হোম » সারাদেশ » আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিএম দেলওয়ার হোসেনের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালন

আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিএম দেলওয়ার হোসেনের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালন

এইচ এম কাওসার মাদবার: বরগুনার আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব জিএম দেলওয়ার হোসেনের দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিক পালিত হয়েছে। শনিবার তার লোচা গ্রামের বাড়ীতে কোরআনখানী, কবর জিয়ারত ও দোয়া মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। তার মৃত্যুবার্ষিকীর দোয়া মোনাজাতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিক লীগ, আওয়ামীলীগসহ পঁাচ শতাধিক বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অংশগ্রহন করেন।
জানাগেছে, রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব গণ মানুষের আস্থার প্রতিক আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ সফল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব জিএম দেলওয়ার হোসেন ২০২০ সালের ৯ এপ্রিল প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুরবণ করেন। তিনি দীর্ঘ ৩২ বছর আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুতে আমতলীবাসী একজন অভিভাবক হারিয়েছে। দীর্ঘ ৫৭ বছরের রাজনৈতিক জীবনে যার কাছে মানুষ পেয়েছে অফুরান্ত ভালবাসা।
তিনি দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পদে অধিষ্ট হয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। কর্মময় জীবনে তিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুতে আমতলীবাসী হারিয়ে এক সুর্য্যসন্তানকে। আজও সেই সুযর্য সন্তানের জন্য আমতলীবাসী কাঁদে ।
১৯৬২ সালে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারন করে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন তিনি। ছাত্র রাজনীতির শুরুতেই ছাত্র লীগের সভাপতি হন এই বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ। ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হয়েই কুখ্যাত হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন এবং আন্র্Íজাতিক ক্রোক মিশন বাস্তবায়নে আন্দোলনে অংশগ্রহন করেন। ১৯৬৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ফাতেমা জিন্নাহর নির্বাচন এবং মুসলিমলীগ বিরোধী কফ্ আন্দোলনে অংশগ্রহন করেন।
মুসলিম লীগ বিরোধী কফ্ আন্দোলনে অংশগ্রহনের কারনে তৎকালিন সরকারের রাজনৈতিক মামলায় তাকে জেলে যেতে হয়। ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হয়ে গুরুত্ব পদে আসিন হন। ১৯৬৬’র ছয় দফা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেন তিনি। ৬৮ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রত্যাহারের আন্দোলন যুক্ত হন। এ আন্দোলনে অংশগ্রহনের কারনে তিনি জেল হাজতে যান। ১৯৬৯ গণঅভ্যূথান ও ১৯৭০’র নিবার্চনে দলের পক্ষে সংক্রিয়ভাবে কাজ করেন। ১৯৭১ সালে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। গঠন করেন সংগ্রাম কমিটি।
আমতলী সংগ্রাম কমিটির সভাপতি হয়ে যুবকদের সুসংগঠিত করে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেন এবং তিনি ভারতের (পিকার ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন ছিপার অধীনে) প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। ১৯৭৫ সালে তৎকালিন সরকারের রাজনৈতিক মামলায় কারাভোগ করেছেন তিনি। কারাগার থেকে বের হয়েই আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক হন। এরপর আর তাকে পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। ১৯৮৪ সালে তার দলীয় কর্মদক্ষতার কারনে আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯১ সালে আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি হন। ওই সময় থেকে মুত্যূর আগ দিন পর্যন্ত তিনি আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি হিসেবে দক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার দলীয় কর্মদক্ষতায় সাধারণ মানুষের পেয়েছেন অফুরান্ত ভালোবাসা । দীর্ঘ ৫৭ বছর রাজনৈতিক জীবনে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ ছাড়া কিছুই পায়নি। শুধু ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ তাকে আমতলী উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে চেয়ারম্যান হিসেবে দলীয় মনোনয়ন দেয়। ওই নিবার্চিত তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হন। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দীর্ঘ পঁাচ বছর সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। কোন মানুষকে হতে হয়নি হয়রানীর স্বীকার। তার এত সফলতার জন্যই আমতলী উপজেলা তৃণমূল নেতাকমর্ীরা ছিল তার আস্থার প্রতিক। গণ মানুষের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জিএম দেলওয়ার হোসেন ২০২০ সালের ৯ এপিল সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তার জন্য আজও উপজেলার লক্ষ মানুষ কাঁদে। তার শুন্যতা আজও পুরণ হয়নি।
তার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীর উপলক্ষে পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের কবর জিয়ারত, কোরআনখালী ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ দোয়া মোনাজাতে আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান নান্নু, দপ্তর সম্পদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন ফকির, মরহুমের জেষ্ঠপুত্র উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জিএম ওসমানী হাসান, ছোট ছেলে পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর জিএম মুছা, সাবেক পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি এ্যাড, একেএম বাহাদুর শাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম তালুকদার, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক জাহিদ দেওয়ান, আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন সিকদার, সিনিয়র সাংবাদিক পরিতোষ কর্মকার, আমতলী প্রেসক্লাব সাবেক সভাপতি মোঃ রেজাউল করিম বাদল, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুহু-উল আলম নবিন, সাংবাদিক মোঃ হোসাইন আলী কাজীসহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অংশ গ্রহন করেন। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ মজিবুর রহমান।
error: Content is protected !!