বাড়ীতে আসতে নিষেধ করে।

তবুও সে বিভিন্ন অযুহাতে ফাতেমাদের বাড়ীতে আসে এবং তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে চায়। এক পর্যায়ে রোববার রাতে এলাকার লোকজন তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং গণধোলাই দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। সংবাদ পেয়ে সরিষাবাড়ী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। মেয়র মনিরের কথায় এলাকাবাসী কাউন্সিলর মোশারফ হোসেনকে ছেড়ে দেন।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, মোশারফ হোসেন ইতিপূর্বেও একাধিক নারী গঠিত কেলেঙ্কারীর ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষমতাশালী হওয়ায় একের পর এক এই ধরনের অপকর্ম করেও পারপেয়ে যাচ্ছেন।

কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, ফাতেমা কয়েকদিন যাবৎ বারবার তার কাছে মা ও শিশু ভাতার কার্ড চাইছিল। রাতে (রোববার) আবারও ফোন দিয়ে আমাকে বাড়ী আসতে বলে। আমি আসলেই আমাকে বেধে ফেলে। ভাতার বিষয় নিয়ে এ বাড়ীতে কথা বলতে এসেছিলেন বলে তিনি জানান।

সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মালিক বলেন, এই ধরনের জঘন্য ও অসামাজিক কার্যকলাপে যে সকল পৌর কাউন্সিলর লিপ্ত থাকে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেওয়া উচিত।

এই বিষয়ে সরিষাবাড়ী পৌর সভার মেয়র মনির উদ্দিন বলেন, জনপ্রতিনিধিদের কাছে মানুষ নিরাপদ থাকার কথা। কাউন্সিলর মোশারফকে নিয়ে আমরা লজ্জিত। জনতার দাবীর প্রতি সন্মান দেখিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের কাউন্সিলরকে আমার পরিষদে চাইনা।

এলাকাবাসীর মুহূমুহূ শ্লোগানের মুখে মেয়র আরও বলেন, আমি আমার পরিষদ থেকে তাকে সাময়িক বহিঃস্কার করলাম। তার নৈতিক স্খলনের বিষয়ে পরিষদের মিটিংকরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে তিনি চিঠি লিখবেন বলে জনগণকে আশ্বস্ত করেন। তার আগে নিয়ম অনুযায়ী তাকে কারন দর্শানো নোটিশ দেয়া হবে।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুশফিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং কাউন্সিলর মোশারফ হোসেনকে উদ্ধার করে। পরে পৌর মেয়র ঘটনাস্থলে এসে কাউন্সিলরের দায়িত্ব নিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। ভিকটিমের কোন অভিযোগ না থাকায় মামলা হয়নি। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

error: Content is protected !!