হোম » সারাদেশ » জীবননগর উথলীতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাইয়ে ভাইয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ 

জীবননগর উথলীতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাইয়ে ভাইয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ 

মো: তারিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:  চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাইয়ে ভাইয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মহিলাসহ উভয়পক্ষের ছয়জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সোমবার (১০ই জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উথলী গ্রামের ফার্মগেটপাড়ায় এই সংর্ঘষ ঘটে। আহতরা হলেন, ফার্মগেটপাড়ার মৃত আয়ুব আলী মণ্ডলের ছেলে মোঃ রায়হান ওরফে রাহেন (৪৫) ও মোঃ খাইরুল (৫৫), রায়হানের ছেলে রিয়ন (১৭), সুলতান (১৬), স্ত্রী মুসলিমা খাতুন (৩৫), এবং খাইরুলের ছেলে মোঃ দাউদ (২৫)। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় রাহেন এবং তার দুই ছেলে রিয়ন ও সুলতান চিড়ার মিলে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলো।
এ সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাহেনের ভাই আলী আকবার (৬৫), খাইরুল (৫৫), আলী আকবারের ছেলে আবুল কালাম (২৮), ওমর ফারুক ওরফে কালু (২২), খাইরুলের ছেলে দাউদ (২৫), রাহেনের আরেক ভাই আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রাজু (১৮) সংঘবদ্ধভাবে রাহেন ও তার দুই ছেলের উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এছাড়া তারা হামলা চালিয়ে রাহেনের ঘর-বাড়িও ভাংচুর করে। এ সময় রায়হানের এক ছেলে স্থানীয় চিকিৎসক মোসারেফ হোসেনের ছেলে সেলিমের ওষুধের দোকানের মধ্যে আশ্রয় নিলে তারা লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দোকানের ভিতরে ঢুকে তাকে ব্যাপক মারধর করে এবং দোকানে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এতে প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকার মতো ওষুধ নষ্ট হয়।
এছাড়া তারা ফার্মেসির ক্যাশবাক্সে থাকা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানায় সেলিম। সংঘর্ষের ফলে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন। তবে রাহেন ও তার ছেলেরা কারও উপর হামলা করেনি বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। কারণ তারা খালি হাতে বাড়ি ফিরছিলো। তবে খাইরুলের স্ত্রী জানান, রাহেন ও তার দুই ছেলে তার স্বামী খাইরুল ও ছেলে দাউদের উপর হামলা চালিয়ে তাদের রক্তাক্ত জখম করেছে। স্থানীয়রা জানান, পারিবারিক জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের আপন ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধ চলে আসছে। মৃত আয়ুব আলী মণ্ডলের স্ত্রী ভাদিরন নেছা তার ছোট ছেলে রায়হানের নামে কয়েক শতক জমি লিখে দেওয়ায় বড় ভাই আলী আকবার ও তার অন্য ভাই খাইরুল, রাজ্জাক ও তার ছেলেরা মাঝে মধ্যেই রায়হানের সাথে বিরোধে জড়ায়।
রায়হান সম্প্রতি পাকা ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করলে সেই জমিতে থাকা আলী আকবারের টিনের তৈরি ঘর সরিয়ে নিতে না চাওয়ায় নতুন করে বিরোধ সৃষ্টি হয়। রায়হানের মা ভাদিরন নেছা বলেন, ‘আমি বয়স্ক ব্যক্তি এবং মারাত্মক অসুস্থ। আমার ৫ ছেলে ও ৩ মেয়ের মধ্যে বর্তমানে ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে জীবিত আছে। আমি ছোট ছেলে রায়হানের সংসারে থাকি এবং সেখানেই খাওয়া দাওয়া করি। এছাড়া সে আমার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করে। এছাড়া আমার মেয়েরা শ্বশুর বাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে বেড়াতে আসলে তারাও ছোটছেলের বাড়িতেই থাকে। আমি সব ছেলেদেরই বার বার বলি তোরা মারামারি করিস না। কিন্তু তারা আমার কথা না শুনে আজকেও মারামারি করেছে।’