হোম » সারাদেশ » দাগনভূঞা হাসপাতালে মালিকের জেল জরিমানা : অভিযুক্ত ডাক্তার আলাউদ্দিনের নামে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা

দাগনভূঞা হাসপাতালে মালিকের জেল জরিমানা : অভিযুক্ত ডাক্তার আলাউদ্দিনের নামে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা

মোঃ আবদুল মুনাফ পিন্টু : বিভিন্ন অনিয়ম কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অপরাধে বুধবার সকালে ফেনীর দাগনভূঞা পৌর শহরে চৌমুহনী রোডস্থ দাগনভূঞা ডায়াবেটিস হাসপাতালকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ধারা মোতাবেক সিলগালা করা হয়েছে।
একই সাথে এক লাখ ৫৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সামছু উদ্দিন মানিককে ১৫ দিনের কারাদন্ড দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট নিবেদিতা চাকমা।
প্রসিকিউশনে ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার তৌহিদুল ইসলাম। আরোও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফুল ইসলাম, আইনশৃংক্ষলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন কর্মকর্তাবৃন্দ।
উল্লেখ্য যে, সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় যে হাসপাতালটি মূলত পেছন থেকে যিনি সহযোগিতা করেছেন তিনি হলেন দাগনভূঞা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার আলাউদ্দিন, তিনি হাসপাতালে নিয়মিত চেম্বার করতেন। রোগী ভর্তি রাখতেন, স্থানীয়দের মতে জানা যায় তিনি হাসপাতালের অঘোষিত শেয়ারহোল্ডার।
যেদিন হাসপাতালে  অভিযান করা হয়েছিল সে দিনও আলাউদ্দিনের আন্ডারে রোগী ভর্তি ছিল। এটি প্রসিকিউশন দাখিল দাতা  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার তৌহিদুল ইসলাম ভিবিন্ন গণমাধ্যমে ভিডিও বক্তব্য দিয়েছেন।বক্তব্যটি হল (কোড) (রোগীটি উপসহকারী মেডিকেল অফিসার আলাউদ্দিনের আন্ডারে ভর্তি ছিল। এমবিবিএস  ডাক্তার ছাড়া রোগী ভর্তির কোন বিধান নেই। এটি একটি অপরাধ)  আর এরই পরিপেক্ষিতে মালিককে জেল জরিমানা করা হয়েছে। অথচ আলাউদ্দিন সরকারি ডাক্তার দেখে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। আর একজন ডেন্টাল ডাক্তার রাজিব যাকে তিনি ভুয়া ডাক্তার বলেছেন তার বিরুদ্ধে তিনি কোন আইনগত ব্যবস্থা নেননি।
আজ যে লোকটি কারাভোগ করছেন তিনি হাসপাতালের নিয়মনীতির সম্পর্কে অনেকটাই অবগত নন। বাহ্যিকভাবে মনে হয়েছিল তিনি এতটা মনে করেননি যতটা শাস্তি সামনে অপেক্ষা করছে। তাহলে কার  নিয়ন্ত্রনে চলছে দীর্ঘ বছর এ প্রতিষ্ঠান?
প্রতক্ষ্য দর্শী শহীদ উল্ল্যাহ  বলেন,দাগনভূঞা ডায়াবেটিস হাসপাতালের মত অতীতে  দাগনভূঞার অন্য হাসপাতালে ২০-৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। অথচ আজকে ডায়াবেটিস হাসপাতালের ৩ ধরনের শাস্তি দেওয়া হল। এই শাস্তিটা আইনগতভাবে ঠিক আছে।আমরাও এই অভিযান ও জেল জরিমানাকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু এর পেছনেতো আরো অনেকে জড়িত তাদেরকেও আইনের আওয়াতায় আনা উচিত ছিল।
অথচ রোগীগুলো ভর্তি ছিল একজন উপসহকারী মেডিকেল অফিসার আলাউদ্দিনের  মাধ্যমে। অথচ তিনি সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার হওয়ায় তার ব্যাপারে কি কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। তিনি কি জানতেন না এমবিবিএস ছাড়া রোগী ভর্তি করা যায় না। তাহলে শাস্তিটা কি শুধু মালিকের?  এর পিছনের কারণ কি? নাকি উনি ডাক্তার আলাউদ্দিনকে বাচানোর জন্য মালিককে শাস্তির ব্যাপারে প্রসিকিউসন দিয়েছেন? আমার  এই প্রশ্ন রইল দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ তৌহিদুল ইসলামের কাছে।
অভিযুক্ত দাগনভূঞা উপসহকারী মেডিকেল অফিসার আলাউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার উপরস্থ কর্মকর্তা আমার কাছে লেখিত বক্তব্য চাইলে আমি বক্তব্য দিব। তিনি এ ব্যাপারে আর কথা বলতে রাজি হননি।
দাগনভূঞা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার তৌহিদুল ইসলামের কাছে আলাউদ্দিনের তাৎক্ষনিক শাস্তির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন তার ব্যাপারে বিভাগীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। ডেন্টাল ডাক্তার রাজিবের ব্যাপারে বলেন তার পরিচয় আামাদের কাছে নেই। পরিচয় পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট নিবেদিতা চাকমা বলেন প্রসিকিউশন যে ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে আমরা আইন অনুযায়ী সে হিসেবে কোর্ট পরিচালনা করেছি।
error: Content is protected !!