হোম » সারাদেশ » রাজশাহীর মোহনপুরে ছাত্রীদের উত্যাক্ত করার দায়ে প্রধান শিক্ষক গ্রেফতার

রাজশাহীর মোহনপুরে ছাত্রীদের উত্যাক্ত করার দায়ে প্রধান শিক্ষক গ্রেফতার

আবুল হাশেম,রাজশাহী ব্যুরো: রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ধুরইল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উত্যাক্ত করার দায়ে প্রধান শিক্ষক সোহরাব আলী খাঁনকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। রবিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সোহরাব আলী মৌপাড়া (সাহাজিপাড়া) গ্রামের মৃত আমজাদ আলী খাঁনের ছেলে। তিনি এই স্কুলে ২০১০ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে উপজেলার বাকশিমইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এলাকাবাসীর তথ্যনুসারে, রবিবার সকাল ১০ টায় স্কুলে আসে প্রধান শিক্ষক সোহরাব আলী। স্কুলে প্রবেশের পর ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণীর কয়েকজন ছাত্রীদের কাছে ডাকেন প্রধান শিক্ষক। এরপর ছাত্রীদের শারীরিক ও মানষিক খোঁজ খবর নেওয়া ছলে তাদের গায়ে (স্পর্শ কাতর জায়গায়) হাত দেন। এতে ছাত্রীরা শিক্ষকের এমন আচরনে প্রতিবাদ করে এবং অবিভাবকদের জানায়। বিষয়টি অবিভাবকরা স্বাভাবিকভাবে না নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করে, প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবীতে আন্দোলন শুরু করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সেই আন্দোলন আরও বেগবান হয়।

এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঐ স্কুল প্রাঙ্গনে হাজারও জনতার ভিড়।  পরবর্তীতে উপস্থিত হন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মিথিলা দাস,  উপজেলা শিক্ষা সুপারভাইজার আ: মতিন ও ধুরইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হেসেন। ঘটনার পূর্ণবিবরণ শুনে উত্যাক্ত হওয়া ছাত্রীদের জবানবন্দী নেন মিথিলা দাস। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরে জনগন ঐ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিকে বিলুপ্ত করার দাবী তোলেন।

জনগণের তোপের মুখে জনসাধারণের সেই দাবী মেনে নিয়ে বর্তমান কমিটিকে  বিলুপ্ত ঘোষনা করেন এবং প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন।  পরে ছাত্রীদের সাথে অশালীন আচরনের দায়ে প্রধান শিক্ষক সোহরাব আলীকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, প্রধান শিক্ষক ক্লাশ নেওয়া তো দুরের কথা, তিনি প্রায় দেড় বছর যাবত স্কুলে আসেন না। এই শিক্ষক এর আগেও বহুবার এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাইনি। আজকে কিছু ছাত্রীদের সাথে বাজে কাজ করেছে।  এর প্রেক্ষিতে তারা প্রতিবাদ করেছে। আমরা চাই ঐ শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হোক।

এলাকাবাসির সাথে কথা বললে তারা বলেন, এই প্রধান শিক্ষক ও স্কুল কমিটির সভাপতি ও সাবেক মেম্বার আক্কাস আলী দুইজন মিলে লুটেপুটে খেয়েছে। কেউ প্রতিবাদ করলে বিষয়টিকে দলীয় ইস্যু তৈরি প্রতিবাদকারিদের হেনস্তা করা হয়েছে। গ্রেফতারের আগে এই প্রধান শিক্ষক জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও মৌগাছী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়েছেন।

error: Content is protected !!