হোম » সারাদেশ » মরা গাছের মরণফাঁদ,ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে মানুষ ও যানবাহন

মরা গাছের মরণফাঁদ,ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে মানুষ ও যানবাহন

এস কে মিন্টু মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: রাস্তার পাশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে বিশালাকার অর্ধশত মরা গাছ। সেই মরা গাছের নিচ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে শত শত মানুষ ও  যানবাহন। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিতে যে কোনো মূর্হূতে ঘটতে পারে বড় ধরনের দূঘর্টনা। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার বরগুনা-বরিশাল মহা সড়কের পাশে ও নবনির্মিত উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষের ( অডিটোরিয়াম) চত্বরসহ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা প্রায় অর্ধশত মরা গাছ এখন মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে।
রাস্তার পাশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে থাকা মরা গাছের কারণে যে কোন মূহুর্তে ঘটতে পারে ছোটখাটো দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানির মতো ঘটনাও। তাই বড় ধরণের কোন দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ মরা গাছগুলো জরুরিভাবে অপসারণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয়রা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,অনেক গাছ ঘুণপোকায় খেয়ে ফেলেছে। মরে গিয়ে কিছু গাছ ঝুঁকিপূর্ণভাবে হেলে আছে। এসব মরা গাছগুলোতে ইউপোকা বাসা বেঁধেছে। গাছের গোড়ায় পচন ধরে কিছু কিছু অংশ ধ্বসে পড়ছে। ফলে ঝড়-বাতাস বৃষ্টি শুরু হলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে ওই এলাকায় বসবাসরত মানুষের ভিতর। উপজেলা পরিষদের সামনের রাস্তাটি দিনরাত ২৪ ঘন্টাই মানুষজন ও যানবাহন চলাচলে ব্যস্ত থাকে।
মরা গাছের কারণে আতঙ্কের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হয় ওই রাস্তায় চলাচল করা যানবাহন ও জনসাধারণের। স্থানীয়রা জানান,বেশকিছু গাছ অনেক বয়স্ক হয়ে স্বাভাবিকভাবে মরে গেছে,এবং কিছু গাছ ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর ও ২০২০ সালের ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে মরে যায়। ঝড়ের প্রভাবে বড় বড় গাছ উপড়ে পড়াসহ অধিকাংশ গাছ দুমড়ে মুচড়ে যায়। ফলে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গাছগুলো মারা যায়। মারা যাওয়া এসব গাছ অপসারণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করলেও কোনো লাভ হয়নি। অনেক বছর যাবত মরা গাছগুলো এভাবেই পড়ে আছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তায় চলাচল করছেন পথচারীরা। স্থানীয়রা আরো জানান,মাঝে মধ্যে ঝড়-বৃষ্টি হলে মরা গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে থাকে রাস্তার উপরে।
তাছাড়াও যখন-তখন ভেঙে পড়ে গাছের ডাল। গাছগুলোর এমন পরিস্থিতি হওয়া সত্বেও নজরদারী নেই কর্তৃপক্ষের। এমন অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয়রা। ওখানকার চা বিক্রেতা মো.জব্বার হোসেন জানান,এই রাস্তা দিয়ে শত শত মানুষ ও যানবাহন দিনরাত চলাচল করে। রাস্তার পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে আছে। যেকোন সময় পথচারীদের উপর গাছ বা গাছের ডাল ভেঙে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পথচারীদের সুবিধার্থে জরুরিভাবে এসব গাছগুলো কাঁটার প্রয়োজন বলে মনে করি। অটোরিকশা চালক মো.করিম জানান,জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়।
কিছুদিন আগে ঝড়ে একটি গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি। এজন্য এ রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় আতঙ্কে থাকতে হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোসাঃ তানিয়া ফেরদৌস বলেন,মরা গাছগুলো কাটার অনুমতি দিবে মন্ত্রনালয় থেকে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক আগেই কাগজপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। অনুমতি পেলেই মরা গাছগুলো কাটা হবে। মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খান মো.আবু বকর সিদ্দিকী বলেন,দাঁড়িয়ে থাকা মরা গাছগুলোর জন্য ওই স্থান দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। আমি নিজেও ওইসব স্থান দিয়ে চলাচল করি। চলাচল করিবার সময় শঙ্কায় থাকি,কখন যেন মরা গাছ অথবা গাছের ডাল মাথার উপর ভেঙে পড়ে। মরা গাছগুলো কেটে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। দ্রুত মরা গাছ গুলো অপসারণ করা হবে।
error: Content is protected !!