হোম » সারাদেশ » অর্ধশত যাত্রী নিয়ে শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি, ৬ মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ ২০

অর্ধশত যাত্রী নিয়ে শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি, ৬ মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ ২০

লতিফ রানা, স্টাফ রিপোর্টার: লঞ্চ ডুবিতে ৩৪ জন নিহতে ঘটনার এক বছর শেষ না হতেই আবারও অর্ধশত যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটলো শীতলক্ষ্যায়। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুই শিশু ও দুই নারীসহ ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রশাসন থেকে আরও ৮/১০ জনের নিখোঁজ আছে বলে জানালেও লঞ্চ থেকে বেঁচে ফিরে আসা যাত্রীসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে এখনও প্রায় ২০ জনের মতো নিখোঁজ আছে বলে জানা যায়। লঞ্চটি পানির নিচে কোথায় আছে তা শনাক্ত করতে পেরেছে উদ্ধারকারী দল।

গতকাল রোববার (২০ মার্চ) দুপুর সোয়া দুইটার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জ যাওয়ার পথে কয়লার ঘাটের কাছাকাছি নির্মানাধীন ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু থেকে প্রায় ৩০০ গজ উত্তরে লাইটার জাহাজ এমভি রূপসি-৯ এর ধাক্কায় এমএল আফছার উদ্দিন নামক এই লঞ্চ ডুবির ঘটনাটি ঘটে। নিহতদের একজনের নাম জয়নাল ভ‚ইয়া বলে জানা গেছে। তিনি ড্রেজার ব্যবসায়ী এবং মুন্সীগঞ্জ থাকেন। তিনি সাঁতরিয়ে উদ্ধার নৌকায় উঠার পর হার্ট এটাক করে মারা যান। অন্যদেরকে লঞ্চ এর ভিতর থেকে ডুবুরীদের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারকৃত মরদেহের মধ্যে রয়েছে ৭ বছরের এক শিশু (বালিকা), ৩৫ বছর বয়সী এক নারী ও আরিফা আক্তার (২৫), তার ১৮ মাসের ছেলে শিশু সাফায়েত। অন্যজনের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মুন্সীগঞ্জগামী লঞ্চটিকে একটি লাইটার জাহাজ (কার্গো জাহাজ) ঠেলে প্রায় তিনশত ফুট নিয়ে গেলে লঞ্চটি পানিতে তলিয়ে যায়। এসময় লঞ্চের যাত্রীসহ আশেপাশের যাত্রীদের চিৎকারের ঘটনাস্থলের বাতাস ভারী হয়ে উঠে। মুহুর্তেই অনেকে প্রাণ রক্ষার জন্য নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরিয়ে তীরে উঠে। আশেপাশে থেকে ট্রলার নিয়ে তাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে অনেকে। খবর পেয়ে কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনীর ডুবরী দল ও ফায়ার এন্ড সিভিল ডিফেন্সের দলসহ একাধিক উদ্ধার কর্মীর দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন যাত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে সাঁতরে তীরে উঠে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন যাত্রী জানান, দুপুর ২ টা ২০ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ লিঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রায় অর্ধশত যাত্রী নিয়ে মাঝারি আকারের লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। লঞ্চটি সদর উপজেলার সৈয়দপুর কয়লাঘাট এলাকায় পৌঁছলে পেছন থেকে এমভি রূপসী-৯ নামে একটি পণ্যবাহি লাইটার জাহাজ লঞ্চটিকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে অনেক দূর পর্যন্ত নিয়ে যায় এবং একসময় নদীর মাঝখানে যাত্রীসহ লঞ্চটি ডুবে যায়।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, মরদেহ আমাদের হেফাজতে রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের ৪ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীর প্রায় একই স্থানে একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী একটি লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৩৪ জনের মৃত্যু হয়।

error: Content is protected !!