হোম » সারাদেশ » সরিষাবাড়ীতে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারে এমপির বিশেষ বরাদ্ধ কাবিটার সিংহভাগ অর্থ লোপাটের অভিযোগ

সরিষাবাড়ীতে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারে এমপির বিশেষ বরাদ্ধ কাবিটার সিংহভাগ অর্থ লোপাটের অভিযোগ

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধিঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারে সাবেক এমপির বিশেষ বরাদ্ধ কাবিটা কর্মসূচির ১ম কিস্তির অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। সাবেক এমপি, সাবেক পিআইও ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের যোগসাজসে এ কর্মসূচীর ২২টি প্রকল্পের ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ভাগ-বাটোয়ারার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লৃষ্ট স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, সরিষাবাড়ী উপজেলার নির্বাচনী এলাকার আওতায় গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিখা/কাবিটা কর্মসূচির ১ম কিস্তির আওতায় অর্থ ও খাদ্যশস্য (চাল ও গম) দ্বারা ২২টি প্রকল্পের জন্য ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। ফুলদহ গ্রামের আজিজুল হক, নিতাই, মাজালিয়া গ্রামের আঃ কাদের, হারুন মিয়া, আঃ মজিদ, রাজ্জাক মাষ্টার, কয়ড়া এলাকার সুমন, বগাদিয়ার গ্রামের শাজাহান মিয়া, ছাতারিয়া এলাকার রাকিবসহ অনেক গ্রামবাসী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, কোন কোন প্রকল্পের রাস্তায় ড্রেজার মেসিন দিয়ে নাম মাত্র দু চার দিন কাজ করেছে। আবার কোন কোন রাস্তায় দু’চারজন শ্রমিক দিয়ে রাস্তার মাটি ড্রেজিং কিংবা স্বল্প মাটি দিয়ে খানা খন্দক ভরাট করে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়েছে। এমনকি কেন কোন প্রকল্পে ঘাস সাফ করে কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।

তবে অধিকাংশ প্রকল্পে শ্রমিকদের কোন কাজ করতে দেখেননি বলে তারা জানান। সামছুল, মনির, কালাম, জাকির মিয়াসহ এলাকাবাসীর অভিযোগ করে বলেন, প্রকাশ্যে টিআর কাবিখার নামে অনিয়ম দুর্নীতি করা হচ্ছে। তারা সাবেক সংসদ সদস্য ডাঃ মুরাদ হাসান, এমপির স্থানীয় প্রতিনিধি পৌর কাউন্সিলর সাথাওয়াতুল আলম মুকুল ও সাবেক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) হুমায়ুন কবীর এবং সংশ্লিষ্টরা প্রকল্পের কাগজপত্রে ঠিকঠাক করে সিংহ ভাগ অর্থ নয়ছয় করে আত্মসাৎ করছেন।

প্রকল্প গুলো হচ্ছে, উপজেলার নলসন্দা হিরণের বাড়ি হইতে লালুর বাড়ি হয়ে বেলালের দোকান পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬৫০০০০ টাকা, বেলালের দোকান হইতে ইমরানের বাড়ি হয়ে কুরার মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬৫০০০০ টাকা, আওনা জামে মসজিদ হতে রফিকের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬৮০০০০ টাকা, চর সরিষাবাড়ী মতিমুন্সীর বাড়ি হতে মানিকপটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬৮০০০০ টাকা, চুনিয়াপটল মইন উদ্দিনের ঘাট হতে কালু ফকিরের সীমানা পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬৮০০০০
টাকা, মাজালিয়া সালামের দোকান হতে কাদের মাষ্টারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬৪০০০০ টাকা, ভাটারা ইউনিয়নের ডালপাড়া জুরায়েতের বাড়ি হতে সাপলেঞ্জা স্বপন মাষ্টারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬৪০০০০ টাকা, ডালপাড়া জয়নগর মাদরাসা হতে সুলতানের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬৩০০০০ টাকা, ফুলদহ বাচ্চুর বাড়ি হতে মাটিয়াজানি শেষ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার টাকা ৬৫০০০০ টাকা, ভাটারা ফুলদহ বটতলা হতে ফুলদহ জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬০০০০০ টাকা, কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর রাসেলের দোকান হতে জসীম সুতারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬০০০০০ টাকা, সাতপোয়া ইউনিয়নের ছাতারিয়া মদ্যপাড়া বাসানির দোকান হতে শুয়াকৈর সিমানা পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬০০০০০ টাকা, আদ্রা বেলাল ডাক্তারের বাড়ি হতে আব্দুল করিমের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬৬০০০০ টাকা, চর রৌহা কাঠের ব্রীজ হতে আকন্দ বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬০০০০০ টাকা, ঘোড়ামাড়া বাদশাহ মিয়ার বাড়ি পাকা রাস্তা হতে ওলিপাড়া মসজিদ হয়ে নদীরপাড় পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬০০০০০ টাকা, ভাটারা ইউনিয়নের চর হরিপুর কাইয়ুম এর বাড়ি হতে চান্দের হাওরা বাজার পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬৪০০০০ টাকা, কামরাবাদ ইউনিয়নের কয়ড়া জামে মসজিদ হইতে দেলোয়ারের বাড়ি
পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬০০০০০ টাকা, ডোয়াইল ইউনিয়নের সরাফত এর মোড় হতে ঝিনাই নদীরঘাট পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬০০০০০ টাকা, পরমানন্দপুর তেমাথা মোড় হতে শাহজাদার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬০০০০০ টাকা, পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া আবু বকর এর বাড়ির পাকা রাস্তা হতে পুর্ব দিকে মোল্লা বাড়ির কবরস্থান পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬০০০০০ টাকা এবং বয়ড়া নওশের এর বাড়ি পাকা রাস্তা হতে আজাদ মোল্লার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৬০০০০০ টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। সরকারী অর্থে গ্রামিণ
অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ না করে নাম মাত্র কাজ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার ও উপজেলার সাবেক পিআইও হুমায়ুন কবীরকে একাধিকবার কল দেওয়া হলে মুঠোফোন ব্যাস্ত এবং বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন খোলা কাগজকে বলেন, প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হয়নি। এবং সরিষাবাড়ী উপজেলার প্রকল্পের কাজের সমাপ্ত প্রতিবেদন এখনো আমার কাছে জমা দেয়নি। যদি কেউ লুটপাট করে থাকে তাহলে প্রতিবেদন জমা দিলে তা দেখে ব‍্যাবস্থা নেয়া হবে।

error: Content is protected !!