হোম » সারাদেশ » সিলেট বিভাগজুড়ে মেটলাইফের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার হুমকি, ৭ দিনের আল্টিমেটাম

সিলেট বিভাগজুড়ে মেটলাইফের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার হুমকি, ৭ দিনের আল্টিমেটাম

?

সিলেট প্রতিনিধি: অন্যায় ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় মেটলাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির সিলেটের কবির খান এজেন্সির ম্যানেজার কবির উদ্দিন খানের রোষানলে পড়েছেন মো. রাসেল উজ জামান নামের এক ইউনিট ম্যানেজার। বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় কবির খান প্রভাব খাটিয়ে রাসেলের সঙ্গে কোম্পানির চুক্তিপত্র বাতিল করান। এসব বিষয় নিয়ে রাসেলের অনেক সহকর্মী ও মেটলাইফের গ্রাহক ক্ষুব্ধ হয়ে ৭ দিনের আল্টিমেটাম প্রদান করেছেন। এই সময়ের মধ্যে রাসেলকে চাকরিতে পুনর্বহাল ও কবির খানকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা না হলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে পুরো সিলেটে মেটলাইফের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ তুলে ধরে আল্টিমেটাম ঘোষণা করেন মো. রাসেল উজ জামান ও তার কয়েকজন সহকর্মী এবং মেটলাইফের ক্ষুব্ধ গ্রাহকবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নগরীর মেন্দিবাগের বাসিন্দা ও মেটলাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির ইউনিট ম্যানেজার (বর্তমানে চুক্তি বাতিলকৃত) মো. রাসেল উজ জামান।

তিনি জানান, ২০০৭ সালে মেটলাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে নিয়োগ পান। ২০১৪ সালে মেটলাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির সিলেটে কবির খান এজেন্সির ম্যানেজার কবির উদ্দিনের বিভিন্ন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা পরিলক্ষিত হলে তিনি এর প্রতিবাদ শুরু করেন। এর ১৫ দিনের মধ্যে কবির উদ্দিন প্রভাব খাটিয়ে ঢাকা থেকে তার নামে টার্মিনেশন লেটার (চুক্তি বাতিলপত্র) নিয়ে আসেন। ওই সময় রাসেলের কয়েকজন সহকর্মী প্রতিবাদ করলে কবির উদ্দিন বলেন, এটি ভুলবশত চলে আসছে। এটা ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু রাসেলকে চাকরিতে পুনর্বহাল না করে মেটলাইফ ব্যবস্থাপনার কিছু অসাধু কর্মকর্তার সাথে শখ্যতা গড়ে তুলে দিন দিন কবির খান অনিয়ম-দুর্নীতির মাত্রা আরও বাড়াতে থাকেন।

এরই ধারাবাহিকতায় কবির খান প্রতিবাদকারী ইউনিট ম্যানেজার অজিত কুমার ভট্টাচার্য্য এবং বিনয় ভূষণ দে-কে অবৈধভাবে চাকরিচ্যুত করেন। পরে অন্যান্য ইউনিট ম্যানেজার ও বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদের মুখে তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে বাধ্য হন। কিন্তু রাসেল বেশি প্রতিবাদ করায় তাকে আর পুনর্বহাল করা হয়নি। এছাড়াও রাসেলের নামে ঢাকা থেকে আসা দুটি নোটিশ লুকিয়ে রেখে তাকে আরও বেকায়দায় ফেলে দেন কবির খান।

রাসেল উজ জামান সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন, অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত হয়ে তিনি মেটলাইফের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শাখা ও কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার লিখিতভাবে কবির খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রদান করলেও সুবিচার পাননি বা তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়নি। এমতাবস্থায় রাসেলের মাধ্যমে মেটলাইফ কোম্পানিতে পলিসি করা শত শত গ্রাহক চরম বিপাকে পড়েছেন।

গ্রাহকরা রাসেলকে ভুল বুঝে তার বিরুদ্ধে কয়েকদিন আগে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। কিন্তু তিনি নিরুপায়। তাকে চাকিরচ্যুত করায় গ্রাহকদের তিনি সেবা দিতে পারছেন না। কোম্পানিও গ্রাহকদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। এমতাবস্থায় গ্রাহকদের পলিসির টাকা আত্মসাতের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও রাসেলের চাকরিকালের কমিশন এবং চাকরি শেষের পেনশনসহ কয়েক লক্ষ টাকা খোয়া যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এদিকে, রাসেলের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন তার কয়েকজন সহকর্মী এবং মেটলাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির ক্ষুব্ধ গ্রাহক। তারাও কবির খানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন। এছাড়া আগামী ৭ দিনের মধ্যে রাসেলকে চাকরিতে পুনর্বহাল ও কবির খানকে শাস্তির আওতায় না নিয়ে আসলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে সিলেট বিভাগজুড়ে মেটলাইফের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র বীমা প্রতিনিধি আলী হোসেন, নুরুল ইসলাম, জুবের আহমদ, বীমা প্রতিনিধি ইমদাদুল হক রাশেদ, নজমুল ইসলাম, আব্দুস সামাদ আজাদ, রুবেল আহমদ, মাহমুদ মিয়া, জাকির আহমদ ও শাহাদাত হোসাইন প্রমুখ।

error: Content is protected !!